—ফাইল চিত্র।
দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে। বাজারে ধার রয়েছে ৬০ হাজার কোটি টাকারও বেশি। ২০১৮-১৯ সালে নিট লোকসান ৮৫৫৬ কোটি টাকা। এই অবস্থায় ‘আজ নগদ কাল ধার’ নীতি নিল রাষ্ট্রায়ত্ত এয়ার ইন্ডিয়া (এআই)। জানিয়ে দিল, এ বার থেকে বিমানের টিকিটের দাম বাবদ যে সব সরকারি সংস্থার কাছ থেকে ১০ লক্ষ টাকার বেশি বকেয়া রয়েছে, তাদের আর ধারে টিকিট দেওয়া হবে না। অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকেও বকেয়া রয়েছে এয়ার ইন্ডিয়ার।
রাষ্ট্রায়ত্ত এই বিমান সংস্থাটিকে বিক্রি করার চেষ্টা করছে কেন্দ্র। এর আগে দরপত্র চাওয়া হলেও এয়ার ইন্ডিয়া কিনতে আগ্রহ দেখায়নি কেউ। আগামী বছরে ফের তা বিক্রি করতে ইতিমধ্যেই প্রক্রিয়া চলছে বলে সম্প্রতি সংসদে জানিয়েছেন বিমানমন্ত্রী হরদীপ সিংহ পুরী। তবে একই সঙ্গে তাঁর হুঁশিয়ারি, বেসরকারিকরণ করা না-গেলে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাটি বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া উপায় থাকবে না। যদিও সংস্থার কর্মীদের স্বার্থ রক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে বলেও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। পুরী বলেছেন, দরপত্র আমন্ত্রণের বিষয়টি চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়া চালাচ্ছে সরকার। সূত্রের খবর, সম্ভাব্য ক্রেতাদের আগ্রহ বাড়াতে উড়ান ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নি (এফডিআই) বিধি সহজ করার সম্ভাবনা খতিয়ে দেখতে শুরু করেছে শিল্পোন্নয়ন, অভ্যন্তরীণ শিল্প ও বাণিজ্য উন্নয়ন দফতর (ডিপিআইআইটি) এবং বিমান মন্ত্রক। এই পরিস্থিতির মধ্যেই ধার কমাতে কোমর বাঁধছে এআই।
আর্থিক ছবি
• বাজারে ধার ৬০,০০০ কোটি টাকা।
• নিট লোকসান প্রায় ৮৫০০ কোটি।
• সরকারি সংস্থার কাছ থেকে টিকিট বাবদ আদায় হয়েছে ৫০ কোটি টাকা।
• পাওনা ২৬৮ কোটি।
সিদ্ধান্ত
• যে সব সরকারি সংস্থার কাছে থেকে এআই ১০ লক্ষ টাকার বেশি পায়, তাদের ধারে টিকিট দেওয়া হবে না।
• তালিকায় রয়েছে সিবিআই, ইডি, সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ, তথ্য কমিশন, কেন্দ্রীয় শ্রম দফতর।
• এআইয়ের দাবি, সাধারণ মানুষের মতোই সরকারি সংস্থার কর্তারা নগদে টিকিট কাটতে পারবেন।
বৃহস্পতিবার সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে এয়ার ইন্ডিয়ার এক কর্তা জানিয়েছেন, কেন্দ্রের অধীনে বিভিন্ন সরকারি সংস্থার কাছে তাদের বকেয়া পড়ে রয়েছে ২৬৮ কোটি টাকা। অনেক কাঠ-খড় পুড়িয়ে এই সব সরকারি সংস্থার কাছ থেকে ৫০ কোটি টাকা আদায় করা গিয়েছে। তাই ঠিক হয়েছে, এ বার থেকে যে সব সরকারি সংস্থার কাছে একক ভাবে ১০ লক্ষ টাকার বেশি বকেয়া, তাদের আর ধারে টিকিট দেওয়া হবে না। এই তালিকায় সিবিআই, ইডি, সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ, তথ্য কমিশন, কেন্দ্রীয় শ্রম দফতর রয়েছে বলে ওই কর্তা দাবি করেছেন। এয়ার ইন্ডিয়ার দাবি, অন্য আর দশটা সাধারণ লোকের মতো, এই সব সরকারি সংস্থার কর্তারা নগদে টিকিট কাটতে পারবেন।
কেন্দ্রের নিয়ম অনুযায়ী, সরকারি কাজে কর্তাদের এয়ার ইন্ডিয়াতেই যাতায়াত করতে হয়। এয়ার ইন্ডিয়ার অভিযোগ, সরকারি সংস্থা কখনওই নগদে টিকিট কাটে না। সব সময়ে ধারে টিকিট কেনে এবং বেশ কিছু দিন পরে শোধ করে। ধারের বোঝা জমতে জমতে এ বার পাহাড় হয়ে গিয়েছে। উল্টো চিত্রও রয়েছে। দেশের বিভিন্ন বিমানবন্দরের ভাড়া এবং জ্বালানি বাবদ এয়ার ইন্ডিয়ার কাছ থেকেও বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ ও জ্বালানি সংস্থার বহু টাকা বকেয়া পড়ে রয়েছে।