চলছে অভিযান।
ফের জঙ্গি ডেরার হদিশ খাস ঢাকার বুকে। বাংলাদেশের রাজধানীর উত্তর প্রান্তে পূর্ব আশকোনার এক আস্তানায় অভিযান চলছে। ভার রাত থেকে শুরু হয় অভিযান। সকালের দিকে দুই শিশুকে নিয়ে দুই মহিলা জঙ্গি আত্মসমর্পণ করলেও, ভিতরে থেকে যায় আরও তিন জন। পরে দুপুর ১টা নাগাদ তাদেরই মধ্যে এক মহিলা আচমকা নীচতলার ফ্ল্যাটের দরজা খুলে বেরিয়ে নিজের শরীরে বাঁধা সুইসাইড ভেস্ট বিস্ফোরণ ঘটায়। মহিলার সঙ্গে এক শিশুও ছিল। আত্মঘাতী বিস্ফোরণে ঘটনাস্থলেই মারা যায় ওই মহিলা জঙ্গি। সে জঙ্গি সুমনের স্ত্রী বলে জানা গেছে। সঙ্গে আনা শিশুকন্যা জঙ্গি ইকবালের মেয়েকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এই বিস্ফোরণে এক পুলিশকর্মীও জখম হন। অভিযানে নিহত হয়েছে জঙ্গি তানভিরের ছেলেও। অভিযান এখনও চলছে।
গত কালই ওই জঙ্গি আস্তানার খোঁজ আসে পুলিশের কাছে। খবর পাওয়া গিয়েছিল নব্য জেএমবি-র বেশ কয়েকজন ঘাঁটি গেড়েছে ওখানে। হাজি ক্যাম্পের কাছে তিনতলা ওই বাড়িটি শনিবার ভোররাতে ঘিরে ফেলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। অভিযান চালানোর জন্য শুক্রবার মধ্যরাত থেকেই নজর রাখতে ওখানে পৌঁছতে শুরু করছিল পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ইউনিট।
গোটা এলাকা পুলিশি নিরাপত্তার বলয়ে মুড়ে ফেলা হয়েছে। নিজস্ব চিত্র।
কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম সকালেই সাংবাদিকদের জানান, “বাড়িটির ভেতরে নীচতলায় অন্তত ছয়জন নব্য জেএমবির সদস্য রয়েছে বলে আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে।” এর পর সকাল সাড়ে ন’টার নাগাদ বাড়িটির নীচ তলা থেকে দুই শিশুকে নিয়ে আত্মসমর্পণ করে দুই নারী জঙ্গি। এই দু’জন হল ঢাকার মিরপুরে নিহত জঙ্গি মেজর জাহিদের স্ত্রী জেবুন্নেসা ও জঙ্গি মুসার স্ত্রী তৃষ্ণা।
তবে বাড়ির নীচতলায় এখনও তিন জঙ্গি রয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া।
অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মহঃ ছানোয়ার হোসেন তখন বলেন, “ভেতরে যারা আছে আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা যেন আত্মসমর্পণ করে সেই চেষ্টা চালাচ্ছি।” ভবনের উপরের দুটি ফ্ল্যাটের বাসিন্দাদের ততক্ষণে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলেও তিনি জানান।
মহঃ ছানোয়ার হোসেন বলেন, “যারা ভেতরে আছে তাদের বারবার অত্মসমর্পণ করতে বলা হচ্ছে। কিন্তু তারা ভেতর থেকে বলছে- তাদের শরীরে গ্রেনেড বাঁধা, গ্রেপ্তারের চেষ্টা করলে বিস্ফোরণ ঘটাবে।”
ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, “জঙ্গি তিনজন কিছুতেই ধরা দিতে চাইছে না। তারা ‘সুইসাইডাল ভেস্ট’ পরে আছে বলে জানিয়েছে। কিন্তু পুলিশ যে কোনো মূল্যে তাদেরকে জীবিত ধরতে চায় পুলিশ। তাদের আত্মসমর্পণে রাজি করানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।”
আত্মঘাতী মহিলা জঙ্গি।
এর পর দুপুর ১টা নাগাদ হঠাত্ই এক শিশুকে নিয়ে দরজা খুলে বেরিয়ে আসে এক মহিলা জঙ্গি। আত্মসমর্পণ করতে আসছে কি না তা বুঝে ওঠার আগেই নিজের শরীরে বাঁধা বিস্ফোরক ফাটিয়ে দেয় ওই মহিলা।
এ বছরের মাঝামাঝিতে গুলশান হামলার পর এ রকম বেশ কয়েকটি অভিযান চালায় পুলিশ, যাতে ২০ জনের বেশি জঙ্গি নিহত হয়েছে। ধরাও পড়েছে বেশ কয়েক জন।
আরও পড়ুন: ‘পারমাণবিক অস্ত্রের দুনিয়াজোড়া একটা প্রতিযোগিতা হওয়া উচিত’