হুসেন মহম্মদ এরশাদ। ছবি: এএফপি।
মাছ আছে তেল নেই, ভাজা হবে কীসে। ঝাল ঝোলেও তেল লাগে। মাছের তেলে মাছ ভাজার কথা বলছে শরিকরা। শাসক দল আওয়ামি লিগকে পরামর্শ, শুল্কে লাগাম দিন। যেটুকু না নিলে নয় সেটুকুই। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে প্রস্তাবিত বাজেটে ব্যাঙ্ক হিসেবের ওপর আরোপিত বর্ধিত আবগারি শুল্ক প্রত্যাহার করা হয়েছে। জাতীয় পার্টির সাংসদ নুরুল ইসলাম ওমর সংসদে জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে আরও ভাবতে হবে। হুশেইন মোহম্মদ এরশাদের জাতীয় পার্টির সাংসদ ওমর বগুড়া থেকে নির্বাচিত পার্টির হুইপ। জায়গাটা বি এন পি-র প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্মৃতি ঘেরা। বগুড়ার ভাবনাকে গুরুত্ব না দেওয়া মানে বিরোধীদের তোয়াক্কা না করা। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামি লিগের সভানেত্রী হিসেবে একশো ভাগ সচেতন। কোনও কারণেই যেন তাঁদের ভোট উল্টো দিকে ঘুরে না যায়।
ভোটাররা যাতে ভারমুক্ত হয়ে ফুরফুরে মেজাজে ভোট দিতে পারে সেই চেষ্টা হচ্ছে। কাজটা বলা সহজ করা কঠিন। সরকারের রাজস্ব কমলে প্রকল্প চলবে কীসে। মেগা প্রকল্পে জলের মতো টাকা ঢালতে হচ্ছে। টাকা বন্ধ হলে কাজও বন্ধ। বিদেশি বিনিয়োগ বাড়লেও দেশি টাকায় টান পড়লে চলবে কীসে। অবস্থাটা শাঁখের করাত। দু'দিকেই কাটছে। এগোলে পিছোলে দু'দিকেই বিপদ।
আরও পড়ুন, বাংলাদেশের ভোট প্রস্তুতিতে সন্তুষ্ট আমেরিকাও
সরকারি অর্থ তছরূপ একবারে বন্ধ করতে পারলে অনেকটা সাশ্রয় হতে পারে। অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, বিশ্বের সর্বত্রই চুরি হয়। কোথাও কম আর বেশি। বাংলাদেশে নিয়ন্ত্রণ যথেষ্ট। ব্যাঙ্কে ফাঁকি বন্ধ করতে অতিরিক্ত সতর্কতা। জাতীয় পার্টির আরও এক সাংসদ ফখরুল ইমাম জানিয়েছেন, মানুষ এখন ব্যাঙ্কে টাকা রাখতে চাইছে না। তাহলে রাখবে কোথায়।
আওয়ামি লিগের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়ে জাতীয় পার্টি প্রমাণ করতে চাইছে তাদের গুরুত্ব। বারবার বলছে, আওয়ামি লিগের প্রতীক নৌকা এখন জাতীয় পার্টির লাঙল ছাড়া ভাসবে না। ১৯৭০-এ বঙ্গবন্ধু মুজিবুর রহমান ছোট নৌকা নিয়ে একাই নির্বাচনী দরিয়া পেরিয়েছেন। নৌকা আকারে এখন বড় হওয়ায় ভার বেশি। লাঙলের দরকার। জাতীয় পার্টি, আওয়ামি লিগের শরিক হলেও নিজেদের বৈশিষ্ট বজায় রাখতে তৎপর। প্রকাশ্যে সেটা শুনিয়েও দিয়েছে। সরকারে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রক নিলেও সরকারকে সমালোচনা করতে ছাড়ে না। বাজেট বিতর্কে তাদের লড়াইটা বিরোধী দলের মতই। তবে এমন কিছু করছে না যাতে নৌকাডুবি হয়।