কলকাতা বিমানবন্দরে জেটের ফাঁকা কাউন্টার। দেশের একাধিক বিমানবন্দরে এমন বহু জায়গা নেওয়া রয়েছে সংস্থার নামে। পিটিআই
ঋণের ভারে ও পুঁজির অভাবে গত ১৭ এপ্রিল জেট এয়ারওয়েজের পরিষেবা বন্ধ হয়েছে। কিন্তু দেশের বিমানবন্দরগুলিতে এখনও বেশ কিছু জায়গা রাখা রয়েছে সংস্থাটির জন্য। তা ছেড়ে দিতে এ বার তাদের চিঠি দেওয়া শুরু করলেন বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। সোমবার কলকাতা বিমানবন্দর থেকে জেটকে এই সংক্রান্ত চিঠি পাঠানো হয়েছে। দিল্লি, মুম্বইয়ের মতো বেসরকারি বিমানবন্দরগুলি অবশ্য এখনও সিদ্ধান্তের কথা জানায়নি।
এ দিকে জেটের অংশীদারি বিক্রির জন্য নিলাম প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। পরিষেবা এখন বন্ধ। এরই মধ্যে মঙ্গলবার মধ্যরাতে কর্মীদের স্বাস্থ্য বিমার সময় শেষ হয়েছে। সংস্থা কর্মীদের দিয়েছে, পুনর্নবীকরণের টাকা দেওয়া সম্ভব নয়। প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার শৈলেশ সিংহ নামে এক কর্মী আত্মহত্যা করেছেন। তাঁর আত্মীয়দের দাবি, তিনি ক্যানসারের চিকিৎসার খরচ পেতেন জেট থেকেই। কিন্তু বেতন বন্ধ হওয়ায় মানসিক চাপ বাড়ছিল। দানা বাঁধছিল নানা আশঙ্কা। শৈলেশের স্মৃতিতে আজ, বুধবার শ্রমিক দিবসে সংস্থার কর্মীদের দিল্লি বিমানবন্দরে জমায়েত হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে কর্মী ইউনিয়ন। সম্প্রতি নাগপুরে জেটের এক বাসচালক অরবিন্দ কাম্বলিও আত্মহত্যার চেষ্টা করেন বলে সংস্থা সূত্রের খবর।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
কী রয়েছে কলকাতা বিমানবন্দরে
বিমান দাঁড় করানোর জন্য এয়ার সাইডে জায়গা। একটি বিমান। আলাদা জায়গা রয়েছে বিমান রক্ষণাবেক্ষণের জন্য। সিঁড়ি এবং বাসও রয়েছে সেখানে। চেক-ইন কাউন্টার, টিকিট কাউন্টার, অফিস। পুরনো টার্মিনালের বড় এলাকা জুড়েও অফিস।
এই পরিস্থিতিতে বিমানবন্দরের জায়গা খালি করতে চাপ বেড়েছে জেটের উপরে। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্রের খবর, সোমবার বিকেলে এক বৈঠকে এই সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান গুরুপ্রসাদ মহাপাত্র আনন্দবাজারকে বলেন, ‘‘দেশের যে সব বিমানবন্দর আমাদের অধীনে, সেখানে কোথায় জেটের পক্ষ থেকে কতটা জায়গা দখল করে রাখা আছে তার তালিকা তৈরি করা হচ্ছে।’’ কলকাতা বিমানবন্দরের অধিকর্তা কৌশিক ভট্টাচার্য জানান, জেটের হাতে থাকা চেক-ইন কাউন্টারগুলি অন্য উড়ান সংস্থাকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আগ্রহ দেখিয়েছে স্পাইসজেট ও এয়ার এশিয়া।
কিন্তু ১০ মে-র মধ্যেই তো জেটের সম্ভাব্য লগ্নিকারীদের নাম জানা যাবে! তার আগেই কেন এমন কড়া পদক্ষেপ? মহাপাত্রের জবাব, ‘‘কে বিনিয়োগ করবে তা এখনও পরিষ্কার নয়। নির্দিষ্ট কারও নাম আমরা শুনিনি। তা ছাড়া নিজেদের প্রস্তুত রাখার জন্যই তালিকা তৈরি রাখা হচ্ছে।’’
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের একাংশ জানাচ্ছেন, এর আগে কিংফিশার নিয়ে তাঁদের অভিজ্ঞতা তিক্ত। ‘এই খুলবে, এই খুলবে’ এমন একটা বাতাবরণের মধ্যে দীর্ঘদিন অপেক্ষা করার পরে এক টাকাও উদ্ধার করা যায়নি। কর্তৃপক্ষের মোটা লোকসান হয়েছিল। সেই ভুল আর করতে চান না তাঁরা। এ দিন চেয়ারম্যান বলেন, ‘‘অফিস ভাড়া, ল্যান্ডিং, পার্কিং চার্জ-সহ যা বকেয়া ছিল, তা জেটের সিকিউরিটি ডিপোজিট থেকে পাব। কিন্তু যত সময় যাবে, অফিস ও বিমান দাঁড় করিয়ে রাখার ভাড়া ততই বাড়তে থাকবে।’’ সেই কারণেই এই সিদ্ধান্ত।