কুমকুম চৌধুরী
দা দিয়ে কুপিয়ে মাকে খুন করে ছেলে। পরে ওই দা দিয়েই আত্মহত্যার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয় সে।
শনিবার দুপুরে চট্টগ্রামের বারিক বিল্ডিং মোড় এলাকায় ‘সরকার টাওয়ার’-এ এই ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গিয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নিহতের নাম কুমকুম চৌধুরী (৪৫)।
খুনের অভিযোগে তাঁর বছর কুড়ির ছেলে সৌমিত চৌধুরীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাবা সুখময় চৌধুরী আয়কর আইনজীবী হিসেবে ঢাকায় কর্মরত। সরকার টাওয়ারে কুমকুম দেবী বড় ছেলে সোমনাথ এবং ছোট ছেলে সৌমিতের সঙ্গে থাকতেন।
পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (বন্দর) জয়নুল আবেদিন জানান, খুনের পর আত্মহত্যার চেষ্টাকারী ছেলে সৌমিত এখন পুলিশ হেফাজতে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সৌমিত স্বীকার করেছে, রাগের মাথায় তাঁর মাকে খুনের পর ওই দা দিয়েই আত্মহত্যার চেষ্টা চালায় সে।
প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, ওই দম্পতির বড় ছেলে সোমনাথ চট্টগ্রামের হাজি মুহাম্মদ মুহসিন কলেজে বিবিএ প্রথম বর্ষে পড়াশোনা করছেন। সৌমিত এ বার ব্যারিস্টার সুলতান আহমেদ ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দিয়ে তিনটি বিষয়ে অকৃতকার্য হয়। পরে ফলাফল পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করেন তিনি। পুনর্নিরীক্ষণে এক বিষয়ে পাশ করলেও অপর দু’টি বিষয়ে অকৃতকার্যই হয়। এ নিয়ে দাদা তাকে বকাঝকা করেন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে খুন ও আত্মহত্যার চেষ্টার ঘটনা ঘটে বলে প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান।
হাসপাতালে দাঁড়িয়ে সোমনাথ এ দিন জানান, বেলা ১১টা থেকে ১টার মধ্যে এ ঘটনা ঘটে। তিনি বলেন, ‘‘অকৃতকার্য হওয়ায় ভাইকে বকাঝকা করে বেলা ১১টায় কলেজে চলে যাই। এর পর মায়ের সঙ্গে ছোট ভাইয়ের কী হয়েছে তা জানি না।’’ বেলা একটায় ঘরে ফিরে কয়েক বার কলবেল বাজানোর পর সৌমিত নিজে এসে দরজা খুলে দিয়ে সেখানেই পড়ে যান। তখন তিনি দেখতে পান সৌমিতের সারা গা রক্তে ভেসে যাচ্ছে। এর পর তিনি ছুটে মায়ের ঘরে গিয়ে দেখেন কুমকুম দেবী বিছানায় রক্তাক্ত মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন। এক প্রতিবেশীর সহায়তায় গুরুতর আহত ভাইকে নিয়ে তিনি হাসপাতালে যান বলে জানিয়েছেন সোমনাথ।
নিহত কুমকুম দেবীর বোন হাসপাতালে সংবাদমাধ্যমকে জানান, তাঁর বোন মস্তিস্কে রক্তক্ষরণ হয়ে গত নয় মাস ধরে অসুস্থ ছিলেন। ছোট ছেলে সৌমিতই তখন মায়ের দেখাশোনা করতেন। তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, ‘‘আমি বুঝতে পারছি না, যে মাকে এত যত্ন করত, সে কী ভাবে এ কাজ করতে পারে! ডাক্তার দেখানো থেকে শুরু করে ওষুধ খাওয়ানো সবই সৌমিত করত।’’ তাঁর প্রশ্ন, ‘‘কেন সে মাকে খুন করল?’