অমিত মিত্র।
মোবাইল, চটি-জুতো, সার ও বস্ত্র শিল্পে জিএসটি বাড়ানোর প্রস্তাব নিয়ে আপত্তি তুললেন পশ্চিমবঙ্গের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। শনিবার দিল্লিতে জিএসটি পরিষদের বৈঠক। সরকারি সূত্রের খবর, তার আগে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনকে চিঠিতে অমিতবাবু বলেছেন, করোনা-ভাইরাসের জেরে এমনিতেই বিশ্ব জুড়ে বিপাকে অর্থনীতি। এর ফলে ভারতেও কেনাকাটার খরচে ধাক্কা লাগবে। তার মধ্যে করের বোঝা চাপায় জামাকাপড় থেকে চটি-জুতো, মোবাইল বা সারের মতো রোজকার প্রয়োজনের জিনিসের দাম বাড়লে ব্যবসায়ী থেকে সাধারণ মানুষ, সকলের কাছেই ভুল বার্তা যাবে। ভুগবে কৃষি অর্থনীতিও।
রাজনৈতিক সূত্রের খবর, শনিবারের বৈঠকে অন্য কয়েকটি রাজ্যের অর্থমন্ত্রীরাও একই আপত্তি তুলবেন। তাঁদের মতে, এমনিতেই বাজারে কেনাকাটা ঝিমিয়ে। করোনা-আতঙ্কে বহু শহরে শপিং মল বন্ধ করতে হচ্ছে। ফলে বিক্রিবাটা আরও কমবে। তার মধ্যে এই সব পণ্যের দাম বাড়লে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।
বিভিন্ন পণ্য ও যন্ত্রাংশে জিএসটি-র হার নির্ধারণের জন্য আমলাদের কমিটি মোবাইল, জুতো, রাসায়নিক সার ও বস্ত্র শিল্পের বিভিন্ন পণ্যে কর বাড়ানোর সুপারিশ করেছে। যুক্তি, এই সব ক্ষেত্রে আসল পণ্যের থেকে কাঁচামালে তার হার বেশি। ফলে সংস্থাগুলি পণ্যে যত জিএসটি দিচ্ছে, কাঁচামালে মেটানো কর বাবদ তার থেকে অনেক বেশি ছাড় দাবি করছে। ফলে রাজকোষ থেকে কাঁচামালে মেটানো কর বাবদ বিলে বিপুল অর্থ বেরিয়ে যাচ্ছে।
অমিতবাবু শনিবারের বৈঠকে হাজির থাকবেন না। চিঠিতে যুক্তি দিয়েছেন, আসল পণ্যের থেকে কাঁচামালে মেটানো জিএসটি-র হার বেশি হওয়ার সমস্যা রয়েছে। তা নিয়ে আগেও কথা হয়েছে। সমাধানও দরকার। কিন্তু প্রশ্ন, এমনিতেই যখন ব্যবসা-বাণিজ্য সমস্যায়, বিশেষত ছোট-মাঝারি শিল্প, তার মধ্যে কি করের বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত? রাজ্যের অর্থমন্ত্রীদের যুক্তি, বস্ত্র, জুতো শিল্পে প্রচুর কর্মী কাজ করে। জিএসটি বাড়ানোয় আরও চাকরি গেলে এই সব শিল্পের বাজারেও প্রভাব পড়বে। ফলে জিএসটি পরিষদে এই সুপারিশ নিয়ে আলোচনা পিছোনো হোক। বিধানসভা অধিবেশন ও শারীরিক সমস্যার জন্য অমিতবাবু পরিষদের বৈঠকে যোগ না-দিয়ে ভিডিও কনফারেন্সে যোগ দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। অদ্ভূত বিষয় হল, তার জবাবই পাননি।