উত্তরপ্রদেশে চর্মশিল্পের দুর্দিনে কিন্তু সুদিন ফিরতে পারে এ রাজ্যে।
সরকারি নিষেধাজ্ঞার জেরে উত্তরপ্রদেশের অধিকাংশ কসাইখানা বন্ধ। কাঁচামালের টানে কাজ বন্ধ ট্যানারিতেও। এ বার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে সেখানকার বিভিন্ন ট্যানারি নজর দিচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের দিকেই।
উত্তরপ্রদেশে কসাইখানা নিয়ে সরকারি কড়াকড়ির জেরে ৩০০-র বেশি ট্যানারি বন্ধ। এগুলির মধ্যে ২৫টি বড় ট্যানারি এ রাজ্যে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি, সব মিলিয়ে সম্ভাব্য বিনিয়োগের পরিমাণ প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা।
নোট সঙ্কটের ক্ষতে এখনও পুরোপুরি প্রলেপ পড়েনি। একই সঙ্গে পরিবেশ দূষণের কারণে সরকারি নির্দেশে বন্ধ হচ্ছে কসাইখানা। সব মিলিয়ে উত্তরপ্রদেশে ঝাঁপ ফেলছে একের পর এক ট্যানারি। কাঁচামালের চূড়ান্ত টানাটানিতে ব্যবসা লাটে উঠেছে কানপুরের অধিকাংশ চর্ম ব্যবসায়ীর। কাঁচা চামড়ার জোগানের অভাবে মার খাচ্ছে দেশ জুড়ে ১৫৪৮টি ট্যানারি।
সব মিলিয়ে এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে ১০ লক্ষের বেশি মানুষের রোজগার। আর এই কাঁচা চামড়ার সরবরাহে টান পড়ায় ধুঁকছে কলকাতা থেকে কোলাপুর, চেন্নাই থেকে কানপুরের মতো চর্মশিল্পের কেন্দ্রগুলি। তবে সব চেয়ে বেশি মার খাচ্ছে উত্তরপ্রদেশের ট্যানারি। মূলত উন্নাও, বানথের ও কানপুরে রয়েছে এই সব ট্যানারি।
ইতিমধ্যেই ২৫ জন চর্ম ব্যবসায়ী এ রাজ্যে বিনিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে দাবি লেদার এক্সপোর্ট কাউন্সিলের পূর্বাঞ্চলীয় কর্তা রমেশ জুনেজা-র। তাঁর দাবি, ‘‘এঁরা সকলেই ভারতের প্রথম সারির চর্ম ব্যবসায়ী, সব মিলিয়ে যাঁদের ব্যবসা ২৫০০ কোটি টাকার বেশি। গড়ে ৮০ কোটি করে তাঁদের এখানে পুঁজি ঢালার কথা।’’ জমি ও সংশ্লিষ্ট ছাড়পত্র পেলে শীঘ্রই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হতে পারে বলে ধারণা জুনেজা-র।
২৫টি আগ্রহী সংস্থার মধ্যে রয়েছে সুপারহাউস, রহমান ইন্ডাস্ট্রিজ ও মডেল ট্যানার্স। উত্তরপ্রদেশে ১৫টি উৎপাদন কেন্দ্র রয়েছে সুপারহাউসের। উন্নাওতে ৬৫ একর জুড়ে রহমান ইন্ডাসট্রিজের স্বয়ংসম্পূর্ণ প্রকল্প আছে। ছ’টি শাখা সংস্থা-সহ মডেল ট্যানার্স গোষ্ঠীর ব্যবসা ইউরোপ, আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়ায় ছড়িয়ে রয়েছে। সব মিলিয়ে এ সব সংস্থার বিনিয়োগ এলে কর্মসংস্থান এক লাফে দ্বিগুণ হয়ে যাবে বলে আশা করেন জুনেজা।
উত্তরপ্রদেশের চর্ম ব্যবসায়ীরা এ রাজ্যে এসে শিল্প তালুকে কারখানা গড়তে চান বলে দাবি জুনেজা-র। রাজ্যের একমাত্র চর্মনগরী রয়েছে বানতলায়। আপাতত ২০২ একর জমিতে ৩৩২ কারখানা রয়েছে বানতলায়। এ ছাড়া ১৩০ একর জমিতে জুতো-পার্ক তৈরি হওয়ার কথা। একই সঙ্গে আরও ১১০ একর জমিতে অন্যান্য চামড়ার জিনিসের পার্ক গড়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
উত্তরপ্রদেশের বড় সংস্থার বিনিয়োগ টানতে অবশ্য নতুন শিল্প তালুক তৈরি করা যেতেই পারে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট শিল্পমহল।