মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা কৃষ্ণমূর্তি সুব্রহ্মণ্যন
অর্থনীতির দরজা গত বছরের মতো পুরো বন্ধ না-হলেও, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ সামলাতে বাঁধন পরাতে হয়েছে বিভিন্ন আর্থিক কার্যকলাপে। রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের রিপোর্ট বলছে, দেশের নানা জায়গায় স্থানীয় লকডাউন ও বিধিনিষেধের ফলে উৎপাদনের ক্ষতির অঙ্ক প্রায় ২ লক্ষ কোটি টাকা। বণিকসভা সিআইআই সম্প্রতি দাবি জানিয়েছে, ৩ লক্ষ কোটি টাকার ত্রাণ প্রকল্পের ব্যবস্থা করুক কেন্দ্র। এই প্রসঙ্গে রবিবার মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা কৃষ্ণমূর্তি সুব্রহ্মণ্যনের বক্তব্য, অর্থনীতির স্বার্থে বিভিন্ন পদক্ষেপের রাস্তা সরকার খোলা রেখেছে। তবে ইতিমধ্যে ২০২১-২২ অর্থবর্ষের বাজেটে বিভিন্ন উদ্যোগের কথা ঘোষণা করেছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। তার পরেও কতটা কী প্রয়োজন তা খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে এপ্রিল ও মে মাসে অর্থনীতি যে ভাল রকম ধাক্কা খেয়েছে, তা নিয়ে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মহল এক মত। সম্প্রতি শীর্ষ ব্যাঙ্কের গভর্নর শক্তিকান্ত দাসও মেনেছেন, প্রথম ধাক্কার পরে অর্থনীতি দ্রুত গতিতে এগোলেও, বর্তমান পরিস্থিতি যাবতীয় পূর্বাভাসকে এলোমেলো করে দিয়েছে।
এই প্রেক্ষিতেই উঠছে নতুন ত্রাণের দাবি। সুব্রহ্মণ্যন বলেন, ‘‘গত বছরের মতোই বিভিন্ন পদক্ষেপের রাস্তা খোলা রেখেছি। কিন্তু ত্রাণের ব্যাপারে আলোচনার আগে বুঝতে হবে, আগের বারের সঙ্গে এ বারের পরিস্থিতির বড় পার্থক্য আছে।... অর্থনীতির উপরে দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রভাব পড়বে ঠিকই, তবে তা গত বছরের মতো হবে না।’’
কৃষ্ণমূর্তির আরও বক্তব্য, গত অর্থবর্ষের বাজেট পেশের সময়ে করোনার প্রভাব ছিল না। অতিমারির শুরু হওয়ার পরে অবস্থা বদলে যায়। ত্রাণ প্রকল্প আনে কেন্দ্র। আর এ বারের বাজেট তৈরিই হয়েছে করোনার কথা মাথায় রেখে। পরিকাঠামোয় খরচ বাড়িয়ে কর্মসংস্থানকে উৎসাহিত করার
কর্মসূচি ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। অনেকে অবশ্য মনে করাচ্ছে, কেন্দ্র যা-ই বলুক না কেন, গত বছর সাধারণ মানুষের হাতে নগদ পৌঁছে দিয়ে বাজারে চাহিদা বাড়ানোর মতো পদক্ষেপ কার্যত করেইনি তারা। তা করলে হয়তো এ দফায় চাহিদা এতটা ধাক্কা খেত না।
আজই সিআইআইয়ের প্রেসিডেন্ট টি ভি নরেন্দ্রনের পরামর্শ, করোনার তৃতীয় ঢেউ থেকে বাঁচতে বিধিনিধেষ শিথিল করার ব্যাপারে সতর্ক পদক্ষেপ করুক কেন্দ্র। তাঁর বক্তব্য, অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে সরবরাহ ব্যবস্থা ফেরা চালু করা দরকার। তবে তার জন্য কোন ক্ষেত্রগুলিকে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত, তা ঠিক করতে হবে।