পলাতক কোনও আসামির সঙ্গে যোগাযোগ রাখাটাও দণ্ডবিধি অনুযায়ী অপরাধ।
এই যুক্তি তুলে নির্বাচন কমিশনের কাছে বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন দল আওয়ামি লিগের নালিশ— বিদেশ থেকে বিএনপি দফতরে ভিডিয়ো কল করে তারেক রহমান কী ভাবে সম্ভাব্য প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার নিতে পারেন?
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দুর্নীতি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে জেলে যাওয়ার সময়ে তাঁর পুত্র তারেককে বিএনপির অস্থায়ী চেয়ারম্যান করে যান। তবে আদালতের সমন অমান্য করে লন্ডনে ফেরার থাকা তারেক নিজেও দু’টি দুর্নীতির মামলায় ১০ ও ৭ বছর এবং ২১ অগস্টের গ্রেনেড হামলার মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত। বাংলাদেশে তারেকের কোনও বিবৃতি প্রকাশেও নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে আদালত। এ দিকে রবিবার থেকে সম্ভাব্য প্রার্থীরা বিএনপি দফতরে নেতাদের কাছে যে ইন্টারভিউ দিচ্ছেন, সেখানে লন্ডন থেকে তারেক রহমানও ভিডিয়ো কল করে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন।
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনে বিধিভঙ্গের নালিশ করেছে আওয়ামি লিগ। তাদের যুক্তি, পলাতক আসামি হিসেবে তারেক এ ভাবে দেশের নির্বাচন প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারেন না। তবে সোমবার বিকেলে নির্বাচন কমিশনের সচিব হেলালুদ্দিন আহমদ জানিয়েছেন, ‘‘উনি দেশে না থাকায় আচরণ বিধি ওঁর ওপর প্রযোজ্য হবে না। কমিশনের বিশেষ কিছু করণীয় নেই।’’ কমিশনের সচিবের এই বক্তব্যে সন্তুষ্ট নন আওয়ামি লিগের নেতারা। অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের কথায়, পলাতক আসামি তারেকের সঙ্গে যোগাযোগ রাখাটাও অপরাধের পর্যায়ে পড়ে। আওয়ামি লিগ নেতাদের দাবি, তারেকের বিরুদ্ধে কিছু করার না-থাকতে পারে, কিন্তু এক জন ‘ফেরার আসামিকে’ ভিডিয়ো কলে দলীয় অফিসে হাজির করার জন্য বিএনপি নেতাদের
শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। তাঁরা তো দেশেই রয়েছেন।
বিএনপি দফতরে সোমবারেও তারেক ভিডিয়ো কনফারেন্সে সম্ভাব্য প্রার্থীদের ইন্টারভিউ নিয়েছেন। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগিরের যুক্তি— আমাদের দলের ব্যাপারে বাইরের লোকে বলার কে? এর মধ্যেই বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা সোমবার জিয়া অনাথালয় দুর্নীতির মামলায় তাঁর ১০ বছরের কারাদণ্ড মকুবের আর্জি জানিয়েছেন হাইকোর্টের আপিল বিভাগে। নিম্ন আদালত তাঁর অসুস্থতা ও বয়স বিবেচনা করে ৫ বছর কারাদণ্ড দিলেও হাইকোর্ট সরকার পক্ষের দাবি মেনে তা বাড়িয়ে ১০ বছর করে দেয়। বিএনপি মহাসচিব ফখরুল দাবি করেছেন, আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে তাঁরা জেনেছেন— কারাগার থেকে ভোটে লড়তে পারবেন খালেদা জিয়া। যদিও সরকারপন্থী আইনজীবীরা এই দাবি উড়িয়ে দিচ্ছেন।