মাঝরাতে সরিয়ে ফেলা হচ্ছে সুপ্রিমকোর্ট প্রাঙ্গনের নারী ভাস্কর্য। প্রতিবাদে সুপ্রিমকার্টের সামনে সমবেত হচ্ছে ছাত্রজনতা।
মৌলবাদীদের দাবি মেনে ঢাকায় সুপ্রিম কোর্টের চত্বর থেকে ‘জাস্টিসিয়া’র ভাস্কর্যটি সরিয়ে ফেলার কাজ শুরু করল বাংলাদেশ সরকার। বৃহস্পতিবার ভারতীয় সময় রাত বারোটায় যন্ত্রপাতি ও সার্চ লাইট নিয়ে ১০-১২ জন শ্রমিক সুপ্রিম কোর্ট চত্বরে হাজির হয়ে ভাস্কর্যটি উপড়ে ফেলার কাজ শুরু করে। এটির ভাস্কর মৃণাল হকও ঘটনাস্থলে চলে আসেন।
কোনও ঘোষণা ছাড়া রাতের অন্ধকারে কেন এই কাজ করতে হল— এই প্রশ্নের জবাবে এক সরকারি কর্তা জানান, বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ সরকার আর কোনও বিতর্ক চাইছে না। ভাস্কর্য সরানোর বিরোধীরা যাতে কাজে বাধা দিতে না-পারেন, সে জন্যই মধ্যরাতে কাজটি করা হয়েছে। তিনি জানান, শনিবার রমজান মাস শুরু হচ্ছে। সে কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সংবাদ মাধ্যমকেও কোর্ট চত্বরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।
সুপ্রিম কোর্টের সামনে ন্যায় বিচারের দেবী জাস্টিসিয়ার মূর্তির আদলে এই ভাস্কর্যটি বসানোর পর থেকেই কট্টর মৌলবাদী হেফাজতে ইসলামি সেটি অপসারণের দাবি করে আসছে। ঢাকায় তারা বিক্ষোভও দেখিয়েছে। সম্প্রতি হেফাজত প্রধান আল্লামা শফির উপস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা করেন, তিনিও চান ভাস্কর্যটি ওখান থেকে সরিয়ে ফেলা হোক।
রাতে কান্নায় ভেঙে পড়ে ভাস্কর মৃণাল হক জানান, ভাস্কর্যটি সরিয়ে ফেলা হচ্ছে খবর পেয়ে তিনি নিজেই তার তদারকি করতে এসেছেন। কারণ শ্রমিকেরা সেটি ভেঙে ফেলতে পারে। কার নির্দেশে এটি সরানো হচ্ছে, প্রশ্ন করা হলে হক বলেন— প্রশাসনের সর্বোচ্চ স্তর থেকেই নির্দেশটি এসেছে। এর আগে মৌলবাদীরা লালন ফকিরকে নিয়ে করা এই শিল্পীর আর একটি ভাস্কর্য ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছে।