পরিবহণ মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। —ফাইল চিত্র।
আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে দেশে শুধু বৈদ্যুতিক গাড়িই চলবে— কিছু দিন আগে মোদী সরকারের মন্ত্রীদের এই বার্তায় প্রবল বিতর্ক বেঁধেছিল। এ বার রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম জানালেন তাঁদেরও লক্ষ্য, ২০৩০ সালের মধ্যে কলকাতায় চলবে শুধু বৈদ্যুতিক ও সিএনজি-চালিত গাড়ি। সে ক্ষেত্রে রাজ্য কি একেবারেই পেট্রল-ডিজ়েলের গাড়ি বাতিল করবে নাকি শুধু সরকারি সংস্থার ক্ষেত্রে তা কার্যকর হবে, তা স্পষ্ট করেননি তিনি। তবে বৈদ্যুতিকগুলির জন্য চার্জিং স্টেশন-সহ উপযুক্ত পরিকাঠামো গড়তে রাজ্যের একগুচ্ছ পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন তিনি।
জ্বালানি আমদানির খরচ এবং দূষণ কমাতে ক’বছর আগে একাধিক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ওই লক্ষ্যের কথা বলার পরে তার বাস্তবতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। পরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী অবশ্য জানান, ২০৩০ সালের মধ্যে পেট্রল-ডিজ়েল গাড়ি একেবারে বাতিল হবে, এমন নয়। তবে তাঁরা বিকল্প জ্বালানির গাড়ির ব্যবহার বাড়ানোর পক্ষে। দূষণ কমাতে বৈদ্যুতিক পরিবহণ ব্যবস্থা ও দূষণহীন ক্ষেত্রের বৃদ্ধিতে ভর করে কর্মসংস্থান সংক্রান্ত বণিকসভা বেঙ্গল চেম্বারের এক অনলাইন সভায় বুধবার ফিরহাদ জানান, আরও ১০০০টি সরকারি বৈদ্যুতিক বাস চলবে। ৩০০টি সরকারি বাসকে ডিজ়েল থেকে সিএনজি জ্বালানিতে বদল করা হচ্ছে। বেসরকারি ক্ষেত্রেও পর্যায়ক্রমে সেই পরিবর্তন হবে।
এর পরেই তিনি বলেন, ‘‘২০৩০ সালের মধ্যে কলকাতায় বৈদ্যুতিক ও সিএনজি গাড়িই চলবে, দূষণ ছড়ায় এমন গাড়ি নয়। পার্কিং এলাকার ২% চার্জিং স্টেশন গড়ার জন্য সংরক্ষিত থাকবে।’’ তা হলে কি সে সময়ের পরে কলকাতায় পেট্রল-ডিজ়েলের গাড়ি পুরো বাতিল হবে? এই প্রশ্নের কোনও ব্যাখ্যা মেলেনি। পরে চেষ্টা করেও তাঁর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা যায়নি।
বস্তুত, চড়া দাম ও চার্জ দেওয়ার পরিকাঠামোর অভাবে ভারত-সহ সারা
বিশ্বে এখনও বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যবহার নগণ্য। বিকল্প শক্তি ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞ অজয় মাথুরও এ দিন পরিকাঠামো ও পরিবেশের সমস্যার কথা মেনে নেন। তবে তাঁর মতে, সরকার ও বেসরকারি ক্ষেত্র তা দূর করতে চেষ্টা করছে। সমীক্ষা অবশ্য বলছে, বিশেষত বাড়িতেই চার্জ দওয়ার সুবিধা থাকায় দু’চাকার বৈদ্যুতিক গাড়িতে মহিলাদের আগ্রহ বেশি। কারণ পাম্পে গিয়ে তেল ভরতে অনেকেরই অনীহা। একই সঙ্গে অজয়ের দাবি, বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যবহার বাড়লে কাজের সুযোগ বাড়বে। বিশেষত দক্ষ কর্মী লাগবে।
এ দিকে, সংবাদ সংস্থার খবর, দেশ জুড়ে চার্জিং স্টেশন-সহ পরিকাঠামো গড়তে ম্যারিয়ট ইন্টারন্যাশনালের সঙ্গে জোট বেঁধেছে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা কনভার্জেন্স এনার্জি সার্ভিসেস। দু’মাসে ম্যারিয়টের ৩৭টি হোটেলে চার্জিং স্টেশন গড়বে তারা।