প্রার্থনা আসলে কী?
"আমারে তুমি করিবে ত্রাণ এ নহে মোর প্রার্থনা,তরিতে পারি শকতি যেন রয়। আমার ভার লাঘব করি নাই-বা দিলে সান্ত্বনা, বহিতে পারি এমনি যেন হয়।" — রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
পরমপ্রভু-পরমেশ্বরের কাছে একান্ত প্রার্থনা মানে, তাঁর সাথে নিবিড় পারস্পরিক যোগসাধন। তার্কিক মন, কখনও কখনও বেয়াড়া প্রশ্ন ছুঁড়ে বসে, প্রার্থনা আসলে কী? ব্রহ্মাণ্ডের রক্ষণাবেক্ষণকারী পরমেশ্বরের কাছে কাঙ্খিত যাচনা কী ভাবে পৌঁছে দেওয়া যায়? এই প্রসঙ্গেই আজকের এই প্রতিবেদন।
বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থ, প্রাচীন শাস্ত্র অধ্যয়ন করে এবং একাধিক গুরুর সান্নিধ্যে এসে আমি উপলব্ধি করেছি ৪ ধরনের প্রার্থনা হয়। উপাসনা, মিনতি, ধন্যবাদ জ্ঞাপন এবং অনুতাপ-পরিতাপের মাধ্যমে অনুরোধ। প্রার্থনা মানে, আমাদের প্রেমময় পরমপ্রভুর সঙ্গে মনে মনে কথা বলা, এই আরাধনা আদতে ঈশ্বরের কাছে আধ্যাত্মিক আবেদন। এই পৃথিবীতে যেমন আমাদের পিতা-মাতা আমাদের কথা শোনেন, ঠিক তেমনই অমরামর জগতে সর্ব শক্তিমান ঈশ্বর আমাদের প্রার্থনা শোনেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রে চিন্তার মাধ্যমে, আধ্যাত্মিক অনুভূতির মাধ্যমে, ধর্মগ্রন্থে উত্তর প্রদানের মাধ্যমে, অন্যান্যদের কর্ম সম্পাদনের মাধ্যমে বা পরিস্থিতি নির্মাণের মাধ্যমে সেই প্রার্থনার উত্তরও তিনি দেন।
প্রার্থনার সাহায্যে, পরমাত্মার ব্রহ্মাণ্ডীয় শক্তি(উর্জা/স্পিরিট) প্রার্থনাকারীর হৃদয়ে সঞ্চারিত হয়ে একটি সঠিক নির্দেশিত ক্ষেপনাস্ত্রের (মিসাইল) মতো সঠিক অর্থপূর্ণ লক্ষ্য বিদ্ধ করতে পারে। আমি দেখেছি, ধারাবাহিক প্রার্থনার মাধ্যমে আমাদের জীবন এবং পরিস্থিতিতে ঈশ্বরের অকরুণ আশীর্বাদ, পরম শক্তির প্রকাশ রূপে বর্ষিত হয়। ঠিক যেভাবে, আতসকাচের সঠিক ফোকাসের সাহায্যে সূর্য রশ্মিকে একটি বিন্দুতে কেন্দ্রীভূত করে কাগজ পুড়িয়ে ফেলা যায়, সেভাবেই সঠিক কেন্দ্রীভূত প্রার্থনা আমাদের সমস্যাগুলি ভস্মীভূত করে দিতে পারে। প্রার্থনার কার্যকারিতা সম্পর্কে সন্দিহান হতে গিয়ে প্রায়শই আমরা এর শক্তিকে অবহেলা করি। আমরা জানতেও পারি না, কী ভাবে প্রত্যেকদিন একটি নির্দিষ্ট সময়ের প্রার্থনা, আমাদের চারপাশে আধ্যাত্মিকতার অগ্নিবলয় প্রজ্জ্বলিত করে। পরমপ্রভু চান, দৈনন্দিন জীবনে আমরা তাঁকে আমন্ত্রণ জানাই, তাঁর কাছে আত্মসমর্পণ করি, তাঁর আশীর্বাদ চাই। তাঁর সঙ্গে অন্তরে কথা বলা এবং শান্ত হয়ে একাগ্র চিত্তে তাঁকে অনুধাবন করা, এর নামই হল প্রার্থনা। সজাগ মন এবং কৃতজ্ঞ হৃদয় নিয়ে যখন আমরা প্রার্থনা করি, একমাত্র তখনই তাঁকে অনুধাবনের ক্ষমতা তৈরি হয়।
প্রার্থনা বিষয়ে অধ্যয়ন করতে গিয়ে আমি দেখেছি, নির্দিষ্ট সময়ের পর প্রেমময় প্রভুর বার্তা দ্রুত মনোমস্তিষ্কে ছড়িয়ে পড়ে এবং প্রকৃতির বুকে সসম্মানে তা গৃহীত হয়। আমরা প্রত্যেকেই সেই পরমপ্রভুর বর্দ্ধিত অংশ, প্রতি মূহূর্তে কঠিন পরীক্ষা দেওয়ার জন্যই আমাদেরকে ইহজগতে পাঠানো হয়। এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হলে, তাঁর দিকে সম্প্রসারণ করতেই হবে, আমাদের তাঁর দিকেই অগ্রসর হতে হবে, তবেই তো পরমপিতা ও তাঁর সন্তানের আত্মিক বৃত্ত পূর্ণ হবে! তিনি পরম দয়ালু, রাজার রাজা, রাজত্বের একমাত্র মালিক, সর্বোচ্চ, সৃষ্টিকর্তা, একমাত্র প্রদানকারী, অবনতকারী, আকৃতি দানকারী, তিনিই প্রসারক, তিনিই হ্রাসকারী, সর্বজ্ঞ। তিনিই সুউচ্চ, সর্বোত্তম, সর্বশ্রেষ্ঠ, সর্বশক্তিমান, চিরঞ্জীবী, পরম আলো, পথপ্রদর্শক, তিনিই বিলম্বকারী, ধ্বংসকারী, অফুরন্ত ভাণ্ডারের অধিকারী, সর্বপ্রথম, সর্বশেষ, অনন্ত, যা কিছু চিরগোপন একমাত্র তিনিই তা জানেন। আমাদের কেবল তাঁর কাছে আত্মসমর্পণ করতে হবে, কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চাইতে হবে।
প্রার্থনা এবং সময়
আমাদের মন যদি সজাগ থাকে এবং আমরা যদি সেই মাস্টারমাইন্ডের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতে পারি, তাহলে আমি লক্ষ্য করেছি ২৪ ঘন্টার মধ্যে এমন কিছু সময় আছে, যে সময়ে প্রার্থনা করলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা মঞ্জুর হয়। যেমন দুপুর ১টা ২৩ মিনিট এবং রাত ১টা ২৩ মিনিট। আবার মধ্যরাত ৩টে ৩৩, ভোর ৪টে ৪৪, ভোর ৫টা ৫৫ এবং সকাল ৬টা ৬ মিনিটে, রাত ৮টা ৮, রাত ৯টা ৯ এবং রাত ১০টা ১০ মিনিটে একাগ্র চিত্তে প্রার্থনা করলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা মঞ্জুর হয়, যদি না সেই প্রার্থনার মধ্যে কোনও প্রচ্ছন্ন বা প্রকট নেতিবাচকতা থাকে। সম্পদ বা সমৃদ্ধির জন্য মধ্যরাত ৩টে ৩৩ মিনিটে প্রার্থনা করা যেতে পারে। দুর্ভাগ্য এবং শত্রুতা দ্বারা পরিবেষ্টিত হলে ভোর ৪টে ৪৪ মিনিটে প্রার্থনা করুন। ব্যবসা বা পেশাদার কেরিয়ারে উন্নতির জন্য ভোর ৫টা ৫৫ মিনিটে প্রার্থনা করুন। বিবাহ জীবনে সমস্যা হলে সকাল ৬টা ৬ মিনিটে প্রার্থনা করা যেতে পারে। পরমপ্রভুর কাছ থেকে সুস্বাস্থ্যের প্রার্থনা করুন রাত ৮টা ৮ মিনিটে। আত্মবিশ্বাসে ঘাটতি, যে কোনও পরিস্থিতিতে ভয় পেয়ে যাচ্ছেন, এমন হলে রাত ৯টা ৯ মিনিটে প্রার্থনা করুন। কর্মজীবনে বিভ্রাট হলে রাত ১০টা ১০ মিনিটে প্রার্থনা করা যেতে পারে। অন্যদিকে দুপুর ১টা ২৩ মিনিট বা রাত ১টা ২৩ মিনিটে আপনি যে কোনও বিষয়ে পরমপিতার কাছে আবেদন জানাতে পারেন প্রার্থনার মাধ্যমে।
Guided Symbol Meditation এবং বাস্তু বিষয়ক পরামর্শ পেতে WhatsApp - 86173 72545 / 98306 83986 (Payable & Non-Refundable)।
ডিসক্লেইমার: এটি একটি বিজ্ঞাপন প্রতিবেদন এবং বিজ্ঞাপনদাতার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে প্রকাশিত। প্রতিবেদনে প্রকাশিত সমস্ত বক্তব্য / মন্তব্য একান্তই বিজ্ঞাপনদাতার নিজস্ব। এর সঙ্গে আনন্দবাজার অনলাইনের সম্পাদকীয় দফতরের কোনও সম্পর্ক নেই। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে অবশ্যই যাচাই করে নিন।