প্রতীকী চিত্র।
আজ সোমবার থেকে টানা দু’দিন দেশ জুড়ে ব্যাঙ্ক ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে। মূলত কেন্দ্রের রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক বেসরকারিকরণের নীতির বিরুদ্ধেই তারা এ ভাবে প্রতিবাদ জানাতে নামছে বলে জানিয়েছে ব্যাঙ্কের কর্মী এবং অফিসারদের পাঁচটি ইউনিয়ন। তাদের হুঁশিয়ারি, আজ-কাল প্রায় সমস্ত ব্যাঙ্কই বন্ধ থাকবে। ব্যাঙ্কের স্বাভাবিক কাজকর্মের পাশাপাশি ভাল রকম ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে এটিএম পরিষেবাও। তবে সারা দেশে ব্যাঙ্ক ধর্মঘটের প্রভাব কতটা পড়বে, সে ব্যাপারে সংশয়ী এই শিল্পের একাংশ। তারা বলছে, ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে শুধু কর্মীদের সংগঠন এআইবিইএ, বেফি, অল ইন্ডিয়া কোঅপারেটিভ ব্যাঙ্ক এমপ্লয়িজ় ফেডারেশন, অল ইন্ডিয়া গ্রামীণ ব্যাঙ্ক এমপ্লয়িজ় অ্যাসোসিয়েশন এবং অফিসারদের সংগঠন এআইবিওএ। ফলে সর্বত্র ব্যাঙ্কের কাজ হয়তো পুরোপুরি ব্যাহত হবে না। যদিও ধর্মঘটীদের দাবি, বাকি ইউনিয়নগুলি ধর্মঘটে শামিল না হলেও নৈতিক সমর্থন জানিয়েছে। কাজেই পরিষেবা ধাক্কা খাবেই।
মোদী সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ জনস্বার্থ বিরোধী, এই অভিযোগ তুলে আজ এবং কাল দেশ জুড়ে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে বিভিন্ন কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নও। তার সঙ্গেই হচ্ছে এই ব্যাঙ্ক ধর্মঘট। ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়াতে সাধারণ কর্মীদের ইউনিয়ন এআইবিইএ বুধবারও ধর্মঘট ডেকেছে। অভিযোগ, অন্য ব্যাঙ্কের তুলনায় অনেক বেশি কাজ বাইরের লোককে দিয়ে করানো হচ্ছে সেখানে। ফলে ওই ব্যাঙ্কে টানা তিন দিন ধর্মঘট হবে।
স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক গৌতম নিয়োগী অবশ্য বলেন, “কিছু ইউনিয়ন নিজেদের সিদ্ধান্ত মতো ধর্মঘট ডেকেছে। তাতে শামিল না হলেও আমরা নৈতিক সমর্থন জানিয়েছি। আমাদের ইউনিয়নের সিদ্ধান্ত হল, সদস্যেরা ধর্মঘটের দিন দফতরে যাবেন। তবে ধর্মঘটীরা পিকেটিং করলে আমরা তা ভেঙে অফিসে ঢুকব না। না থাকলে দফতরে যাব।’’ একই কথা জানিয়েছেন, অল ইন্ডিয়া স্টেট ব্যাঙ্ক অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সভাপতি শুভজ্যোতি চট্টোপাধ্যায়ও।
এআইবিইএর সভাপতি রাজেন নাগর বলেন, “রাজ্যে এটিএমের কর্মীরা আমাদের ইউনিয়নের সদস্য। তাঁরা কাজে যাবেন না। ফলে এটিএমের দরজাই বহু জায়গায় খোলা যাবে না।’’ তবে বিভিন্ন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, তাঁরা এটিএম চালু রাখার সব ব্যবস্থাই করবেন। স্টেট ব্যাঙ্কের বেঙ্গল সার্কেলের সিজিএম রুমা দে বলেন, “এটিএম চালু রাখার ব্যবস্থা করেছি। শনি, রবি ছুটি ছিল। তাই শুক্রবারই সমস্ত এটিএমে যথেষ্ট টাকা ভরেছি। ধর্মঘটের মধ্যেও টাকা ভরার ব্যবস্থা আছে।’’
আইবকের রাজ্য সম্পাদক সঞ্জয় দাসের আশঙ্কা, ধর্মঘটের পরে মাত্র দু’দিনে অর্থবর্ষ শেষের হিসাব সারতে চাপ পড়বে ব্যাঙ্ক অফিসারদের উপর। বেফির সাধারণ সম্পাদক দেবাশিস বসু চৌধুরী অবশ্য বলেন, “লেনদেনের সিংহভাগই হয় অনলাইনে। তাই ইয়ার এন্ডিংয়ের হিসাব সারতে তেমন অসুবিধা হবে না।’’