ভারতে বিমান জ্বালানি এটিএফের দাম কিলোলিটার পিছু ২৭৭৫ টাকা (২.৩%) কমাল রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থাগুলি। ফাইল চিত্র।
বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দাম আগের থেকে বেশ খানিকটা কমেছে। তাই বৃহস্পতিবার ভারতে বিমান জ্বালানি এটিএফের দাম কিলোলিটার পিছু ২৭৭৫ টাকা (২.৩%) কমাল রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থাগুলি। তবে পেট্রল-ডিজ়েলের দাম কমার কোনও নামগন্ধ নেই। আট মাস ধরে তা এক জায়গায় থমকে।
দেশে তেলের আমদানি খরচ কমায় পরিবহণ জ্বালানি এবং রান্নার গ্যাসের দাম কমানোর দাবি উঠতে শুরু করেছে। যদিও নভেম্বরের শেষ দিন তেল সংস্থাগুলি ডিসেম্বরের জন্য গ্যাসের দাম ফিরে দেখার সময় গৃহস্থের হেঁশেলে ব্যবহৃত ১৪.২ কেজির সিলিন্ডারে হাত ছোঁয়ায়নি। ফলে কলকাতায় তা ১০৭৯ টাকাই রয়েছে। হোটেল-রেস্তরাঁয় ব্যবহারের ১৯ কেজির সিলিন্ডার মাত্র ৫০ পয়সা কমে হয়েছে ১৮৪৫.৫০ টাকা।
গ্রাহক, বিরোধী দল-সহ সংশ্লিষ্ট সব মহলেরই অভিযোগ, বিশ্ব বাজারে তেলের দাম বাড়লে যে ভাবে সঙ্গে সঙ্গে দেশে চড়তে শুরু করে জ্বালানির দর, কমলে তার প্রতিফলন সে ভাবে দেখা যায় না। উদাহরণ হিসেবে সকলেই আঙুল তুলছেন গত বছরের নভেম্বরের দিকে। কেন্দ্র তখন পেট্রলে লিটার প্রতি ৫ টাকা এবং ডিজ়েলে ১০ টাকা উৎপাদন শুল্ক কমিয়েছিল। তাতে কলকাতায় ইন্ডিয়ান অয়েলের (আইওসি) পাম্পে পেট্রল নেমে হয় ১০৪.৬৭ টাকা, ডিজ়েল ৮৯.৭৯ টাকা। কিন্তু তার পরে ৪ নভেম্বর থেকে ২১ মার্চ পর্যন্ত ১৩৭ দিন তা স্থির ছিল। অথচ ওই নভেম্বরেই বিশ্ব বাজারে ব্রেন্ট ক্রুড নেমেছিল ৮০ ডলারের কাছে। পরে ৭৮ ডলারও হয়। ডব্লিউটিআই নামে ৭৬ ডলারে। কিন্তু ভারতে জ্বালানি সস্তা হয়নি। অথচ পাঁচ রাজ্যে বিধানসভার ভোট মেটার পরেই অশোধিত তেলের দাম বৃদ্ধির যুক্তিতে চড়তে থাকে পেট্রল-ডিজ়েল। হাজার পেরোয় রান্নার গ্যাস। কলকাতায় আইওসি-র পাম্পে নজিরবিহীন ভাবে পেট্রল হয় ১১৫.১২ টাকা। ডিজ়েল রাজ্যের কোথাও ফের ১০০ টাকা পেরোয়, কোথাও তার মুখে পৌঁছয়। কলকাতায় ছিল ৯৯.৮৩ টাকা।
তবে ৬ এপ্রিল থেকে তেলের দাম স্থির রেখেছে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলি। ২১ মে সন্ধ্যায় পর দিন (২২ মে) থেকে ফের এক দফা উৎপাদন শুল্ক ছাঁটে মোদী সরকার। ফলে দাম একটু কমে। সেই থেকে শুক্রবার পর্যন্ত তেল এক জায়গায় থমকে। কলকাতায় পেট্রল ১০৬.০৩ টাকা। ডিজ়েল ৯২.৭৬ টাকা। আমজনতার একাংশের আশঙ্কা, গুজরাতের ভোট মিটলেই ফের বাড়তে পারে দর। যদিও বিশ্ব বাজারে ব্রেন্ট এখন ৮৫ ডলারের আশেপাশে, অশোধিত তেল ডব্লিউটিআই ৮১ ডলার।