আদালতের পথে মির কাসেমের পরিবার। ছবি সৌজন্যে বাংলা ট্রিবিউন।
সবাই বুঝে গেছেন আর কিছু করার নেই। সব আইনি পথ শেষ হয়ে গেছে। অপরাধ কবুল করে রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা যে করবেন না মির কাসেম আলি, তা আগেই জানত পরিবার। ফলে মানসিক প্রস্তুতি ছিলই। আজ বিকেলে কাসেমের আত্মীয় স্বজনদের জেলে গিয়ে দেখা করে আসার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। এই শেষ দেখা, বুঝে নিয়েই গিয়েছিলেন স্ত্রী, কন্যারা।বিকেল সাড়ে ৩টেয় ছ’টা গাড়িতে করে জেলে পৌঁছন ৪৭ জন। তাঁদের মধ্যে মির কাসেমের স্ত্রী, কন্য-সহ ৩৮ জনকে ভেতরে গিয়ে দেখা করতে দেওয়া হয়েছে তাঁর সঙ্গে।
বাবার সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার আগে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন মির কাসেমের দুই মেয়ে সুমাইয়া রাবেয়া ও তাহেরা তাসনিম।
সুমাইয়া রাবেয়া লিখেছেন:
‘আমার আব্বু নরম মনের মানুষ। প্রতি বার বক্তব্য দিতে উঠলে কেঁদে ফেলতেন। এটা সবাই জানেন। এর আগে যখন দেখা করতে গিয়েছিলাম তখন আব্বুর চেহারায় বিন্দুমাত্র বিচলতা দেখিনি, বরং সবার সাথে হাসি খুশি ছিলেন। তখন বাবাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, আব্বু, আমাদের ভাইবোনের জন্য আল্লাহর কাছে জান্নাতের সুপারিশ করবে না? আব্বু একগাল হেসে বললেন, শুধু তোমরা না, আমার নাতি-নাতনি, বউমা, জামাই সবার জন্য আল্লাহর কাছে সুপারিশ করব। আমরা সবাই হেসে দিয়েছিলাম। আজকে আবার আব্বুকে দেখতে যাচ্ছি। শেষ বারের মতো। কাল আব্বু থাকবে না এ নিয়ে আমরা দুঃখিত নই। শাহাদাতের মর্যাদা কজনের ভাগ্যে জোটে? এ মৃত্যুর জন্যই তো সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন। আল্লাহ আমার আব্বুকে কবুল করে নিন।’
সুমাইয়া রবেয়ার লেখা সেই ফেসবুক পোস্ট।
আর এক মেয়ে তাহেরা তাসনিম লিখেছেন:
‘সবাই আমার বাবা মির কাসেম আলির জন্য দোয়া করবেন যেন তিনি জান্নাতুল ফেরদৌসের বাসিন্দা হতে পারেন! আর আমাদের, তার পরিবারকে এই শোক কাটিয়ে ওঠার তৌফিক দেন এবং এ দেশ ও জাতিকে তার চলে যাওয়াতে অর্থনীতি ও দেশসেবায় যে অপূরণীয় ক্ষতি হবে, তা কাটিয়ে ওঠার তৌফিক দিন। আমিন। এমকিউ আলি পরিবার!’
তাহেরার লেখা ফেসবুক পোস্ট।
সৌজন্যে বাংলা ট্রিবিউন।
আরও পড়ুন: মির কাসেমের ফাঁসি আজ রাতেই? জেলে দেখা করতে গেল পরিবার