—প্রতীকী চিত্র।
গত ২০০৮ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত বিশ্ব বাণিজ্যে একের পর এক রক্ষণশীল নীতি প্রয়োগ করেছে ভারত। দেশীয় শিল্পকে বাঁচাতে আমদানি শুল্ক বাড়িয়েছে বিশেষ করে কৃষিপণ্য এবং কল-কারখানাজাত পণ্যের উপরে। আমদানির ক্ষেত্রে চাপিয়েছে বিভিন্ন কড়া শর্তও। মূল্যায়ন সংস্থা মুডি’জ় ইনভেস্টর্স সার্ভিস আজ এক রিপোর্ট প্রকাশ করে দাবি করেছে, এই সমস্ত পদক্ষেপ বিশ্ব বাজারের ঝড়ঝাপ্টা থেকে ভারতীয় অর্থনীতিকে রক্ষা করলেও বাণিজ্যে এই সমস্ত বাধা দীর্ঘ মেয়াদে আর্থিক বৃদ্ধির সম্ভাবনাকে প্রতিহত করতে পারে। সে ক্ষেত্রে এ দেশের বিরাট যুব সম্প্রদায়ের জন্য যথেষ্ট কর্মসংস্থান তৈরি করতেও সমস্যা হতে পারে। রিপোর্টে শহরের বিক্রিবাটার অবস্থা সন্তোষজনক বলে স্বীকার করে নিলেও, গ্রামীণ অর্থনীতি নিয়ে উদ্বেগ যে দূর হয়নি, তা-ও উল্লেখ করেছে মুডি’জ়।
আজ ‘গ্লোবাল ম্যাক্রোইকনমিক আউটলুক ২০২৪-২৫’ প্রকাশ করেছে মুডি’জ়। সেখানে তারা জানিয়েছে, ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতায় বিশ্ব অর্থনীতি অনেক দিন ধরেই দোলাচলের মধ্যে। তার ফলে ভারতের রফতানি বাণিজ্য ধারাবাহিক ভাবে নিম্নমুখী। কিন্তু দেশের বাজারের চাহিদা অর্থনীতিকে চাঙ্গা রেখেছে। দক্ষিণ এশিয়ার অধিকাংশ দেশের তুলনায় বিশ্ব অর্থনীতিতে ভারতের অংশগ্রহণ অনেক বেশি। কিন্তু বাণিজ্যে বিভিন্ন ধরনের সংস্কার এনে প্রতিযোগিতার মুখোমুখি না হলে রফতানি-সহ বাণিজ্যের বহর বাড়ানোও অসুবিধাজনক হবে। তবে তা যে রাজনৈতিক ভাবে স্পর্শকাতর তা-ও স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে রিপোর্টে। সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, চাল, ডাল এবং আনাজপাতির দামকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে রফতানিতে বিভিন্ন কড়াকড়ি চাপিয়েছে কেন্দ্র। গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনের জন্যই এই বাধ্যবাধকতা রয়েছে সরকারের উপরে।
অতিমারির জেরে ২০২০-২১ অর্থবর্ষে ভারতীয় অর্থনীতি সঙ্কোচনের খাদে পড়েছিল। তার পরে তা ধারাবাহিক ভাবে ঘুরে দাঁড়ালেও সেই বৃদ্ধি বৈষম্যে পরিপূর্ণ বলে অভিযোগ করে আসছেন অর্থনীতিবিদদের একাংশ। আজকের রিপোর্টে মুডি’জ়-ও জানিয়েছে, এ বছর কৃষি উৎপাদন এবং গ্রামীণ আয়ে অসমান বৃষ্টিপাতের বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। ফলে সাম্প্রতিক কালে গ্রামাঞ্চলে চাহিদার উন্নতি হলেও তার ধারাবাহিকতা নিয়ে অনিশ্চয়তা থেকেই যাচ্ছে।