গত বছরের শেষ দিনে গৃহঋণের সুদে ভর্তুকির কথা ঘোষণা করেছিলেন নরেন্দ্র মোদী। বলেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার আওতায় ২০১৭ সালে ৯ লক্ষ টাকা পর্যন্ত গৃহঋণের সুদে ৪% ভর্তুকি মিলবে। ১২ লক্ষ পর্যন্ত ঋণে তা ৩%। বলা হয়েছিল, গ্রামে নতুন বাড়ি তৈরি বা পুরনো বাড়ি সম্প্রসারণে ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণের সুদে ৩% ছাড়ের কথাও। এ বার সেই দাওয়াইয়ে ভর করেই ঘুরে দাঁড়ানোর জমি খুঁজে পাচ্ছে আবাসন শিল্প।
নির্মাণ সংস্থাগুলির সংগঠন ক্রেডাইয়ের দাবি, নোট সঙ্কটের ধাক্কা কিছুটা কমেছে। তার উপর আবাসন শিল্প অক্সিজেন পেয়েছে সুদে ভর্তুকির হাত ধরে। সংগঠনটির জাতীয় স্তরের প্রেসিডেন্ট গীতাম্বর আনন্দের মতে, এর ফলে তৈরি হবে নতুন শ্রেণির ক্রেতা। যাঁদের চাহিদা মেটানোর আগাম প্রস্তুতি নেওয়ার লক্ষ্যে ঝাঁপাচ্ছে আবাসন সংস্থাগুলি। তাই লাফিয়ে বাড়ছে মধ্যবিত্ত আবাসনের সংখ্যা।
পিছিয়ে থাকতে নারাজ রাজ্যের আবাসন শিল্পও। পরিসংখ্যান বলছে, কলকাতায় বছরে তৈরি হয় ১৫-১৭ হাজার ফ্ল্যাট। ক্রেডাই বেঙ্গলের প্রেসিডেন্ট নন্দু বেলানির দাবি, চলতি বছরে সংখ্যাটা দাঁড়াবে প্রায় ২২ হাজার। সুদে ভর্তুকির প্রকল্প চালু হওয়ার কথা পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা ভোট মিটলে। তবে এখন থেকেই তার ফায়দা তোলার জন্য কোমর বাঁধছে রাজ্য-সহ সারা দেশের আবাসন শিল্প।
আনন্দের দাবি, চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে নতুন নির্মাণ প্রকল্প ঘোষণার সংখ্যা বাড়বে। কারণ, কম দামি বাড়ি তৈরিকে নিশানা করছে টাটা হাউজিং, শাপুরজি-পালোনজি, ওয়াধোয়া গোষ্ঠী, মহীন্দ্রা লাইফস্পেসেস-সহ জাতীয় স্তরের প্রায় সমস্ত নির্মাণ সংস্থাই।
উপদেষ্টা সংস্থা নাইট ফ্র্যাঙ্কের সমীক্ষা বলছে, দেশে দামি বাড়ির বিক্রি তলানিতে। এমনকী কলকাতায় এখন যত দামি ফ্ল্যাট পড়ে আছে, সেগুলি বেচতেও অন্তত ৩১ মাস লাগবে। তাই বাজি কম দামের ফ্ল্যাটই।
বিজিএ রিয়েলটির প্রধান রাজীব ঘোষ জানান, মানুষের ঋণের বোঝা কমাবে সুদে ভর্তুকি। যার হাত ধরে চাহিদা বাড়বে বলে মনে করেন ইউনিমার্কের হর্ষ পটোডিয়া ও সিদ্ধা গোষ্ঠীর সঞ্জয় জৈন। ক্রেডাই বেঙ্গলের অন্যতম কর্তা সুশীল মোহতা জানান, নির্মাণ শিল্পে দক্ষ শ্রমিকের ঘাটতি মেটানোর জন্য পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিতে জেলায় কেন্দ্রও চালু করছে ক্রেডাই।