Sri Moni Bhaskar

মন্ত্রোচ্চারণ তো করেন, কিন্তু কোন মন্ত্রের কী মানে, ভুল মন্ত্রোচ্চারণেই বা কী হয়, জানেন কি?

সঠিক মন্ত্রের নির্বাচন এবং সঠিক উচ্চারণ আমাদের শারীরিক, মানসিক, ভৌতিক এবং আধ্যাত্মিক বিকাশে ভারসাম্য স্থাপন করতে সাহায্য করে।

এবিপি ডিজিটাল ব্র্যান্ড স্টুডিয়ো

শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১১:২৯
Share:

ভুল মন্ত্রোচ্চারণে কী হয়, জানেন?

বিভিন্ন শক্তি বা উর্জাকে আহ্বান জানানো হয় মন্ত্রের মাধ্যমে। মন্ত্র শাস্ত্রকে এক পূর্ণবিকশিত আধ্যাত্মিক বিজ্ঞানের সংজ্ঞা দেওয়া যেতে পারে। সঠিক মন্ত্রের নির্বাচন এবং সঠিক উচ্চারণ আমাদের শারীরিক, মানসিক, ভৌতিক এবং আধ্যাত্মিক বিকাশে ভারসাম্য স্থাপন করতে সাহায্য করে। পূর্ণ বৈদিক রীতি অনুযায়ী পূর্ণ শুদ্ধতা এবং শ্রদ্ধার সঙ্গে মন্ত্র উচ্চারিত হলে তা থেকে নির্গত তরঙ্গ মন্ত্রের সঙ্গে সম্পর্কিত শক্তি বা উর্জার সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করে। এ দেশের ঋষি-মুনিরা এই তরঙ্গ সম্পর্কে ওয়াকিবহাল ছিলেন। এই তরঙ্গের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করতেই তাঁরা বিভিন্ন মন্ত্রের খোঁজ করেন। মন্ত্রের সঠিক উচ্চারণ মানব শরীরে ইতিবাচক বা ধনাত্মক শক্তির প্রবাহ বাড়ায় এবং মানব শরীর থেকে নির্গত তরঙ্গ সম্পর্কযুক্ত দৈবীয় তরঙ্গের সংস্পর্শে এসে মানব মস্তিষ্কে ইতিবাচক প্রভাব বিস্তার করে। তবে শব্দের ক্রমে কোনও ভুল থাকলে তার জেরে ঋণাত্মক বা নেতিবাচক প্রবাহও হতে পারে। বিভিন্ন যন্ত্রকে সক্রিয় এবং শক্তিশালী করার ক্ষমতাও মন্ত্রের মধ্যেই আছে। মন্ত্র ছাড়া যন্ত্র শুধুমাত্র আকার রূপেই থেকে যায়।

ভারতীয় বৈদিক সাহিত্যে, শাস্ত্রে প্রত্যেক মন্ত্রে কত অক্ষর থাকবে, তার নির্বাচন মন্ত্রের ফল অনুযায়ী করা হয়েছে। মন্ত্রে থাকা অক্ষর অনুয়ায়ী ফলের পরিবর্তন হয়। উদাহরণস্বরূপ— ‘ওম নমঃ শিবায়’, এই মন্ত্রে ৬টি অক্ষর থাকায় তা ষড়াক্ষরী মন্ত্র। এতে ‘ওম’ সংযুক্ত না থাকলে তা পঞ্চাক্ষরী মন্ত্র হবে। এ ভাবে ‘ওম নমঃ নারায়ণায়’ অষ্টাক্ষরী মন্ত্র। ‘ওম নমঃ ভগবতে বাসুদেবায়’ দ্বাদশাক্ষরী মন্ত্র। মন্ত্রে ব্যবহৃত অক্ষরের সংখ্যার আধারে মন্ত্রের উচিত নির্বাচন করে সম্পর্কযুক্ত দেব-দেবীর বিভিন্ন উদ্দেশ্য পূরণের আহ্বান জানানো হয়।

মন্ত্র বস্তুত দুই অক্ষরের শব্দ হলেও এর মধ্যে অনেক অর্থের ব্যঞ্জনা রয়েছে। অল্প কথায় মন্ত্র কী, তা বলা খুব শক্ত। বেদের সুক্তির ছন্দ থেকে শুরু করে দেব-দেবীর স্তুতি, আরাধনা, যাগ-যজ্ঞ ইত্যাদি বিশেষ ভাবে ব্যবহৃত নির্দিষ্ট শব্দ-বিধান পর্যন্ত সব কিছুকেই মন্ত্র বলে অভিহিত করা চলে। অন্য দিকে, যে শক্তি বা প্রেরণা ধর্ম এবং মোক্ষ প্রাপ্তির সহায়ক, সেই শক্তিকেও মন্ত্র বলা যেতে পারে। অর্থাৎ, কোনও বিশেষ বর্ণসমূহ যদি বিশেষ ক্ষমতা প্রদর্শন করে বা প্রভাব দেখিয়ে কোনও সাধক অথবা প্রতি সাধকের বাঞ্ছিত ফল লাভের সহায়ক হয়, তা হলে সেই সব শব্দকেও মন্ত্র বলা হয়। ধ্বনি বিশেষজ্ঞেরা এই ধ্বনিকে বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের সংক্ষিপ্ত রূপ বলেই চিহ্নিত করেছেন। ধ্বনির মধ্যে লুকিয়ে থাকা বিচিত্র শক্তি, সৃজন (প্রসার) এবং প্রলয়ের (সংহার) সময়ে তা সূক্ষ্ম হয়। বিশ্বাস করা কঠিন হলেও এটা সত্যি যে, ধ্বনি বিশেষের প্রভাব মানুষ, পশু-পাখি, জীব-জন্তু, এমনকি গাছ-গাছালির উপরেও পড়ে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ‘ওঁ’ ধ্বনি প্রাণিক শক্তিকে বোঝায়, ‘ঐং’ ধ্বনি শব্দের স্মৃতিশক্তিকে প্রকাশ করে, ‘হ্রীম’ ধ্বনির অর্থ সৌর শক্তি, চন্দ্রের শক্তিকে প্রকাশ ‘শ্রীম’ ধ্বনি, বৈদ্যুতিন শক্তিকে প্রকাশ করে ‘ক্রীম’ ধ্বনি। অন্য দিকে, ‘ক্লীম’ ধ্বনির অর্থ চৌম্বকীয় শক্তি। অগ্নির শক্তি হল ‘হুম’। কোনও বাধা বিপত্তি থামিয়ে দেওয়ার শক্তি নিহিত আছে ‘হ্লীম’ ধ্বনিতে, স্থিরীকৃত করার শক্তি হল ‘স্ত্রীম’ ধ্বনি। ঝড়-ঝঞ্ঝাকে অতিক্রম করার শক্তি হল ‘ত্রীম’। এর প্রত্যেকটাই একটা বড় মন্ত্রের বীজ।

গ্রহগত কিংবা বাস্তুগত কিছু কিছু সমস্যায় সাহায্য লাভের জন্যও বিভিন্ন মন্ত্র উপযোগী। যেমন, কোনও ব্যক্তির রাশিচক্রে চন্দ্র খারাপ হলে তিনি 'খং' মন্ত্রের জপ করতে পারেন। বাস্তুর উত্তর-পশ্চিম অংশের শক্তি (এনার্জি) দূষিত হলে 'কং' মন্ত্র সহায়ক হতে পারে। কার্যে সিদ্ধি এবং মনোযোগ পেতে হলে ‘গং’ মন্ত্রের জপ করা যেতে পারে। বাণী দোষ (বাজে কথা বলা বা অশুদ্ধ বাক্য প্রয়োগ)-এর ক্ষেত্রে সহায়ক হতে পারে ‘শম’ মন্ত্র। মনের ভয় নাশ করার জন্য ‘সৌম’ মন্ত্র। বিপরীত পরিস্থিতিতে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ‘হৌম’ মন্ত্র। বাস্তুর পশ্চিম দিকে শক্তি দূষিত হলে ‘দ্রাম’ মন্ত্র প্রয়োগ করা যেতে পারে।

‌‌মন্ত্রের উদ্ভব ও বিকাশ

এ বার খুব অল্প কথায় মন্ত্রের উদ্ভব ও বিকাশ সম্পর্কে আলোচনা করা যাক। খুব স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন ওঠে যে, মন্ত্রের উদ্ভব কবে হয়েছিল এবং এই মন্ত্রসমূহের রচনাকারই বা কারা? মনে করা হয়, প্রাচীন কালের মুনি-ঋষিরাই মন্ত্রের রচয়িতা। অন্য দিকে, ঋক বেদকে যদি সনাতনীর প্রাচীনতম গ্রন্থ বলে মেনে নেওয়া হয়, তা হলে এ কথা বলা যেতেই পারে যে, যে হেতু এতে উল্লেখ করা সুক্তি ইত্যাদি মন্ত্রেরই বিকশিত রূপ, তাই মন্ত্রের রচনাকাল বেদেরও আগে। শুধু ঋক বেদই নয়, যজু, সাম বা অথর্ব বেদ-সহ প্রাচীন ভারতীয় সনাতনী গ্রন্থগুলো মন্ত্রের আখর। অন্যান্য গ্রন্থ, যেমন সংহিতা, আরণ্যক, উপনিষদ নিঃসন্দেহে বেদ পরবর্তী রচনা। তাই এগুলোতে মন্ত্রের উন্নত রূপ পাওয়া আশ্চর্যের কিছু নয়। বিশ্বে এমন কোনও দেশ বা জাতি নেই, যেখানে মন্ত্রের চর্চা হয় না অথবা সেখানকার মানুষের একাংশ এ বিষয়ে জ্ঞান রাখেন না। মন্ত্র শক্তির বিষয়ে আরও তথ্য পরবর্তী পর্বগুলোতে দেওয়া হবে।

এই বিষয়ে আরও তথ্য পেতে আপনারা ফেসবুকে SRI MONI BHASKAR পেজ এবং ইউটিউবে DREAM DESTINY চ্যানেল ফলো করতে পারেন। জীবনের বিভিন্ন সমস্যায়, প্রয়োজনে জ্যোতিষীয় এবং বাস্তুগত পরামর্শও নিতে পারেন। অনেক সময়ে Symbol Meditation-ও (প্রয়োজনে নির্দিষ্ট মুদ্রা সহযোগে) আপনাদের সহায়ক হতে পারে।

Guided Symbol Meditation এবং বাস্তুশাস্ত্র-জ্যোতিষ বিষয়ক পরামর্শ পেতে WhatsApp - 86173 72545 / 98306 83986 (Payable & Non-Refundable).

ডিসক্লেইমার: এটি একটি বিজ্ঞাপন প্রতিবেদন এবং বিজ্ঞাপনদাতার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে প্রকাশিত। প্রতিবেদনে প্রকাশিত সমস্ত বক্তব্য / মন্তব্য একান্তই বিজ্ঞাপনদাতার নিজস্ব। এর সঙ্গে আনন্দবাজার অনলাইনের সম্পাদকীয় দফতরের কোনও সম্পর্ক নেই। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে অবশ্যই যাচাই করে নিন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন