আইএএম হোটেল ম্যানেজমেন্ট
সময় বদলাচ্ছে। প্রতিনিয়ত প্রতিযোগিতা বাড়ছে বাজারে। প্রত্যেকেই চাইছে কী ভাবে একে অপরের থেকে এগিয়ে থাকা যায়। আর সেই কারণেই প্রত্যেক শিক্ষার্থীই মন কিছু দক্ষতা অর্জনের দিকে জোর দিচ্ছে, যা তাকে এই প্রতিযোগিতামূলক চাকরির বাজারে অন্যদের থেকে এগিয়ে রাখতে পারে। এই বাজারে প্রত্যেককে মনে রাখতে হবে, স্নাতক বা স্নাতকোত্তর পর্বের শেষে প্রাপ্ত গ্রেডের ভিত্তিতে কোনও শিক্ষার্থীই প্রাথমিকভাবে একটি চাকরি পেতে পারে। কিন্তু টিকে থাকার জন্য প্রয়োজন দক্ষতার।
বিগত কয়েক বছরে বেশ ভাল ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে হসপিটালিটি শিল্পের জনপ্রিয়তা। এই ক্ষেত্রে টিকে থাকার জন্য প্রয়োজন সফল পেশাদারদের। বিগত তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে আতিথেয়তা শিল্পে শিক্ষা প্রদানের জন্য বিশেষভাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে আইএএম ইনস্টিটিউট অফ হোটেল ম্যানেজমেন্ট। পরিসংখ্যান বলছে, সম্পূর্ণ ব্লেন্ডেড লার্নিং পদ্ধতির উপরে ভরসা রাখা এই প্রতিষ্ঠান শুধু মাত্র শিক্ষার্থীদের কর্মসংস্থান তৈরি করতেই সাহায্য করে না, বরং এই বাস্তব প্রেক্ষাপটে দীর্ঘমেয়াদে শিক্ষার্থীদের টিকে থাকতেও সাহায্য করে। তাই সেই শুরুর সময় থেকেই আইএম তাদের শিক্ষার্থীদের মান-ভিত্তিক শিক্ষা প্রদানের দিকে বেশি নজর দেয়। যার ফলে কোর্স শেষে শিক্ষার্থীরা দক্ষ পেশাদার হিসাবে ময়দানে নামতে পারে। বলা বাহুল্য, আইএএম উল্লেখযোগ্যভাবে প্রথম ভারতীয় প্রতিষ্ঠান যেখানে আন্তর্জাতিক স্তরের ডিগ্রি প্রোগ্রাম পড়ানোর অনুমোদন রয়েছে।
প্রতিটি প্রতিষ্ঠানেরই একটি নির্দিষ্ট পাঠ্যক্রম থাকে। আইএএম-এর এই পাঠ্যক্রম আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয় দ্বারা স্বীকৃত এবং এই পাঠ্যক্রমটি বিশ্বব্যাপী হসপিটালিটি ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই তৈরি করা হয়েছে। এই প্রসঙ্গে আইএএম-এর প্রতিষ্ঠাতা তথা পরিচালক মৈত্রেয়ী চৌধুরী জানান, “প্রথাগত শিক্ষার দিকে না ঝুঁকে বিশ্লেষণভিত্তিক শিক্ষার জন্য শিক্ষার্থীদের উৎসাহ দেয় এই প্রতিষ্ঠান। এখানকার পাঠ্যক্রমটিও পরিবর্তনশীল। বাইরের দুনিয়ায় ঘটে চলা বিভিন্ন বিষয়কে পর্যালোচনা করে এই পাঠ্যক্রমটিতে নিয়মিত অন্তর্ভূক্ত করা হয়। সেই সঙ্গে জোর দেওয়া হয় শেখার কৌশলগুলির উপরেও।” প্রতিষ্ঠানের দক্ষ ফ্যাকাল্টি সদস্যরা শিক্ষার্থীদেরকে প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে বাস্তব জগতে ব্যবহৃত হওয়া বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে ওয়াকিবহাল রাখার পাশাপাশি তাদের হাতে-কলমে শিক্ষার বিষয়টিকেও সুনিশ্চিত করেন। একই সঙ্গে, গতে বাঁধা পদ্ধতিকে অন্ধ ভাবে অনুসরণ করার পরিবর্তে শিক্ষার্থীদের বিশ্লেষণাত্মক পদ্ধতিতে চিন্তা-ভাবনা করতে উৎসাহ দেওয়া হয়। তা ছাড়া অতিথি অধ্যাপকদের দ্বারা নিয়মিত সেশন তো রয়েছেই।
এই প্রতিষ্ঠানে ডুয়েল কোর্সের সুবিধা রয়েছে। হসপিটালিটি অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে অ্যাডভান্সড প্রোগ্রামের (এনএসডিসি অনুমোদিত)মধ্যে বিভিন্ন বিকল্প রয়েছে এখানে— পশ্চিম লন্ডন থেকে ইন্টারন্যাশনাল হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্টে বিএসসি। হসপিটালিটি অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে বিএসসি, এবং সিসিপিটিআর ম্যাকাউট থেকে ইন্টারন্যাশনাল ট্যুরিজম এবং হোটেল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে বিএসসি। এই বিষয়ে মৈত্রেয়ী চৌধুরী বলেন, “ইউনিভার্সিটি অফ ওয়েস্ট লন্ডনের সঙ্গে আমাদের এই অ্যাসোসিয়েশন শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানের জন্য প্রচুর সুবিধা এনে দিয়েছে।” এই প্রতিষ্ঠানে পড়াকালীন শিক্ষার্থীদের কাছে তাদের তৃতীয় অর্থাৎ চূড়ান্ত বর্ষটি ইউনিভার্সিটি অফ ওয়েস্ট লন্ডন থেকে শেষ করার সুযোগ রয়েছে। একই সঙ্গে ইংল্যান্ড সরকার কর্তৃক চালু করা পোস্ট স্টাডি ওয়ার্ক ভিসা পুনঃপ্রবর্তনের ফলে কোর্স শেষ করার পরে শিক্ষার্থীদের কাছে কর্মসংস্থানের সুযোগ অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে।
এই কোর্সগুলির পাশাপাশি আইএএম-এ বেকারি, কালিনারি স্কিলস, এবং বার অ্যান্ড ব্রেভারেজ ম্যানেজমেন্ট ইত্যাদির উপরেও সার্টিফিকেট কোর্স পড়ানো হয়। রয়েছে হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্টে এবং কালিনারি সার্ভিসে (সেন্টার ফর কোলাবোরেটিভ প্রোগ্রাম, ট্রেনিং অ্যান্ড রিসার্চ মাকাউট) ডিপ্লোমা পড়ানোর সুবিধাও।।
সম্প্রতি এই প্রতিষ্ঠান আতিথেয়তায় দক্ষতা প্রশিক্ষণের প্রচারের জন্য স্মার্ট এডুসোলের মাধ্যমে জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্পোরেশন (এনএসডিসি) এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। ইন্ডাস্ট্রি সম্পর্কে একটি স্বচ্ছ ধারণা পেতে শিক্ষার্থীদের ইগনু থেকে পর্যটন স্টাডিজ ডিগ্রি গ্রহণ করতেও উৎসাহিত করা হচ্ছে।
আইএএম-এ পড়তে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের একটি অনলাইনে পরীক্ষা (কমন হসপিটালিটি অ্যাপটিটিউড টেস্ট) দিতে হয়। এই পরীক্ষাটি সারা ভারত জুড়ে বিভিন্ন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয়। এর পরে গ্রুপ আলোচনা এবং ব্যক্তিগত ইন্টারভিউ হয়। এই প্রসঙ্গে মৈত্রেয়ী চৌধুরী বলেন, “যেহেতু আমাদের শিক্ষার্থীরা হসপিটালিটি ইন্ডাস্ট্রির আসন্ন প্রজন্ম এবং আগামী দিনে তারা শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলির সঙ্গে যুক্ত হতে চলেছে, সেহেতু শিক্ষার্থী নির্বাচন পদ্ধতির উপরে আমরা বিশেষভাবে জোর দিয়ে থাকি।” আইএএম-এর শিক্ষার্থীদের একটি কঠোর প্রশিক্ষণ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। ক্যাম্পাস থেকে হোস্টেল, যাই হোক না কেন, তারা ইন্ডাস্ট্রিকে খুব কাছ থেকে দেখতে পারে ও উপভোগ করতে পারে। এখানকার শিক্ষার্থীদের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থা, যেমন ওবেরয় গ্রুপ অফ হোটেল, তাজ গ্রুপ অফ হোটেল, হায়াত গ্রুপ অফ হোটেল, হিলটন, এডিনবার্গ, ফোর সিজন হোটেল, লন্ডন, শেরাটন হোটেল, রেডিসন হোটেল ইত্যাদি দ্বারা প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
আইএএম সর্বদাই শিক্ষার্থীদের বৈচিত্র্যকে স্বীকৃতি দিয়েছে। এবং সেই বোঝাপড়ার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই প্রতিষ্ঠানে শিক্ষপ্রদানের কৌশলগুলি তৈরি করা হয়। এখানকার ব্যক্তিত্ব বিকাশ প্রোগ্রামগুলি শিক্ষার্থীদের পড়াশুনা, বিভিন্ন ইভেন্ট এবং ভবিষ্যতের কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে সর্বদা সমান এবং সক্রিয় অংশগ্রহণের সুবিধার্থে প্ল্যাটফর্ম তৈরি করে।
শিক্ষার্থীদের জন্য উজ্জ্বল কেরিয়ারের উপহার
দেশের সব থেকে পুরনো পেশাদার হসপিটালিটি প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে আইএএম নিজ গুণে তার জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। প্রতি বছর এই প্রতিষ্ঠান থেকে পাশ করে বহু শিক্ষার্থী দেশ-বিদেশের হসপিটালিটি ক্ষেত্রে কাজ করে। এই প্রসঙ্গে মৈত্রেয়ী চৌধুরী বলেন, “আমরা আধুনিক দিনের সব সুবিধাগুলিকে আমাদের এই প্রতিষ্ঠানের অন্তর্ভুক্ত করতে পেরেছি, যেগুলি শিক্ষার প্রক্রিয়াকে উন্নত করার জন্য বিবেচনা করা হয়।” এখানকার ক্যাম্পাসগুলি রেস্তোরাঁ, ফ্রন্ট অফিস, হোস্টেল, গেস্ট রুম, রান্নাঘর, বেকারি, লাইব্রেরি সহ বিভিন্ন আধুনিক সুযোগ-সুবিধা দ্বারা সুসজ্জিত। প্রতিষ্ঠানের মুকুটে রয়েছে একাধিক আন্তর্জাতিক খেতাব। মৈত্রেয়ী চৌধুরী জানান, “এই প্রতিষ্ঠান ক্যাম্পাসের সঙ্গে সংযুক্ত কলকাতায় নিজস্ব প্রশিক্ষণ বাণিজ্যিক হোটেল পরিচালনা করে এবং শিক্ষার্থীদের হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করে। কম্পিউটার কেন্দ্রগুলিতে, আমাদের শিক্ষার্থীদের 'ফিডেলিও' পিএমএস সফ্টওয়্যারের উপর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়, যা বিশ্বব্যাপী সমস্ত বড় হোটেলগুলিতে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।” পাশাপাশি, প্রায় নিয়মিতভাবেই বাণিজ্যের বিভিন্ন ক্ষেত্র থেকে বিশেষজ্ঞ ও অধ্যাপকেরা এই প্রতিষ্ঠানে আসেন মাস্টারক্লাস পরিচালনা করার জন্য।
এই প্রতিষ্ঠান বিশ্বাস করে, শিখতে হলে, হাতে-কলমে কাজ করা আবশ্যিক। সেই কারণেই শিক্ষার্থীদের সারা বছর ধরে বিভিন্ন আতিথেয়তা অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে উৎসাহিত করা হয়। তার মধ্যে একটি হল ফুড ফেস্টিভাল। যেখানে শিক্ষার্থীরা তাদের রন্ধনসম্পর্কীয় দক্ষতা প্রদর্শন করে। ঘন্টার পর ঘন্টা গবেষণা এবং অনুশীলনের মাধ্যমে এই ফেস্টিভালের জন্য প্রস্তুত হয় তারা। অপারেশনাল দক্ষতার পাশাপাশি, ইভেন্টগুলির জন্য শিক্ষার্থীদের প্রচার, বিপণন এবং ম্যান প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়, যা তাদের পরিচালনার ক্ষেত্রে দক্ষতা বাড়াতে সাহায্য করে। আইএএম শিক্ষার্থীদের দ্বারা আয়োজিত এই খাদ্য উৎসবগুলি কলকাতা এবং গুয়াহাটিতে বহুচর্চিত। প্রতি বছর এই ফেস্টিভালে চোখে পড়ার মতো ভিড় হয়। ফুড ফেস্টিভ্যাল ছাড়াও, কলেজের ক্যালেন্ডারে অন্যান্য আরও ইভেন্ট রয়েছে যা শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন দক্ষতা এবং দলগত মনোভাবকে উৎসাহিত করতে সাহায্য করে।
শুধু মাত্র পুঁথিগত পড়াশুনাই নয়, এই প্রতিষ্ঠান প্রতিটি শিক্ষার্থীকে হসপিটালিটি এবং পর্যটন জগতের বাইরে গিয়ে, বিভিন্ন ক্ষেত্র জুড়ে তাদের পরিচিত তৈরি করার জন্য প্রস্তুত করে। মৈত্রেয়ী চৌধুরী বলেন, “প্রথম সারির হোটেলের ব্যবস্থাপক থেকে শুরু করে ডেলয়েট, এমসিএস, যুক্তরাজ্যের মতো আন্তর্জাতিক সংস্থার পরামর্শদাতা — আমাদের শিক্ষার্থীরা সর্বত্র ছড়িয়ে রয়েছে।” আন্তর্জাতিক সহযোগিতার কারণে, বহু আইএএম স্নাতক যুক্তরাজ্য এবং ইউরোপের অন্যান্য অংশে চাকরির সুযোগ পেয়েছে। বহু শিক্ষার্থীকে লীলা প্যালেস, বেঙ্গালুরুর মতো বিশিষ্ট হোটেল চেইন দ্বারা নিয়োগ করা হয়েছে; সেই তালিকায় রয়েছে নভোটেল, ম্যারিয়ট, তাজ—এর মতো নামও। হসপিটালিটি শিক্ষার সূদূরপ্রসারী ভাবনার কারণে, আইএএম আগামী দিনে তাদের পাঠ্যক্রমে আরও প্রয়োগমুখী শিক্ষার প্রক্রিয়াগুলি বাস্তবায়নের অভিপ্রায়ে এককভাবে কাজ করে চলেছে।
বর্তমানে ভাল কেরিয়ার ও লাইফস্টাইল পেতে মরিয়া প্রত্যেক শিক্ষার্থীই। তাদের এই উৎসাহকে বাহবা দিতে সম্প্রতি আইএএম-আইএইচএম শিক্ষার্থীদের জন্য একটি রন্ধনসম্পর্কীয় অনুষ্ঠান শুরু করেছে। এই অনুষ্ঠান তরুণ শিক্ষার্থীদের জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম যা তাদের রন্ধনসম্পর্কীয় প্রতিভা প্রদর্শন করার পাশাপাশি তাদের প্রকৃত পেশাকে আলাদা ভাবে চিনতে সাহায্য করে।
হসপিটালিটি এডুকেশন পার্সোনালিটি এমিরেটস প্রফেসর তথা ইউনিভার্সিটি অফ ওয়েস্ট লন্ডন এবং রন্ধন বিজ্ঞানের খ্যাতনামা লেখক, ডেভিড ফসকেট এই বিষয়ে বলেন, “এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সমস্ত রন্ধনসম্পর্কীয় শিক্ষক এবং প্রতিষ্ঠান সম্ভবত এই প্রথমবার একে অপরের কাছ থেকে শেখার, শেখানোর এবং নেটওয়ার্ক তৈরি করার সুযোগ পাবে। এই উদ্যোগ আগামী দিনে হসপিটালিটি শিল্পকে সমৃদ্ধ করবে।”
আইএএম-এর মুকুটে জুড়ে থাকা কয়েকটি পালক —
বিশদে জানতে ক্লিক করুন — https://bit.ly/3MnpSo5
অথবা ফোন করুন এই নম্বরে — +91 9903070000
এই প্রতিবেদনটি ‘আইএএম’-এর সঙ্গে আনন্দবাজার ব্র্যান্ড স্টুডিয়ো দ্বারা যৌথ উদ্যোগে প্রকাশিত।