ছবি সংগৃহীত।
বাংলাদেশের সঙ্গে খাদ্যাভ্যাস, শিল্প, সংস্কৃতি-সহ প্রায় সব কিছুরই নিবিড় মিল এ রাজ্যের। তাই রাজ্য সরকারের উদ্যোগে ২০ সেপ্টেম্বর থেকে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত হতে চলা প্রথম বেঙ্গল শপিং ফেস্টিভ্যালের অন্যতম আকর্ষণ ছিল সেখানকার একাধিক পণ্য। কিন্তু পড়শি দেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতার জেরে কেনাকাটার এই উৎসবে তারা আদৌ অংশ নিতে পারবে কি না, তা নিয়ে তৈরি হয়েছে সংশয়। সূত্রের খবর, বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি সংস্থার আসার কথা ছিল। কিন্তু এখন পুরো বিষয়টি বিশ বাঁও জলে।
এই শপিং ফেস্টিভ্যালের মূল উদ্যোক্তা পশ্চিমবঙ্গ শিল্পোন্নয়ন নিগম। সহযোগী রাজ্যে ব্যবসায়ীদের সংগঠন কনফেডারেশন অব ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশন্স। সংগঠন সূত্রের খবর, বাংলাদেশ থেকে ন্যূনতম ৫-৬টি বড় সংস্থার আসার কথা ছিল। যে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা হয়েছিল, তাঁদের সঙ্গে লিখিত চুক্তি না হলেও, মৌখিক ভাবে কথা হয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে সংস্থাগুলির সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না।
অ্যাসোসিয়েশনের এক কর্তা বলেন, ‘‘পরিকল্পনা ছিল পুজোর আগে ২০-২৪ সেপ্টেম্বর বিশ্ববাংলা মেলা প্রাঙ্গনে আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীতে খাঁটি পদ্মার ইলিশ, বাংলাদেশের জামদানি-সহ বিবিধ পোশাক ও অন্য নানা পণ্য নিয়ে আসা। কিন্তু তা এখন অনিশ্চিত।’’ তিনি জানান, অগস্টের শেষ পর্যন্ত যোগাযোগের চেষ্টা করা হবে। তখনও কথা না হলে তার পরে বিকল্প ব্যবস্থা করা হবে। প্রয়োজনে কেন্দ্রের সঙ্গে কথা বলে ওই সব সংস্থাকে আনার ব্যবস্থা করতেও তাঁরা প্রস্তুত বলে দাবি ওই কর্তার।
নিগম সূত্রের খবর, ভারত-বাংলাদেশ বাণিজ্যিক সম্পর্ক কোন দিকে এগোয় তার উপরে কড়া নজর রাখা হচ্ছে। সেটা দেখেই এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে বাংলাদেশ ছাড়া ভিয়েতনাম, তাইল্যান্ড, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, নেপাল, ভুটানের মতো দেশ থেকে বহু ব্যবসায়ী আসবেন এই উৎসবে যোগ দিতে। ইতিমধ্যেই উপস্থিতি নিশ্চিত করেছেন তাঁরা।
প্রসঙ্গত, ১৬ দিন ধরে চলা এই শপিং ফেস্টিভ্যালে মূলত দু’টি অংশ রয়েছে। প্রথমটি ২০-২৪ সেপ্টেম্বর বিশ্ববাংলা মেলা প্রাঙ্গনে আন্তর্জাতিক মানের প্রদশর্নী। যেখানে রাজ্য তথা দেশের প্রথম সারির সংস্থাগুলি উপস্থিত থাকবে। থাকবে রাজ্যের বিবিধ দফতরের স্টলও। সব মিলিয়ে যার সংখ্যা ৫০০-র বেশি।
দ্বিতীয় অংশটি চলবে ২০ সেপ্টেম্বর থেকে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত। কলকাতা ও শহরতলির সব শপিং মলের পাশাপাশি, নিউ মার্কেট, পার্ক স্ট্রিট, হাতিবাগান, গড়িয়াহাট, লেক মার্কেট, ডানলপ মার্কেট, হাওড়া মার্কেট, বড়বাজারের মতো সব বড় বাজারের বিপণিগুলি অংশ নেবে। এ ছাড়াও যোগ দেবে শহরের সমস্ত বড় রেস্তোরাঁ ও পাঁচতারা হোটেল। সারা শহরকে সাজানো হবে দুর্গাপুজোর থিমে।
উৎসবের সঙ্গে যুক্ত এক কর্তা জানান, ‘‘আমাদের লক্ষ্য পুজোর আগে ১৫ দিনের বেশি সময় ধরে পণ্যের বিক্রি বাড়ানো। তাতে যেমন ব্যবসা অঙ্ক বাড়বে, তেমনই উপকৃত হবে রাজ্যও।’’ তাঁর দাবি, যে মাপের পরিকল্পনা হচ্ছে, সেটা আন্তর্জাতিক ফেস্টিভ্যালকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে পারে। আপাতত সেখানে পদ্মার ইলিশ বা জামদানির দেখা মেলে কি না, নজর সে দিকেই।