ক্রিটিকাল কেয়ার
কোনও রোগীকে যখন হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়, তখন সেই রোগীর শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত গুরুতর হয়। সেই সময় সংশ্লিষ্ট রোগীর প্রয়োজন হয় সঠিক যত্নের। প্রায় মৃত্যুর থেকে ফিরিয়ে আনার এই কর্মযজ্ঞে প্রয়োজন হয় দক্ষ, প্রশিক্ষিত এবং অভিজ্ঞ মেডিক্যাল টিমের। এমন পরিস্থিতিতে ঠিক কোন কোন বিষয়ের উপরে গুরুত্ব দেওয়া উচিত? এমার্জেন্সি ওয়ার্ডে প্রাথমিক স্তরে কী কী বিষয় নিয়ে পর্যালোচনা করা জরুরি? কী ভাবে কাজ করে এই দলটি? এই সব অজানা প্রশ্নের উত্তর নিয়ে হাজির চিকিৎসক অ্যাপোলো হাসপাতাল কলকাতার এমার্জেন্সি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান তথা সিনিয়র কনসালটেন্ট চিকিৎসক অরিজিৎ বোস।
চিকিৎসকের মতে, গুরুতর অবস্থা বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। কোনও রোগীকে যখন জরুরি বিভাগে নিয়ে আসা হয়, তখন প্রাথমিক ভাবে প্রয়োজন হয় টিমওয়ার্কের। প্রথমেই বুঝতে হয়, সংশ্লিষ্ট রোগীর মূল সমস্যার জায়গা কোনগুলি। বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত চিকিৎসক, নার্স ও টেকনিশিয়ানদের একটি দল একত্রিত হয়ে কাজ করে এবং চিকিৎসার পাশাপাশি রোগীকে প্রতি মুহূর্তে পর্যবেক্ষণ করে। এই বিভাগের মূল মন্ত্র হল গতি। দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হয়। কারণ এই পর্যায়ে সংশ্লিষ্ট রোগীকে বাঁচিয়ে তোলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সামান্য ভুলও বড়সড় বিপদ ডেকে আনতে পারে। সেই কারণে এই দলটি রোগীর অবস্থার সম্ভাব্য কারণগুলিকে অন্বেষণ করে চিকিৎসা শুরু করে দেয়। চিকিৎসক অরিজিৎ বোস জানাচ্ছেন যে তাঁদের কাছে সব থেকে সাধারণ ঘটনা হল তীব্র স্ট্রোক, সেপসিস, হার্ট অ্যাটাক এবং ট্রমা।
চিকিৎসক তাঁর বক্তব্যের মাধ্যমে স্ট্রোকের বিষয়গুলি অত্যন্ত সহজ ও সরলভাবে তুলে ধরেছেন। তিনি জানাচ্ছেন, বাস্তব প্রেক্ষাপটে বিশ্বব্যপী এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা। স্ট্রোকে আক্রান্ত রোগীরা সাধারণত কথা বলতে, শারীরিক ভারসাম্য বজায় রাখতে, বা হাত-পা নিয়ন্ত্রণ করতে অক্ষম হয়ে পড়েন। তাই জরুরি বিভাগে ভর্তির পরে অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে চিকিৎসা শুরু করার প্রয়োজন হয়। অত্যন্ত কম সময়ের মধ্যে রোগীর সমস্যাকে পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বর্তমানে তীব্র স্ট্রোকে আক্রান্ত রোগীদের জন্য অ্যাপোলো হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে থ্রম্বোলাইসিস প্রক্রিয়াটিকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। একটি পদ্ধতিটি আগে শুধু মাত্র তীব্র হার্ট অ্যাটাকের ক্ষেত্রেই ব্যবহার করা হতো। তবে এখন এই প্রক্রিয়া বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে প্রাধান্য পাচ্ছে। এমনকী অনেক ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে যে রোগীরা স্ট্রোকের কারণে অপরিবর্তনীয় ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারতেন, তাঁদের থ্রম্বোলাইসিস প্রক্রিয়ায় চিকিৎসা করার পরে খুব স্বল্প সময়ের মধ্যেই নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেয়েছেন। এমনকী তীব্র স্ট্রোকের কারণে মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বাঁধলে, ক্যাথ ল্যাবে সম্পাদিত একটি বিশেষ পদ্ধতি প্রয়োগ করে রোগীকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব।
তীব্র স্ট্রোক হোক বা দুর্ভাগ্যজনক ট্রমা, কলকাতার অ্যাপোলো হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার টিম জরুরি পরিস্থিতিতে সর্বদা আপনাকে সমর্থন করতে এবং সর্বোত্তম চিকিৎসা পরিষেবা প্রদান করতে প্রস্তুত।
এই প্রতিবেদনটি ‘অ্যাপোলো হাসপাতাল’-এর সঙ্গে আনন্দবাজার ব্র্যান্ড স্টুডিয়ো দ্বারা যৌথ উদ্যোগে প্রকাশিত।