—প্রতীকী চিত্র।
দেশের তরুণ প্রজন্মের মধ্যে যেমন শেয়ারে আগ্রহ বেড়েছে, তেমনই মূল্যবৃদ্ধির দাপট সামলাতে বহু সাধারণ লগ্নিকারী একটু বেশি রিটার্নের আশায় পা বাড়াচ্ছেন তার দিকে। ঝুঁকি নিয়েও টাকা ঢালছেন মিউচুয়াল ফান্ড, এমনকি সরাসরি শেয়ারে। সেই উৎসাহে পিছিয়ে নেই এ রাজ্যও। ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জের (এনএসই) পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, শেয়ার বাজারে নতুন লগ্নিকারী যোগ দেওয়ার তালিকায় ভারতের প্রথম ১০টি জেলার মধ্যে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের দু’টি। শুধু তা-ই নয়। সেই তালিকায় আবার কলকাতাকে পিছনে ফেলেছে উত্তর ২৪ পরগনা। চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জানুয়ারি-মে) উত্তর ২৪ পরগনায় যেখানে যোগ দিয়েছেন প্রায় ৯২,০০০ নতুন লগ্নিকারী, সেখানেই কলকাতায় সংখ্যাটা ৬০,৩০০ জন।
এসএনই-র তথ্য অনুসারে, জানুয়ারি-মে পর্যন্ত লগ্নিকারী বৃদ্ধির নিরিখে সব চেয়ে প্রথমে দিল্লি ও রাজধানী সংলগ্ন অঞ্চল। তার পরে তালিকায় ঠাঁই পেয়েছে বৃন্মম্বুই, বেঙ্গালুরু, পুণে, সুরাত, আমদাবাদ, জয়পুর, নাগপুর। অষ্টমে উত্তর ২৪ পরগনা। সব শেষে কলকাতা। প্রতি মাসেই কলকাতার চেয়ে উত্তর ২৪ পরগনা থেকে গড়ে ৬,০০০-এর মতো বেশি লগ্নিকারী বাজারে পা রেখেছেন।
বাজার বিশেষজ্ঞ আশিস নন্দীর কথায়, ‘‘উত্তর ২৪ পরগনার সল্টলেক, রাজারহাটের মতো অঞ্চলে তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রের বাড়বাড়ন্তের কারণে বিরাট সংখ্যক লগ্নিকারী শেয়ারে টাকা ঢালছেন। যাঁদের গড় বয়স ২৫-৩০ বছর। তা ছাড়া, এই জেলায় দমদম, ব্যারাকপুর, মধ্যমগ্রাম, বারাসত, বরাহনগরের মতো জায়গায় বহু মানুষ ফ্ল্যাট কিনছেন। তাঁদের বড় অংশ শেয়ারে নিয়মিত লগ্নি করেন।’’ কলকাতার তুলনায় পড়শি জেলার মানুষ শেয়ারে লগ্নিতে বেশি সচেতন বলে মত আর্থিক পরামর্শদাতা শৈবাল বিশ্বাসের। তাঁর কথায়, ‘‘কলকাতার পিছিয়ে থাকাই প্রমাণ করে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির শহরের মানুষ শেয়ার লেনদেনে স্বচ্ছন্দ হয়ে উঠছেন।’’
ঝুঁকি সত্ত্বেও শেয়ারে লগ্নির ঝোঁক বাড়ছে জানিয়ে আশিসের আরও মন্তব্য, এতে বেশি রিটার্নের হাতছানি তো রয়েইছে। উপরন্তু মুঠো ফোনে আঙুল ছুঁইয়েই লেনদেনের যে সুযোগ তৈরি হয়েছে, তা-ও তরুণ প্রজন্মের আগ্রহে ইন্ধন জুগিয়েছে। শৈবালের আবার বক্তব্য, এক শ্রেণির মানুষের হাতে থাকা বাড়তি টাকা খাটছে শেয়ারে। অন্য শ্রেণির ক্ষেত্রে পণ্যের চড়া দাম যুঝে সম্পদ তৈরির হাতিয়ার হিসেবেও শেয়ারের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। আর সেই সুযোগে দেশের শেয়ারে লগ্নির মানচিত্রে জায়গা পাচ্ছে রাজ্যের দুই জেলা।