রত্ন সম্ভারের মধ্যে নীলা, গোমেদ ও ক্যাটস-আই সম্পর্কে সবিস্তার জানালেন রাষ্ট্রপতি পুরষ্কারপ্রাপ্ত জ্যোতিষশাস্ত্রবিদ ডাঃ সোহিনী শাস্ত্রী
দৈনন্দিন জীবনের অসংখ্য শুভ রত্নপাথরের ভাণ্ডারের মধ্যে এমন কত রত্ন আছে, যা আমাদের জীবনকে প্রভাবিত করে। পৃথিবীর ভূত্বকের মধ্যে রয়েছে অসীম রত্নের সম্ভার। এই সকল রত্নের বর্ণালীর বিচ্ছুরণ ও প্রতিফলন ব্যাপক ভাবে আকর্ষণ করে আমাদের দৃষ্টি। এই বিভিন্ন রত্নপাথরের রত্ন সম্ভারের মধ্যে আজ নীলা, গোমেদ ও ক্যাটস-আই সম্পর্কে সবিস্তার জানালেন রাষ্ট্রপতি পুরষ্কারপ্রাপ্ত জ্যোতিষশাস্ত্রবিদ ডাঃ সোহিনী শাস্ত্রী।
রত্ন: নীলা
বৈদিক বিজ্ঞান সব সময়ে রঙিন রত্নের জ্যোতিষশাস্ত্রীয় ক্ষমতায় গভীর বিশ্বাস রাখে। নীল নীলকান্তমণিকে বহুমূল্য রত্ন হিসেবে বিবেচিত করা যায়। হিন্দিতে এই রত্নকে নীলম বলা হয়। এটি নবরত্ন পরিবারের এক মূল্যবান সদস্য। একে নীলা পোখরাজও বলা হয়ে থাকে। এই রহস্যময় পাথর সবার জন্য নয়। খুব সাবধানতার সঙ্গে বিবেচনা করার পরেই এই পাথর পরা উচিত। সঠিক বিবেচনা না করে এই রত্ন ধারণ করলে এটি পরিধানকারীর জীবনে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। এই রত্ন এক ঐশ্বরিক কবজ রূপে ব্যবহৃত হয়। এর থেকে যে আভা বেরোয়, তা ইতিবাচকতা নিয়ে এসে এক জনের জীবন থেকে নেতিবাচকতা দূর করে। জ্যোতিষ রত্নপাথরের মধ্যে এটি সবচেয়ে শক্তিশালী এবং দ্রুততম ফলদায়ী রত্নপাথর। রহস্যময় ক্ষমতার পাশাপাশি অরিজিনাল ব্লু স্যাফায়ার তার আকর্ষণীয় উজ্জ্বল নীল রঙের জন্যও বিখ্যাত।
নীলা পরার উপকারিতা:
নীলার বিভিন্ন জ্যোতিষশাস্ত্রীয় উপকারিতা রয়েছে, সেগুলি হল:
১) নীলা ধারণের মাধ্যমে শনির সাড়ে সাতির সময়কার সমস্যাগুলি থেকে উদ্ধার পাওয়া সম্ভব।
২) শিক্ষার্থী এবং ব্যবসায়ীরা তাঁদের ফোকাস এবং একাগ্রতা উন্নত করতে পারেন।
৩) নীলা সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতাকে উন্নত করে। এটি ব্যক্তির জীবনে বিভ্রান্তি ঘটতে বাধা দেয়।
৪) নেতিবাচকতা দূর করে, ব্যক্তিকে আত্মবিশ্বাসী এবং স্থিতিশীল হতে সাহায্য করে।
৫) ব্যক্তির জীবনে প্রশান্তি নিয়ে আসে।
৬) নীলা এক জন ব্যক্তির আর্থিক পরিস্থিতিকে উন্নত করে।
৭) এটি স্নায়ুঘটিত ব্যাধির চিকিৎসা করতে সাহায্য করে।
নীলা ধারণ করার কিছু নিয়ম:
নীলা সোনা বা রুপোয় ধারণ করা উচিত। শনিবার মধ্যরাত্রে নীলা পরিধান করলে সর্বোত্তম ফলাফল লাভ করা সম্ভব। ডান হাতের মাঝের আঙুলে এটি ধারণ করা শুভ।
ক্যারাট ওজন: যদি ব্যক্তির ওজন ৬০ কেজি হয়, তাহলে ন্যূনতম ৫-ক্যারাট নীলা ধারণের পরামর্শ দেওয়া হয়।
রত্ন: গোমেদ
গোমেদ বা হেসোনাইট হল মূল্যবান, সুন্দর ও মধুর মতো গভীর বাদামী রঙের এক রত্ন। এই রত্ন অ্যালুমিনিয়াম সিলিকেট দিয়ে তৈরি এবং রাসায়নিক ভাবে গারনেট বংশের অন্তর্গত। এটি পরিধানকারীকে অবিরাম ইতিবাচকতা এবং বেশ কয়েকটি জ্যোতিষশাস্ত্রীয় সুবিধা প্রদান করে।
গোমেদ ধারণের উপকারিতা:
১) মনে শান্তি নিয়ে আসে।
২) স্বাস্থ্যের অবস্থার উন্নতি করে।
৩) গ্রহের পরিমাপের ভারসাম্যতা বজায় রাখে।
৪) সৃজনশীলতা এবং আত্মবিশ্বাস নিয়ে আসে।
৫) জীবনের পাঁচটি ফল লাভ করতে সাহায্য করে।
৬) জীবনের শক্তি ও অবস্থানকে উন্নত করতে সাহায্য করে।
৭) সুখী দাম্পত্য জীবন লাভ করতে সাহায্য করে।
কাদের গোমেদ ধারণ করা উচিত?
গোমেদ জানুয়ারির জাতকদের জন্মপাথর। তবে এই পাথর মেষ এবং কুম্ভ রাশির ব্যক্তিদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। বিনোদন শিল্প যেমন সঙ্গীত, নৃত্য, অভিনয়, চলচ্চিত্র প্রযোজনা, সংবাদপত্র এবং শিল্পীরা গোমেদ ধারণ করলে শুভ। রাজনীতি, জনসংযোগ, ইভেন্ট ম্যানেজার এবং কমিশন বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত ব্যাক্তিরা গোমেদ ধারণে সুবিধা লাভ করবেন। এটি ব্যক্তিদের শক্তি, প্রভাব, সম্পদ এবং সাফল্য বৃদ্ধি করে। পাবলিক স্পিকার, আইনজীবী এবং বিজ্ঞানীরা গোমেদ পরিধান করে বিশাল উপকার লাভ করেন। দুর্বল রাহুর ব্যক্তিরা গোমেদ ধারণ করে রাহুর ক্ষতিকারক প্রভাবে উপশম পাবেন। এ ছাড়া যাঁরা অভিশাপে আক্রান্ত, তাঁদের জন্যও এই পাথর অত্যন্ত উপকারী।
গোমেদ কাদের ধারণ করা উচিত নয়?
যাদের জন্মের তালিকায় দুর্বল রাহু, বা রাহুর বিরূপ প্রভাব রয়েছে, সেই সকল ব্যক্তিদের গোমেদ ধারণ এড়িয়ে চলা উচিত। এ ছাড়া রাহুকে রাক্ষস দেবতা হিসাবে বিবেচনা করা হয় বলে অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের কখনওই এই পাথর ধারণ করা উচিত নয়।
কখন, কোথায়, কী ভাবে এবং কী ধরনের গোমেদ পরা উচিত?
রত্ন: ক্যাটস-আই
ক্যাটস আই রত্ন ক্রাইসোবেরিল পরিবারের অন্তর্গত, যা বৈজ্ঞানিক ভাবে বেরিলিয়াম অ্যালুমিনেট নামেও পরিচিত। এই রত্নপাথরের নাম গ্রিক শব্দ “Chryso” থেকে এসেছে, যার অর্থ গোল্ডেন এবং ‘বেরিল’, যার অর্থ সবুজ। এই রত্ন অন্যদের থেকে খুব আলাদা, কারণ এটা জুড়ে হালকা সবুজ আলোর একটা ব্যান্ড দেখা যায়। এই বিচ্ছুরণ এই রত্নের সৌন্দর্যকে আরও বাড়িয়ে দেয়।
কেন এই রত্ন পাথরকে ক্যাটস আই রত্ন বলা হয়?
এমন নামের একটি কারণ হল এই রত্ন দেখতে বিড়ালের চোখের মতো। এই রত্নের অনেক জ্যোতিষশাস্ত্রীয় উপকারিতাও রয়েছে। এটি এক জন ব্যক্তিকে সুস্থ করতে সাহায্য করে এবং মস্তিষ্কের শক্তি বাড়াতেও সাহায্য করে। ক্যাটস আই এক আকর্ষণীয় রত্নপাথর, যার সুন্দর চেহারা এবং সেই সঙ্গে গুপ্ত ক্ষমতা রয়েছে, যা সবাইকে আনন্দ দেয়। রাহু এবং কেতুর ক্ষতিকারক প্রভাবের মুখোমুখি হওয়া ব্যক্তিকে ক্যাটস আই বিপদ থেকে উদ্ধার করতে সাহায্য করে।
ক্যাটস আই পরার উপকারিতা:
ক্যাটস আই স্টোন পরার অসংখ্য উপকারিতা রয়েছে। এর মধ্যে কিছু, নীচে তালিকাভুক্ত করা হল:
১) যাঁরা অনুমানমূলক কার্যকলাপ এবং বিনিয়োগের সঙ্গে যুক্ত, তাঁদের সৌভাগ্য বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
২) এই রত্ন দীর্ঘকাল ধরে আটকে থাকা যে কোনও পেশাদার কাজকে সহজ করতে সহায়তা করে। হারানো সম্পদ বা আটকে থাকা অর্থ ফিরিয়ে আনতেও সাহায্য করে।
৩) ক্যাটস আই নিজের কাছে রাখলে তা আধ্যাত্মিক সুরক্ষা পেতে সাহায্য করে। এই পাথর কুনজরকেও দূরে রাখে।
8) ক্যাটস আই আধ্যাত্মিক এবং ধর্মীয় প্রবণতা এবং জ্ঞানার্জনের সুবিধা দেয়।
৫) জনপ্রিয় বিশ্বাস অনুসারে, ক্যাটস আই শারীরিক অসুস্থতা নিরাময়, অস্বাস্থ্যকর অভ্যাস, বিষণ্ণতা থেকে পুনরুদ্ধার এবং এমনকি পক্ষাঘাত এবং ক্যানসারের মতো রোগের চিকিৎসার জন্য পরিচিত।
৬) ক্যাটস আই রত্ন মানসিক শান্তি স্থাপন, স্মৃতি সংক্রান্ত সমস্যা এবং উদ্বেগ এবং চাপ থেকে মুক্তি পেতেও ব্যবহৃত হয়।
ক্যাটস আই কী ভাবে ধারণ করা উচিত?
আংটি পরার আগে নিশ্চিত হয়ে নিন যে এটি খাঁটি রত্ন। এর ওজন ৩ থেকে ৬ ক্যারাট হওয়া প্রয়োজন। এটি রুপোর আংটিতে ধারণ করা উচিত, যা মঙ্গলবার সকালে পরতে পারেন। পরার আগে এক রাত এই আংটি মধু এবং দুধে ১০ থেকে ২০ মিনিটের মতো ডুবিয়ে রাখতে হবে।
কারা ক্যাটস আই ধারণ করতে পারে?
বৃষ, মিথুন, মকর, কুম্ভ, তুলা এবং কন্যা রাশির জ্যোতিষশাস্ত্রীয় চিহ্নের ব্যক্তিরা এই রত্ন পরতে পারেন। ‘কালসর্প দোষ’-এ দুষ্ট ব্যক্তি ও কেতুর মহাদশা মোকাবিলা করতে এই রত্ন ধারণ করা খুবই সাহায্যকারী হিসাবে বিবেচিত হয়।
অভিজ্ঞ জ্যোতিষীর কাছে জন্ম তালিকা না দেখিয়ে কোনও রত্নই ধারণ করা উচিত নয়। সকল রত্নই চরম সতর্কতার সঙ্গে ব্যবহার করা বাঞ্ছনীয়।
দেশের প্রখ্যাত জ্যোতিষশাস্ত্রবিদদের অন্যতম ডা: সোহিনী শাস্ত্রী।
ডা: সোহিনী শাস্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগের দূরভাষ নম্বর: +91 91635 32538 / +91 90381 36660
ওয়েবসাইট: sohinisastri.com
ফেসবুক: facebook.com/drsohinisastri
ইউটিউব: youtube.com/@dr.sohinisastribestastrolo2355/
ডিসক্লেইমার: এটি একটি বিজ্ঞাপন প্রতিবেদন এবং বিজ্ঞাপনদাতার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে প্রকাশিত। প্রতিবেদনে প্রকাশিত সমস্ত বক্তব্য / মন্তব্য একান্তই বিজ্ঞাপনদাতার নিজস্ব। এর সঙ্গে আনন্দবাজার অনলাইনের সম্পাদকীয় দফতরের কোনও সম্পর্ক নেই। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে অবশ্যই যাচাই করে নিন।