স্টেট ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান রজনীশ কুমার।
শিল্প মহল দাবি জানিয়েছিল আগেই। এ বার অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে সরকারি ত্রাণ প্রকল্পের প্রয়োজনীয়তার কথা বলল ব্যাঙ্কও।
পাঁচ বছরে দেশের অর্থনীতিকে ৫ লক্ষ কোটি ডলারে নিয়ে যেতে চান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এর জন্য ২০২৫ সালের মধ্যে পরিকাঠামো ক্ষেত্রে ১০০ লক্ষ কোটি টাকা খরচ করা হবে বলে স্বাধীনতা দিবসের বক্তৃতায় ঘোষণা করেছেন তিনি। কেন্দ্র মনে করে, এই লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছতে গেলে ব্যাঙ্কের এগিয়ে আসা জরুরি। কিন্তু দেশের বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাঙ্ক স্টেট ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান রজনীশ কুমার রবিবার জানালেন, ব্যাঙ্কের হাতে ঋণ দেওয়ার জন্য নগদ যথেষ্টই রয়েছে। সুদের হারও কমেছে। ব্যাঙ্ক ঋণও দিতে চায়। কিন্তু বাজারে চাহিদাই রয়েছে ঝিমিয়ে। ফলে ঋণ নেওয়ার লোকের অভাব। এই অবস্থায় চাহিদাকে চাঙ্গা করতে সরকারি ত্রাণ প্রকল্প জরুরি বলে মনে করেন তিনি।
দেশের অর্থনীতিকে ৫ লক্ষ কোটি ডলারে নিয়ে যেতে ভূমিকা কী হতে পারে, সে ব্যাপারে অভ্যন্তরীণ আলোচনা শুরু করেছে বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাঙ্ক। শনি ও রবিবার এই নিয়ে শাখাগুলির সঙ্গে বৈঠক করেছে তারা। সেই বৈঠকে যোগ দিতেই এ দিন কলকাতায় আসেন রজনীশ। পরবর্তী ধাপে ২৩ ও ২৪ অগস্ট রাজ্যস্তরে বৈঠক করবে ব্যাঙ্কগুলি। সেপ্টেম্বরে প্রধানমন্ত্রী ও রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে জাতীয় স্তরে কর্মশালা হওয়ার কথা।
অনেকে বলছেন, অর্থনীতিকে গতিশীল করতে ব্যাঙ্কের ভূমিকা তো রয়েছেই। কিন্তু সেটা একটা দিক। বাজারে চাহিদারই যদি অভাব থাকে, তা হলে তো লগ্নির ব্যাপারে শিল্প হাত গুটিয়েই থাকবে। ঋণের চাহিদাও বাড়বে না। সেই ইঙ্গিতই এ দিন দিয়েছেন স্টেট ব্যাঙ্ক চেয়ারম্যান। বস্তুত সম্প্রতি কেন্দ্রের কাছে ১ লক্ষ কোটি টাকার ত্রাণ প্রকল্প দাবি করেছে শিল্প।
এ দিন রজনীশ জানান, চলতি অর্থবর্ষে ঋণের চাহিদা বৃদ্ধি খুব উঁচুতে ওঠার আশা কম। তিনি জানান, গত অর্থবর্ষে স্টেট ব্যাঙ্কের ঋণ বৃদ্ধির হার ছিল ১৪%। এ বছর তা ১২ থেকে ১৪ শতাংশের মধ্যে থাকতে পারে। তিনি বলেন, ‘‘চাহিদা বৃদ্ধির জন্য আমরা তাকিয়ে আছি পরিকাঠামো ক্ষেত্রে সরকারি খরচের দিকে। উৎসবের মরসুম এবং বর্ষার ইতিবাচক প্রভাবও অর্থনীতির উপরে পড়তে পারে।’’
অনুৎপাদক সম্পদ, বিশেষ করে কৃষি ক্ষেত্রে অনাদায়ি ঋণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্টেট ব্যাঙ্ক চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘‘গত অর্থবর্ষে নতুন ১৬,০০০ কোটি টাকার অনুৎপাদক সম্পদ সৃষ্টি হয়েছিল। এর মধ্যে কৃষি এবং খুচরো ঋণ ১১,০০০ কোটি। অবশিষ্ট শিল্পের। এ বার নতুন ভাবে অনুৎপাদক সম্পদ সৃষ্টির পরিমাণ কমতে পারে।’’