ব্যাঙ্ক কর্মীদের সংগঠন এআইবিইএ-র সভাপতি রাজেন নাগর অবশ্য বলেন, ‘‘বাংলা-সহ পূর্বাঞ্চলে তো বটেই, কেরল এবং দেশের অন্য অনেক জায়গাতেও ধর্মঘটে ভাল সাড়া মিলেছে।”
বন্ধের প্রভাব ব্যাঙ্কেও। ছবি: পিটিআই।
দেশ জুড়ে ট্রেড ইউনিয়নগুলির ডাকা দু’দিনের সার্বিক ধর্মঘটের সঙ্গে জুড়ে গিয়েছে ব্যাঙ্ক কর্মীদের ডাকা ধর্মঘটও। তাঁদের পাঁচটি ধর্মঘটী ইউনিয়নের দাবি, প্রথম দিন সাড়া মিলেছে ভালই। মঙ্গলবার, ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিনেও একই রকম সাফল্য মিলবে বলে আশা। তারা জানিয়েছে, এ দিন রাজ্যে বেশির ভাগ ব্যাঙ্ক বন্ধ ছিল। বহু এটিএমেরই ঝাঁপ খোলেনি।
ব্যাঙ্কিং শিল্পেরও পর্যবেক্ষণ, সোমবার বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গে ব্যাঙ্কিং পরিষেবা ব্যাপক ভাবে ব্যাহত হয়েছে। সিংহভাগ এটিএমের দরজা বন্ধ ছিল। ফলে সমস্যায় পড়েন বহু গ্রাহক। জরুরি প্রয়োজনে এটিএমের খোঁজে বিস্তর ছুটোছুটি করতে হয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন অনেকে। কেরলেও ধর্মঘটের প্রভাব ছিল চোখে পড়ার মতো। তবে সূত্রের খবর, এর বাইরে দেশের অন্যান্য জায়গায় পরিষেবা খুব বেশি বিঘ্নিত হয়নি।
মোদী সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ জনস্বার্থ বিরোধী, এই অভিযোগ তুলে প্রতিবাদ জানাতে সোম এবং মঙ্গলবার ধর্মঘট ডেকেছে কেন্দ্রীয় শ্রম সংগঠনগুলি। তাতে শামিল হতে সরকারের রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক বেসরকারিকরণের নীতি, গ্রাহক পরিষেবার খরচ বৃদ্ধি, কম খরচে ব্যাঙ্কের কাজ বাইরে থেকে করিয়ে নেওয়ার মতো বিষয়গুলিকে সামনে রেখে এই দু’দিনই আলাদা ভাবে ব্যাঙ্ক ধর্মঘটের ডাক দেয় এআইবিইএ, বেফি-সহ পাঁচটি ইউনিয়ন।
সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশের দাবি, বাকি সংগঠনগুলি বাইরে থেকে নৈতিক সমর্থন দেওয়ার কথা বলেছে। তাই ধর্মঘট এ দিন অন্তত তেমন জোরালো প্রভাব ফেলতে পারেনি। বিশেষত স্টেট ব্যাঙ্কে সোমবার প্রায় স্বাভাবিক কাজ হয়েছে, দাবি তাদের স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক গৌতম নিয়োগী এবং অল ইন্ডিয়া স্টেট ব্যাঙ্ক অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সভাপতি শুভজ্যোতি চট্টোপাধ্যায়ের। তাঁরা বলেন, ব্যাঙ্কের বেঙ্গল সার্কেলে দেড় হাজার শাখার মধ্যে কিছু বন্ধ ছিল।
ব্যাঙ্ক কর্মীদের সংগঠন এআইবিইএ-র সভাপতি রাজেন নাগর অবশ্য বলেন, ‘‘বাংলা-সহ পূর্বাঞ্চলে তো বটেই, কেরল এবং দেশের অন্য অনেক জায়গাতেও ধর্মঘটে ভাল সাড়া মিলেছে। এসবিআইয়ের কিছু শাখায় কাজ হলেও, রাজ্যে বাকি রাষ্ট্রায়ত্ত, সমবায় ও গ্রামীণ ব্যাঙ্কগুলির বেশির ভাগই বন্ধ ছিল। কাজ হয়নি সিংহভাগ বেসরকারি এবং বিদেশি ব্যাঙ্কে। দরজা খোলেনি বেশির ভাগ এটিএমেরও।’’
রাজেনবাবু বলেন, ব্যাঙ্ক বেসরকারিকরণের পাশাপাশি গ্রাহক স্বার্থ ব্যাহত হওয়ার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানোও ধর্মঘটের উদ্দেশ্য। যে কারণে তাঁদের দাবির মধ্যে গ্রাহক পরিষেবার চার্জ কমানো ও আমানতে সুদের হার বাড়ানোর দাবিও রয়েছে। তাঁর বক্তব্য, ‘‘গ্রাহকই ব্যাঙ্কের মেরুদণ্ড। অথচ বর্তমানে তাঁরা বঞ্চিত হচ্ছেন। উন্নয়ন তো বটেই, এমনকি গ্রাহক টানার উপরে অনেকাংশে নির্ভর করে ব্যাঙ্কের অস্তিত্ব। তাই তাঁদের স্বার্থ নিশ্চিত করার দাবি করছি।’’