আলোচনায় ডাঃ সোহিনী শাস্ত্রী
নবগ্রহের নয় গ্রহের মধ্যে শনি বিবেচিত হয় ন্যায়ের গ্রহ হিসাবে। অন্য দিকে কেতু হল এক মস্তকবিহীন গ্রহ, যা ছায়া গ্রহ নামেও পরিচিত। গুণের দিক থেকে এই দুই গ্রহ একে অপরের থেকে একবারে আলাদা। শনি, পৃথিবীতে ভরণপোষণের জন্য এক জনের কর্ম সম্পাদনের প্রচার করে, কেতু মোক্ষ অর্জনের জন্য বিচ্ছিন্নতা এবং নির্জনতা প্রচার করে। শনি এবং কেতু কারও জন্মছকের মধ্যে অবস্থানগত ভাবে ভারসাম্যপূর্ণ না হলে, সেই ব্যক্তির জীবনকে বিভ্রান্ত করে। সেই ব্যক্তি বুঝতে পারেন না যে জীবনে কোনটি তাঁর জন্য স্থির করা রয়েছে- আধ্যাত্মিকতা নাকি কঠোর পরিশ্রম!
এই সংযোগ খুবই বিরল ও মহাজাগতিক একটা ঘটনা। তাই এই বিষয়ে আরও জেনে নেব আমরা, রাষ্ট্রপতি পুরস্কারপ্রাপ্ত জ্যোতিষশাস্ত্রবিদ ডাঃ সোহিনী শাস্ত্রী-র কাছ থেকে।
এক নজরে শনি ও কেতুর সংযোগ:
এক ঘর থেকে অন্য ঘরে গমন করতে শনির সময় লাগে ২.৫ বছর আর কেতুর লাগে ১.৫ বছর। আর কোনও এমন গ্রহ নেই যে এতটা সময় এক স্থানে অবস্থান করে। এই দুই গ্রহই খুব ধীর গতিতে গমন করে। শনি এবং কেতুর সংযোগ যেমন খুবই বিরল, ঠিক তেমনই গুরুত্বপূর্ণ। এই দুই গ্রহ প্রতি ১৮ বছরে এক বার একে অপরকে অতিক্রম করে থাকে। শনি এবং কেতু সংযোগের ফলাফল সর্বদা মারাত্মক না হলেও এর প্রভাব নির্ভর করে কারও জন্মছকে এই দুই গ্রহ কতটা ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থানে থাকে, তার উপরে।
শনি ও কেতু সংযোগ সম্পর্কে কিছু তথ্য:
এটা জ্যোতিষশাস্ত্রে বেশ বিরল ঘটনা বলেই একে অনেক বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। তা ছাড়া, শনি এবং কেতুকে ক্ষতিকারক গ্রহ বলেও ধরা হয়। এই কারণে তাদের সংমিশ্রণ এতটা ভয়ের কারণ হয়ে ওঠে। এই গ্রহগুলো সম্পর্কে কিছু তথ্য হল-
শনি ও কেতুর সংযোগের সময়ে শনির অবস্থান শক্তিশালী হলে তার ইতিবাচক প্রভাব:
প্রথমত, কোনও ব্যক্তির জন্মপত্রিকায় শনি শক্তিশালী ভাবে অবস্থান করছে কি না, তা প্রথমে জেনে নেওয়া ভীষণ ভাবে প্রয়োজন। আর তা জানতে কোন অভিজ্ঞ জ্যোতিষীর পরামর্শ নেওয়া বাঞ্ছনীয়। সে ক্ষেত্রে শনি শক্তিশালী হলে এই সংযোগে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ন্যায় বিচারের গ্রহ শনির প্রভাব বেশি থাকে।
শনি ও কেতুর সংযোগের সময় কেতুর অবস্থান শক্তিশালী হলে তার ইতিবাচক প্রভাব:
ব্যক্তির জন্মছকে কেতুর অবস্থান যখন শক্তিশালী হয়, তখন তা আধ্যাত্মিক জ্ঞান প্রদান করে। এর উপকারিতাগুলি নিম্নরূপ-
শনি কেতু সংযোগের ৪ বিপজ্জনক প্রভাব:
যখন শনি এবং কেতু সমান ভাবে শক্তিশালী, সমান ভাবে পীড়িত বা সমান ভাবে ক্ষতিকারক হয়, তখন তাদের মিলন অনেক দুঃখ নিয়ে আসে। এই দুই গ্রহ প্রকৃতই শত্রু। তারা একে অপরের উপরে কর্তৃত্ব করার চেষ্টা করে। এবং ফলাফল তীব্র বিভ্রান্তিমূলক হয়। শনি তার পথে নিজস্ব কাজ করার চেষ্টা করে। আর কেতু, যেহেতু মস্তকবিহীন, সে বুঝতেই পারে না কখন থামার সঠিক সময়। অতএব, ফলাফল চরম হয়। শনি এবং কেতু যুক্ত হওয়ার বিপজ্জনক প্রভাবগুলি নিম্নরূপ-
শনি ও কেতু যুক্ত জাতিকারা স্বার্থপরতা ও লোভ দ্বারা চালিত হয়। তারা অন্য লোকেদের অনুভূতির কথা চিন্তা করে না, এমনকি তাদের বাবা-মা, ভাইবোন এবং বন্ধুদের অনুভূতিও নয়। ফলাফল খুবই খারাপ হয়।
১) তারা মূল্যবান এবং সত্যিকারের বন্ধুদের হারায়।
২) কর্মক্ষেত্রে তাদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়।
৩) তাদের নিজস্ব মতামতের বাইরে গিয়ে কিছু মানা তাদের পক্ষে কঠিন হয়ে যায়।
শনি এবং কেতুর ক্রমাগত সংঘর্ষের শক্তি ব্যক্তিদের খুব অস্থির করে তোলে। এই ধরনের লোকেরা বেশির ভাগ সময়ে বিরক্ত এবং রাগান্বিত থাকে। এটি শনি এবং কেতু সংযোগ দ্বারা প্রভাবিত ব্যক্তিদের সঙ্গে কাজ করা ব্যক্তিদের জন্য বিষয়গুলিকে খুব কঠিন করে তোলে। ফলে কর্মক্ষেত্রে সেই ব্যাক্তিদের নাম ও সুনাম কলঙ্কিত হতে থাকে।
১) এরা হয় খুব অলস বা খুব আবেগপ্রবণ। সুতরাং, অতীতে তারা যতই ভাল থাকুক না কেন, পদোন্নতির জন্য তাদের বিবেচনা করা হয় না।
২) এই ধরনের লোকেদের সঙ্গে ব্যবসা করা থেকে মানুষ বিরত থাকে। কারণ এরা বেশ অনির্দেশ্য হয়। তাই ব্যবসার সঙ্গে সংযুক্ত ব্যক্তিদের জন্য শনি ও কেতুর সংযোগ খুবই খারাপ হয়।
শনি ও কেতুর সংযোগের প্রভাবে ব্যক্তিদের অহংবোধ ক্রমশ বড় হতে থাকে, যার ফলাফল মোটেই ভাল হয় না।
১) ঘন ঘন মতবিরোধ, এমনকি কখনও তা হাতাহাতিতেও পৌঁছতে পারে, যা পরবর্তীকালে স্থায়ী বিচ্ছিন্নতার দিকে নিয়ে যেতে পারে।
২) ব্যক্তি খুব নিষ্ঠুর এবং কঠোর প্রকৃতির হয়ে ওঠে।
৩) সন্তানদের প্রতি অজ্ঞতা দাম্পত্য জীবনেও অনেক বড় সমস্যা সৃষ্টি করে।
দ্বাদশ ঘরে শনি ও কেতু একত্রে অবস্থান করলে তা খুবই অশুভ সংমিশ্রণ বলে মনে করা হয়। এটি ব্যক্তিদের খুব দায়িত্বজ্ঞানহীন করে তোলে। এই ধরনের ব্যক্তিরা অযথা অর্থ ব্যয় করে থাকে। খরচ এত বেশি হতে পারে যে এটা শেষ পর্যন্ত বিশাল ঋণের দিকে ব্যক্তিকে পরিচালিত করে।
শনি ও কেতুর সংযোগের নেতিবাচক প্রভাবের জন্য ২ জ্যোতিষশাস্ত্রীয় প্রতিকার:
বিশ্বাস করা হয় যে, শনি এবং কেতু সংযোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের শনির কুপ্রভাব কমাতে রুদ্রাক্ষের মালা ব্যবহার করে শনি বীজমন্ত্র জপ করা উচিত।
ভগবান শিব কেতুর অধিপতি। যেহেতু তিনি মস্তকহীন গ্রহকে নিয়ন্ত্রণ করেন, তাই শিবের উপাসনা কেতুর বিদ্বেষ থেকে রেহাই দিতে পারে।
দেশের প্রখ্যাত জ্যোতিষশাস্ত্রবিদদের অন্যতম ডা: সোহিনী শাস্ত্রী।
ডা: সোহিনী শাস্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগের দূরভাষ নম্বর: +91 91635 32538 / +91 90381 36660
ওয়েবসাইট: sohinisastri.com
ফেসবুক: facebook.com/drsohinisastri
ইউটিউব: youtube.com/@dr.sohinisastribestastrolo2355/
ডিসক্লেইমার: এটি একটি বিজ্ঞাপন প্রতিবেদন এবং বিজ্ঞাপনদাতার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে প্রকাশিত। প্রতিবেদনে প্রকাশিত সমস্ত বক্তব্য / মন্তব্য একান্তই বিজ্ঞাপনদাতার নিজস্ব। এর সঙ্গে আনন্দবাজার অনলাইনের সম্পাদকীয় দফতরের কোনও সম্পর্ক নেই। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে অবশ্যই যাচাই করে নিন।