প্রতীকী ছবি
চিনা পণ্য ও কাঁচামাল আমদানিতে রাতারাতি পাঁচিল তোলার ডাকে দেশ যখন উত্তাল, তখন প্রমাদ গুনছে শিল্প। আচমকা জোগান-শৃঙ্খল ছিঁড়লে যে পণ্য তৈরির কাজ পণ্ড হতে পারে এবং অর্থনীতি আরও গভীর খাদে পড়তে পারে, সে ব্যাপারে ইতিমধ্যেই সাবধান করেছে রফতানি শিল্প, বৈদ্যুতিন পণ্য ও মোবাইল হ্যান্ডসেট নির্মাতা, গাড়ি ও তার যন্ত্রাংশ সংস্থা এবং ওষুধ শিল্প। এই অবস্থায় বিদেশ থেকে বিপুল পরিমাণে কিনতে হয় (পেট্রোপণ্য ও অশোধিত তেল বাদে), এমন ১৫টি পণ্য ও কাঁচামাল চিহ্নিত করেছে বণিকসভা অ্যাসোচ্যাম। তাদের দাবি, দু’তিন বছরের মধ্যে আত্মনির্ভর ভারত গড়তে হলে, অন্তত এই ১৫টিকে যে করে হোক দেশের মাটিতে তৈরির ক্ষমতা বাড়াতেই হবে।
যে ১৫টি পণ্যকে পাখির চোখ করার পরামর্শ দিচ্ছে বণিকসভাটি, তার মধ্যে আছে বৈদ্যুতিন পণ্য, কয়লা, লোহা-ইস্পাত, অন্যান্য ধাতু, উদ্ভিজ্জ তেল ও ফল, বৈদ্যুতিক ও অন্যান্য যন্ত্রাংশ, রাসায়নিক, পরিবহণের সরঞ্জাম, ওষুধ, সার ইত্যাদি। সংশ্লিষ্ট মহল বলছে, এর মধ্যে বহু পণ্যের বড় অংশ চিন থেকে আসে। তাদের বক্তব্য, দু’তিন বছর খুবই কম সময়। যদি ধরেও নেওয়া হয় তার পরে এগুলি দেশেই মিলবে, তা হলেও প্রশ্ন থাকে, এই দু’তিন বছরে কী হবে? তাদের দাবি, দেশীয় শিল্পকে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর সময় না-দিলে তা মুখ থুবড়ে পড়তে পারে। বিশেষত দেশের অর্থনীতি যেখানে গভীর সঙ্কটে। পুঁজির অভাব সর্বত্র।
বণিকসভার কর্তা দীপক সুদের দাবি, স্বনির্ভর হতে দেশে পণ্যগুলির উৎপাদন ক্ষমতা বাড়ানোয় লগ্নি করতে হবে। সেটির মান হতে হবে সেরা। আর দাম, বিশ্ব বাজারে প্রতিযোগিতায় পাল্লা দেওয়ার মতো। বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, গল্পের আসল মোচড়টা এখানেই। কারণ, এই কাজটা চিন করে থাকে। আর ভারতের এই ক্ষমতা অর্জন করাটাই চ্যালেঞ্জ।
এর আগে মারুতি সুজুকি ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যান আর সি ভার্গব যেমন বলেছিলেন, আমদানি করতে হয় বিকল্প নেই বলে। কারণ বিশ্ব বাজারে কল্কে পেতে সস্তার কাঁচামাল, যন্ত্রাংশ জরুরি। গাড়ির যন্ত্রাংশ নির্মাতাদের সংগঠন এসিএমএ-র হিসেব, ২০১৯ সালে আমদানি করা যন্ত্রাংশের এক-চতুর্থাংশেরও বেশি (৪২০ কোটি ডলার) চিনের।