নাকচ হল রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চেয়ে করা জঙ্গি নেতা মুফতি হান্নানের আবেদন। এখন জেলকোড অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ‘রাষ্ট্রপতি তার আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন। আমরা জেলকোড অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
এদিকে কারা কর্তৃপক্ষ শনিবার সন্ধ্যা নাগাদ এ বিষয়ে সরকারের কোনও নির্দেশনা পায়নি, তবে সব ধরনের প্রস্তুতি তাদের রয়েছে।
গত ১৯ মার্চ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে মুফতি হান্নানের রিভিউ আবেদন খারিজ হয়ে গেলে গত ২২ মার্চ তাকে কারাগারে মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখার রায় পড়ে শোনানো হয়। ২৩ মার্চ কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে তার মৃত্যু পরোয়ানা পাঠানো হয়।
প্রসঙ্গত, গত ২১ মার্চ মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি আব্দুল হান্নানসহ তিনজনের ফাঁসির রায়ের পুনর্বিবেচনার আবেদন খারিজ রায়ের অনুলিপি পৌঁছে। পরদিন ২২ মার্চ বুধবার সকালে তা পড়ে শোনানো হয়।
ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মুফতি হান্নান ২০১৩ সাল থেকে কাশিমপুরের হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রয়েছেন। তবে এখান থেকে হাজিরা দেওয়ার জন্য তাকে দেশের বিভিন্ন আদালতে নেওয়া হয়।
১৯ মার্চ রবিবার সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ তিন জঙ্গির মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে সর্বোচ্চ আদালতের দেওয়া রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন (রিভিউ) খারিজ করে দেন। সাবেক ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলা ও তিনজন নিহতের ঘটনায় করা মামলায় তাদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। প্রায় সাত বছর পর গত বছরের ৬ জানুয়ারি এ মামলায় হাইকোর্টে শুনানি শুরু হয়ে ৩ ফেব্রুয়ারি শেষ হয়। প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
ঢাকায় সাবেক ব্রিটিশ হাই কমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মুফতি হান্নান ও তার সহযোগী শরীফ শাহেদুল বিপুল কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার এবং অপর আসামি দেলোয়ার হোসেন রিপন সিলেট জেলা কারাগারে রয়েছেন।
সিলেটের হযরত শাহজালালের (র.) মাজারে ২০০৪ সালের ২১ মে আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলা হয়। হামলায় আনোয়ার চৌধুরী, সিলেটের জেলা প্রশাসকসহ অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত এবং পুলিশের দুই কর্মকর্তাসহ তিনজন নিহত হন।
ওই মামলায় ২০০৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর বিচারিক আদালত ৫ আসামির মধ্যে মুফতি হান্নান, বিপুল ও রিপনকে মৃত্যুদণ্ড এবং মহিবুল্লাহ ও আবু জান্দালকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
হাইকোর্টের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি গত বছরের ২৮ এপ্রিল প্রকাশিত হয়। ১৪ জুন রায় হাতে পাওয়ার পর ১৪ জুলাই আপিল করেন দুই আসামি হান্নান ও বিপুল। অপর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রিপন আপিল না করলেও আপিল বিভাগ তার জন্য রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী নিয়োগ করে।
আপিলের শুনানি শেষে গত বছরের ৭ ডিসেম্বর আসামিদের আপিল খারিজ হয়ে যায়। গত ১৭ জানুয়ারি এ রায় প্রকাশের পর আসামিরা পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করেন।