নতুন দৌড়: নিজের স্বপ্নের সঙ্গে ক্যাপ্টেন গোপীনাথ। —ফাইল চিত্র।
আগের বার ২০০৭ সালে বিক্রি করেছিলেন কিংগফিশার এয়ারের পূর্বতন কর্ণধার বিজয় মাল্যের কাছে। এ বার আর এক ধনকুবের গৌতম আদানির আত্মীয়ের কাছে এয়ার ডেকান বেচলেন ক্যাপ্টেন গোপীনাথ।
এয়ার ডেকানের বিমান নিয়ে বৃহস্পতিবারই কলকাতায় আসবেন বলে জানিয়েছিলেন ক্যাপ্টেন গোপী। কেন্দ্রের নতুন আঞ্চলিক উড়ান প্রকল্পে কলকাতা থেকে জামশেদপুর এবং শিলঙে ১৮ আসনের উড়ান পরিষেবা শুরুর কথা ছিল তাঁর। কিন্তু তার বদলে শুক্রবার সন্ধ্যায় মুম্বই থেকে সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ের খবর, আমদাবাদের জিএসইসি অ্যাভিয়েশন এবং মোনার্ক নেটওয়ার্থ ক্যাপিটালের কাছে এয়ার ডেকান বিক্রি করে দিয়েছেন তিনি। উল্লেখযোগ্য ভাবে জিএসইসি অ্যাভিয়েশন রাকেশ রমনলাল শাহর সংস্থা। যিনি আবার গৌতম আদানির বোন প্রীতির স্বামী।
জীবনে অন্তত এক বার বিমানে চড়ার সুযোগ পাবেন প্রত্যেক ভারতীয়। এই স্বপ্নের জ্বালানি পেটে পুরেই চোদ্দো বছর আগে ডানা মেলেছিল ক্যাপ্টেন গোপীনাথের এয়ার ডেকান। কিন্তু সস্তার টিকিটে দেশের আকাশে বিমান পরিবহণের নকশা আমূল বদলে দেওয়ার পরেও মুখ থুবড়ে পড়েছিল ওই সংস্থা। সম্প্রতি তারা ফের পুরোদমে উড়ান শুরুর তোড়জোর শুরু করেছিল সরকারি ভর্তুকির ডানায় ভর করে। রানওয়ে কেন্দ্রের ‘উড়ান’ প্রকল্প। কিন্তু এখন শোনা যাচ্ছে, এয়ার ডেকানের নাম মুছে ফেলা হচ্ছে।
রাকেশ যে জিএসইসি অ্যাভিয়েশনের মালিক, তার সঙ্গে মিশে যাচ্ছে ডেকান। সঙ্গে হাত মিলিয়েছে মোনার্ক নেটওয়ার্থ ক্যাপিটাল। নতুন সংস্থার নাম দেওয়া হয়েছে জিএসইসি মোনার্ক অ্যাভিয়েশন। সংবাদসংস্থা জানাচ্ছে, এর ৫০% মালিকানা থাকবে ক্যাপ্টেন গোপীর হাতেই। তিনিই এই সংস্থার চেয়ারম্যান হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন। রাকেশ শাহর ছেলে শৈশব হয়েছেন নতুন সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর।
নতুন এই সংস্থা আবার এ দিনই কিনে নিয়েছে এয়ার ওডিশার ৬০ শতাংশ শেয়ার। যার অর্থ, এয়ার ডেকানের পাশাপাশি এয়ার ওডিশার মালিকানাও চলে আসছে একই ছাদের তলায়। ২০১২ সালে ভুবনেশ্বর থেকে শুরু হয় এয়ার ওডিশার যাত্রা। ওডিশার রাধাকান্ত পানি পরিবারের হাতেই ছিল তার মালিকানা। তারাও অংশ নিচ্ছিল কেন্দ্রের আঞ্চলিক ‘উড়ান’ প্রকল্পে।
কিছু দিন আগেই গোপী বলেছিলেন, ‘‘(উড়ান প্রকল্পে) কেন্দ্রের ভর্তুকির হাত ধরেই ফিরে আসা।’’ তাঁর কথায়, ‘‘প্রত্যন্ত শহর থেকে উড়ান চালুর পরিকল্পনা আমার আগেই ছিল। কলকাতা-জামশেদপুর উড়ান চালু করেছিলাম। কিন্তু চালাতে পারিনি।’’ তাঁর দাবি, এ বার ‘উড়ান’ প্রকল্প চালুর সময়ে তাঁকে ফোন করে বলা হয়েছিল এই সুযোগ হাতছাড়া না-করতে। আদানি-আত্মীয়ের সঙ্গে গাঁটছড়ার পরেও সেই স্বপ্ন আগামী দিনে জারি থাকে কি না, সে দিকেই এখন নজর সকলের।