বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যবহারে জোর দিচ্ছে মোদী সরকার। কিন্তু গাড়িগুলিতে ব্যবহৃত ব্যাটারির লিথিয়ামও এ দেশে মেলে না। প্রতীকী ছবি।
বৈদ্যুতিক গাড়ি নিয়ে চর্চা দেশ জুড়ে। কিন্তু পেট্রল-ডিজ়েলের মতো প্রচলিত পরিবহণ জ্বালানির তুলনায় বৈদ্যুতিক গাড়ির মূল উপাদান লিথিয়াম অনেকটাই দামি। কারণ, তা আমদানি করতে হয়। এই অবস্থায় লিথিয়ামের বিকল্প তৈরির উদ্দেশ্যে ইজ়রায়েলের সংস্থা ফিনার্জির সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছিল ইন্ডিয়ান অয়েল। সেই যৌথ সংস্থা (আইওসি ফিনার্জি বা আইওপি) অল্প লিথিয়ামের সঙ্গে বেশিরভাগ অ্যালুমিনিয়াম ব্যবহার করে যে নতুন প্রযুক্তির ব্যাটারি তৈরি করেছে, তার একপ্রস্ত পরীক্ষামূলক ব্যবহার চলছে ইজ়রায়েলে। সম্প্রতি গ্রেটার নয়ডার গাড়ি মেলায় সংস্থাটির কর্তারা দাবি করেন, সব কিছু ঠিকঠাক চললে মাস তিনেকের মধ্যে ভারতেও চার চাকার গাড়িতে সেটির পরীক্ষামূলক ব্যবহার শুরু হবে। নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলির অনুমোদন মিললে দু’এক বছরের মধ্যে শুরু হবে তার বাণিজ্যিক উৎপাদন। প্রচলিত ব্যাটারি ব্যবস্থারও (স্টোরেজ) বিকল্প হতে পারে এটি।
ভারতকে তেলের চাহিদার ৮৫ শতাংশই আমদানি করতে হয়। সেই খরচ কমাতে বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যবহারে জোর দিচ্ছে মোদী সরকার। কিন্তু সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, গাড়িগুলিতে ব্যবহৃত ব্যাটারির লিথিয়ামও এ দেশে মেলে না। তার সঙ্গে যে কোবাল্ট, নিকেলের মতো ধাতুর প্রয়োজন পড়ে, সেগুলিও সহজলভ্য নয়। লিথিয়ামের বেশিরভাগ শোধনাগার চিনে। ফলে জোগানশৃঙ্খলের রাশ তাদের হাতে। অন্য দিকে লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি ঠান্ডার দেশে ভাল কাজ করলেও গরমে সমস্যা হতে পারে। তাই বিকল্পের সন্ধানে আইওসির এই উদ্যোগ।
আইওপির চেয়ারম্যান তথা আইওসির অন্যতম কর্তা সঞ্জীব গুপ্ত বলেন, ‘‘দেশে কী বিকল্প রয়েছে তার খোঁজ থেকেই অ্যালুমিনিয়ামের নাম উঠে আসে। চালু ব্যাটারির চেয়ে নতুন প্রযুক্তিতে (অ্যালুমিনিয়াম এয়ার ব্যাটারি সিস্টেম) অনেক কম লিথিয়ামের সঙ্গে বেশিরভাগটা অ্যালুমিনিয়াম থাকবে। এটি পুরোপুরি পুনর্ব্যবহারযোগ্য।’’ দেশে মহিন্দ্রার একটি তিন চাকার গাড়িতে সেই পরীক্ষা শুরু হয়েছে। সংস্থার কর্তারা জানান, মাস তিনেকের মধ্যে টাটা টিয়াগোর গাড়িতেও তা হবে। চার চাকার গাড়িতে দেশে যা প্রথম। অ্যালুমিনিয়ামের জন্য হিন্দালকোর সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছে আইওপি।
সঞ্জীব ও ফিনার্জির ভিপি জুডিথ ইয়ভনিলি মেলায় তাঁদের প্যাভিলিয়নে বিভিন্ন ধরনের গাড়িতে ওই প্রযুক্তির ব্যাখ্যা দিয়ে দাবি করেন, লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারির চেয়ে এই ব্যাটারিতে গাড়ি প্রায় ছ’গুণ বেশি পথ পাড়ি দিতে সক্ষম। শক্তি সঞ্চয় করে রাখতে টেলিকম ক্ষেত্রেও ব্যাটারির (স্টোরেজ ব্যাটারি) লাগে। দেশে সেই বিকল্প প্রযুক্তিই কাজে লাগাতে চান তাঁরা।