মৈত্রী এক্সপ্রেস।
অন্তরের বন্ধন আবহমান কালের। রেলপথের বাঁধনও খুব কম দিনের নয়। সেই বাঁধন দৃঢ় করেছে ‘মৈত্রী’ এক্সপ্রেস। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক দৃঢ়তর করতে এ বার চালু হচ্ছে নতুন ট্রেন ‘বন্ধন’।
৯ নভেম্বর কলকাতা থেকে খুলনা পর্যন্ত চালু হচ্ছে এই নতুন যাত্রিবাহী ট্রেন। সেটি চলাচল করবে পেট্রাপোল-বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে। মৈত্রীও চলবে যথারীতি। বন্ধন চালাতে দু’দেশের মধ্যে আগেই সিদ্ধান্ত হয়েছে। মঙ্গলবার কলকাতায় পূর্ব রেলের সদর দফতরে সেই পরিকল্পনাকে চূড়ান্ত রূপ দেওয়া হয়।
ঠিক হয়েছে, ৯ নভেম্বর বেলা ১১টায় কলকাতা স্টেশন থেকে ছাড়বে নতুন ট্রেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও-সম্মেলনের মাধ্যমে ‘বন্ধন’-এর যাত্রার সূচনা করবেন। রেলকর্তারা জানাচ্ছেন, ওই সময়ে কলকাতা স্টেশনেও একটি অনুষ্ঠান হবে। সেখানে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
পূর্ব রেলের কর্তারা জানান, কলকাতা-ঢাকা মৈত্রী এক্সপ্রেস এখন সপ্তাহে তিন দিন যাতায়াত করে। বন্ধন চলবে সপ্তাহে দু’দিন। কলকাতা থেকে খুলনার দূরত্ব কমবেশি ১৭৭ কিলোমিটার। এই পথ অতিক্রম করতে বন্ধন সময় নেবে প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা। নতুন ট্রেনটি কলকাতা থেকে ছেড়ে খুলনায় পৌঁছে রাতেই ফিরে আসবে কলকাতায়। প্রথম দিনে অবশ্য সাধারণ যাত্রীরা ওই ট্রেনে যেতে পারবেন না। বাণিজ্যিক ভাবে যাত্রা শুরু হবে ১৪ নভেম্বর।
আরও পড়ুন: বিমান নিয়ে নাশকতার ছক কষে গ্রেফতার পাইলট
দেশ ভাগের আগে এই পথে শিয়ালদহ থেকে যশোর ও খুলনা পর্যন্ত প্যাসেঞ্জার ট্রেন চলত। পরে তা বন্ধ হয়ে যায়। ২০০১ সালে ফের এই রুটে পণ্য পরিবহণ শুরু হয়। সেই থেকে মাঝেমধ্যে মালগাড়িই চলছে।
দু’দেশের রেল মন্ত্রকের আশা, কলকাতা-খুলনা ট্রেনটি গেদে-দর্শনা দিয়ে চলা মৈত্রী এক্সপ্রেসের থেকেও জনপ্রিয় হবে। কারণ, দু’দেশের মধ্যে সব চেয়ে বেশি মানুষ যাতায়াত করেন এই পেট্রাপোল-বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে। এটি ভারতের ব্যস্ততম সীমান্ত চেকপোস্ট। নতুন ট্রেনটি সোজা খুলনা যাবে, নাকি মাঝপথে কোনও স্টেশনে থামবে— তা এখনও ঠিক হয়নি। কয়েক দিনের মধ্যে মধ্যে বন্ধনের ভাড়া ঠিক হয়ে যাবে।
এই দু’টি রুট ছাড়াও আগরতলা-আখাউড়া, চিলাহাটা-হলদিবাড়ি এবং অসমের করিমগঞ্জ-সাহাবাদপুরের মধ্যে রেল যোগাযোগ গড়ে তোলার প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। লাইন পাতার কাজ চলছে। বাংলাদেশ রেলওয়ের ডেপুটি ডিরেক্টর কালীকান্ত ঘোষ জানান, ওই লাইনগুলি দিয়ে পণ্য পরিবহণ করাই মূল উদ্দেশ্য।