শুধু জঙ্গি নয়, গুলশন ও শোলাকিয়ায় হামলার ঘটনায় রয়েছে রাজনৈতিক মদত। গুলশন হামলার সেই মাস্টারমাইন্ডদের ইতিমধ্যে চিহ্নিত করা হয়ে গিয়েছে। যে কোনও মুহূর্তে পুলিশ এই মাস্টারমাইন্ডদের গ্রেফতার করতে পারে। শুক্রবার দুপুরে একটি অনুষ্ঠানে এ কথা জানান বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
এ দিন দুপুরে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে বাংলাদেশ ছাত্রলিগ মহানগর উত্তর আয়োজিত ‘টার্গেট অগস্ট; ধানমন্ডি থেকে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ’ শীর্ষক জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন তিনি। সেখানেই সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান তিনি।
এর কয়েক দিন আগে বাংলাদেশের নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান জানিয়েছিলেন, রাজধানীর গুলশনে স্প্যানিশ রেস্তোরাঁ হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার সঙ্গে ইসলামিক স্টেট (আইএস) নয়, বাংলাদেশ জামাত ইসলামি জড়িত। এ দিন আবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সরাসরি এই ঘটনায় রাজনৈতিক মদতের প্রসঙ্গ তুলেছেন। অনুষ্ঠানের প্রধান আলোচক সংসদ সদস্য আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেছেন, ‘‘১৯৭৫ সালে যারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল, তারা সফল হয়নি। সেই তারাই শেখ হাসিনাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করেছিল। সারা দেশে যে সব জঙ্গি হামলা ঘটছে, সবই ওই সব পরাজিত শক্তির চক্রান্ত।’’
গত ১ জুলাই বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার গুলশনে স্প্যানিশ রেস্তোরাঁ হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলার তদন্তের প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ২৩ অক্টোবর দিনটি ধার্য করেছে বাংলাদেশের আদালত। আদালতে পুলিশ জানিয়েছিল, চাঞ্চল্যকর এ মামলায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। গ্রেফতার নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হাসনাত করিমকে দুই দফায় রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তবে মাস্টারমাইন্ডদের যে চিহ্নিত করা গিয়েছিল তা তখন খোলসা করে আদালতকে জানায়নি পুলিশ।
আরও পড়ুন: মাশরাফির আবেদনে কি মন গলবে মরগ্যানদের
গত ১ জুলাই রাত পৌনে ৯টা নাগাদ হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা চালিয়ে ২০ জনকে হত্যা করা হয়। হামলাকারীদের বোমার আঘাতে নিহত হন পুলিশের দুই কর্মকর্তাও। পরদিন সকালে যৌথ বাহিনীর অভিযানে নিহত হয় পাঁচ হামলাকারী। এ নিয়ে হামলার পর ২৯ জন নিহত হয়।
জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস) এ হামলার দায় স্বীকার করে। সংগঠনটির মুখপত্র আমাক হামলাকারীদের ছবি প্রকাশ করে বলে জানায় জঙ্গি তৎপরতা পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা বিতর্কিত ওয়েবসাইট ‘সাইট ইন্টেলিজেন্স’। কিন্তু গুলশন হামলা সহ বিগত কিছুদিনে বাংলাদেশে যে হামলা বা হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে এগুলোর সঙ্গে আইএস-র সম্পর্ক নেই বলেই জানিয়েছে বাংলাদেশের সরকার। উপরন্তু তদন্তে জেএমবি, আনসারউল্লাহ বাংলা টিম, আনসার আল ইসলামের নাম উঠে এসেছে। তাদের বেশ কয়েকজন আটকও হয়েছে।
শুক্রবার দুপুরের আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ মহানগর উত্তরের সভাপতি সৈয়দ মিজানুর রহমান। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রীর একান্ত বিশেষ সহকারী সাইফুজ্জামান শিখর, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ, সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন প্রমুখ।