বাস্তুশাস্ত্র নিয়ে আলোচনায় শ্রী মণি ভাস্কর
যে কোনও কার্যে সাফল্য পেতে ভাবমূর্তি নির্মাণ, সমর্থন আদায় করার শক্তি, সঠিক দক্ষতার সঙ্গে চ্যালেঞ্জকে সরল করা বা প্রতিহত করা, উদারতা বা লেট গো করার ক্ষমতা, সামাজিক যোগাযোগ এবং সুরক্ষাবলয় থাকা প্রয়োজন। কিন্তু প্রকৃতির নিয়ম, কিছু প্রত্যাশা করলেই সেখানে প্রতিরোধ আসবে। এই প্রতিরোধকে সম্ভাবনা বা সাফল্যের দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য অটুট সংকল্প এবং সঠিক মূল্যায়ন প্রয়োজন। মৃত্যুর পূর্বে জীবনের, অসুস্থতার পূর্বে সুস্থতার, ব্যস্ততার পূর্বে অবসরের, বার্দ্ধক্যের পূর্বে যৌবনের, দারিদ্রের পূর্বে স্বচ্ছলতার মূল্যায়ন এবং এমন সংকল্প যা সম্ভাবনা সৃষ্টি করবে। সেখান থেকেই পরিবর্তন আসবে। পরিবর্তন থেকে আসবে প্রত্যাবর্তন। এভাবেই শক্তি স্রোতের নির্মাণ হয়। এই শক্তি আসে আমাদের মন থেকে। আমাদের এই মন বা হিউম্যান মাইন্ডকে মূলত ১৬ ধরণের বলা হলেও, মাইন্ড কিন্তু ৮৪ হাজার ধরণের। তবে সেদিকে না গিয়ে মূল ১৬টি মাইন্ডের কথাই এখানে বলছি------
১. রিফিউজিং মাইন্ড
২. কনফিউজড মাইন্ড
৩. ইমোশনাল মাইন্ড
৪. কার্মিক মাইন্ড
৫. স্ট্রেসড মাইন্ড
৬. অ্যাগ্রেসিভ মাইন্ড
৭. আপসেট মাইন্ড
৮. এফিসিয়েন্ট মাইন্ড
৯. ওয়াইজ মাইন্ড
১০. রেসপন্সিবল মাইন্ড
১১. মেইন্টেনিং মাইন্ড
১২. প্রসেসিং মাইন্ড
১৩. অ্যাকসেপক্টিং মাইন্ড
১৪. কনসিডারিং মাইন্ড
১৫. সিকিং মাইন্ড
১৬. কেয়ারিং মাইন্ড
এই ১৬টি মাইন্ডের আবার মূল ৩ ধরণের কার্যকরিতা রয়েছে----
১. এক্সামিনিং
২. ফিলিং
৩. ডিজায়ার
এই কার্যকারিতা নির্ভর করে আমাদের অতীতের অভিজ্ঞতা, নিজস্ব বিশ্বাস, ধ্যানধারণা, জীবন থেকে সংগৃহীত তথ্য, তার নিরিখে তৈরি হওয়া ইনটিউশন বা অন্তর্দৃষ্টি এবং কার্মিক ট্র্যাপের উপর। যে ১৬ ধরণের মাইন্ডের কথা এখানে উল্লেখ করা হয়েছে তার মধ্যে অন্যতম কার্মিক মাইন্ড। যার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে অমোঘ কার্মিক ট্র্যাপ। আমাদের অভিভাবক এবং পূর্বপুরুষ যেমন হন, তাঁদের মানসিক বৈশিষ্ট্য আমাদের অন্তরকোষে প্রবিষ্ট থাকে। পূর্বপুরুষের কোনও নেতিবাচক মানসিক বৈশিষ্ট্যের বীজ আমাদের অন্তরকোষে থেকে গেলে, সেখান থেকে তৈরি হয় নেগেটিভ কার্মিক মাইন্ড যা আমাদের জীবনে নানাবিধ বিপত্তি ডেকে আনে। এর থেকে বাঁচার উপায় কি? বাঁচার উপায় জানতে গেলে বুঝতে হবে আমাদের এই মাইন্ড কোথা থেকে তথ্য সংগ্রহ করে। এক্ষেত্রে অন্যতম প্রধান সংগ্রাহক অবশ্যই চক্ষু-কর্ণ-নাসিকা-জ্বিহা-ত্বক অর্থাৎ পঞ্চ ইন্দ্রিয়। আমাদের চোখে কোন দৃশ্যপট বন্দি হল, জিভ কোন স্বাদ গ্রহণ করল, কোন ঘ্রাণ পেলাম নাকের মাধ্যমে, কানে কী শুনলাম এবং ত্বক কী স্পর্শ করল, এই রূপ-রস-গন্ধ-শব্দ-স্পর্শ যথাক্রমে অগ্নি-জল-ক্ষিতি-আকাশ-বায়ু এই পঞ্চতত্ত্বের মাধ্যমে আসে। এই পঞ্চতত্ত্বের কার্যসম্পাদনের জন্য যেমন পঞ্চ ইন্দ্রিয় রয়েছে তেমনই রয়েছে পঞ্চশক্তি......
পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে গৃহীত এই পঞ্চতত্ত্ব বা প্রকারান্তরে পঞ্চশক্তির পরিমাণই স্থির করে আমাদের চিন্তাভঙ্গী বা মননের (মাইন্ড) অভিঘাত কেমন হবে। কখন রিফিউজিং হবে, কখন ওয়াইজ হবে, কখন স্ট্রেসড হবে, কখন সিকিং হবে বা কখন কেয়ারিং হবে। মাইন্ড অনেকটা যেন কারখানার মতো, যে মেন্টাল ফ্যাক্টরি নানাবিধ ঘটনা তৈরি করে, যার প্রতিক্রিয়া একেক রকম। যেমন, আমাদের হোয়াটস্অ্যাপে যখন কোনও কড়া বা স্ট্রেসড মেসেজ আসে আমরা কী করতে পারি? যে ব্যক্তি সেই কড়া মেসেজটি পাঠিয়েছেন, তাঁকে বুঝিয়ে স্ট্রেস রিলিজ করাতে পারি, তাঁর মানসিক কষ্টের অভিমুখ ঘুরিয়ে দিতে পারি, তাঁকে ক্ষমা করে দিতে পারি বা সেই ব্যক্তিতে ব্লক করতেও পারি। অর্থাৎ একটি ঘটনার প্রেক্ষিতে নানান প্রতিক্রিয়া সংরক্ষিত থাকে আমাদের মেন্টাল ফ্যাক্টরিতে। কিন্তু একবার ব্লক করার পরেও সেই ব্যক্তি যেমন আবারও অন্য কোনও হোয়াটস্অ্যাপ নম্বর থেকে কড়া, আপত্তিজনক মেসেজ পাঠাতে পারে, তেমনই প্রতিক্রিয়ার পরেও মেন্টাল ফ্যাক্টরি নানান ঘটনা তৈরি করতেই থাকে। এই পদ্ধতিতে সমাধান মেলে না।
তাহলে উপায়? ভাবতে হবে, কেন এমনটা ঘটছে। এই মেসেজ বা মেন্টাল ফ্যাক্টরিতে তৈরি বিবিধ পরিস্থিতি আসলে এক একটি এনার্জি(শক্তি), যা আমরা ইন্দ্রিয় দ্বারা গ্রহণ বা প্রয়োগ করেছি। কড়া মেসেজ রূপে যে নেগেটিভ এনার্জি আমাদের কাছে আসছে ইতিপূর্বে আমরা নিশ্চয়ই সেই ধরণের নেগেটিভ এনার্জি কাউকে দিয়েছি। হতে পারে তা ১ বছর আগে, ১০ বছর আগে, ১০০ বছর আগে বা পিতৃপুরুষের কৃতকর্মের কোনও এনার্জিও এভাবে আমাদের কাছে আসতে পারে! তাই ব্লক করে, চুপ থেকে বা পরিস্থিতি এড়িয়ে গিয়ে সমাধান মিলবে না।
সমাধানসূত্র
ঈশ্বরের প্রতি কৃতজ্ঞ চিত্তে তিনি যা দিচ্ছেন তাতে সম্পূর্ণ সন্তুোষপ্রকাশ, নিরোগ এবং পবিত্র দেহ-মন, আচরণের শুদ্ধতা, অবিচলিত চিত্ত, বাক্যের মাধুর্য, সঠিক চিন্তাশক্তি ও কর্ম সম্পাদন, সংযত ব্যবহার, ক্রোধ নিয়ন্ত্রণ, দৃঢ় মনোভাব, মনঃসংযোগ, বিপাকে-অশান্তিতে-দুর্ঘটনায় ধৈর্যধারণ, প্রতিশোধ নেওয়ার সুযোগ থাকলেও ক্ষমার মনোবৃত্তি, এই বিপত্তির সমাধান আনতে পারে। কিন্তু সমাধানের পথ থাকা সত্ত্বেও আমরা কেন সেই পথের পথিক হতে পারছি না? কেন আমাদের কার্মিক বা রিফিউজিং মাইন্ড, এফিসিয়েন্ট বা ওয়াইজ মাইন্ডে রূপান্তরিত হচ্ছে না? মজবুত চিন্তা, সুনিপুণ পরিকল্পনা এবং ভবিষ্যতের সূক্ষ্মচিন্তার অভাব ঘটছে কেন? নতুন সুযোগ কেন তৈরি করতে পারছি না? কেন ব্যবসায় মুনাফা আসছে না, কর্মচারীরা কাজ করছে না, লো পারফরম্যান্স, ব্যাঙ্ক ব্যালান্স কমছে, নিজের মাথা কাজ করছে না, খরচ বাড়ছে, প্রতিযোগিতা বাড়ছে, সঠিক সময়ে প্রমোশন, ইনক্রিমেন্ট হচ্ছে না? সম্মান নেই, বাড়িতে অশান্তি, সন্তান অবাধ্য কেন?
কারণ আমাদের মন অধিকাংশ সময়ই বিষাদগ্রস্ত (এক্ষেত্রে নেগেটিভ এনার্জি দ্বারা আক্রান্ত) থাকে। তাই ওয়াইজ মাইন্ড বা এফিসিয়েন্ট মাইন্ড পেতে গেলে আমাদের মন-শরীর এবং বাস্তুতে পঞ্চতত্ত্ব তথা পঞ্চশক্তির ভারসাম্য রক্ষা করতেই হবে। যেভাবে সঠিক অ্যান্টিভাইরাস বা ফিল্টার অবাঞ্ছিত উপদ্রব থেকে আমাদের কম্পিউটার সিস্টেমকে রক্ষা করে, তেমনই মন-শরীর এবং বাস্তুতে পঞ্চশক্তির ভারসাম্য আমাদের জীবনকে অবাঞ্ছিত উপদ্রব থেকে রক্ষা করে, কষ্ট-যন্ত্রণা লাঘব হতে থাকে। বাস্তুতে বিভিন্ন প্রয়োগের মাধ্যমে এই ভারসাম্য ঠিক করা সম্ভব। পাশাপাশি আমাদের জন্মতারিখের ভূমিকাও এক্ষেত্রে অনস্বীকার্য। যাদের জন্মতারিখে ৩, ৪ এবং ৮ নেই তাঁরা সহজে সমর্থন আদায় করতে পারেন না। কেন তা জানতে, পড়তে থাকুন পরবর্তী পর্ব.....
Guided Meditation এবং বাস্তু বিষয়ক পরামর্শ পেতে WhatsApp - 86173 72545/98306 83986 (Payable & Non-Refundable)
ডিসক্লেইমার: এটি একটি বিজ্ঞাপন প্রতিবেদন এবং বিজ্ঞাপনদাতার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে প্রকাশিত। প্রতিবেদনে প্রকাশিত সমস্ত বক্তব্য / মন্তব্য একান্তই বিজ্ঞাপনদাতার নিজস্ব। এর সঙ্গে আনন্দবাজার অনলাইনের সম্পাদকীয় দফতরের কোনও সম্পর্ক নেই। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে অবশ্যই যাচাই করে নিন।