অপারেশনের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি পুলিশকর্তারা। নিজস্ব চিত্র।
‘মাশাল্লাহ, আল্লায় বাঁচাইলা!’ এই কথা বলেই গুলশান ও শোলাকিয়া হামলার মাস্টারমাইন্ড তামিম আহমেদ চৌধুরীর মৃত্যুসংবাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তার খুড়তুতো ভাই ফাহিম আহমদ চৌধুরী। শনিবার সকালে তামিমের মৃত্যুর খবর প্রকাশিত হওয়ার পরে তাঁর কথায় বোঝা গেল, এই মৃত্যুসংবাদে তাঁরা (তামিমের স্বজনরা) উৎফুল্ল।
তামিমের কানাডা প্রবাসী কোনও স্বজন দেশে অবস্থান করছেন কি না এ বিষয়টিও তাঁর জানা নেই বলে জানিয়েছেন ফাহিম। তিনি জানান, তাঁর বাবা নজরুল ইসলাম (তামিমের কাকা) গত রবিবার মারা গিয়েছেন। বাবার মৃত্যুতে তাঁদের পরিবার শোকাহত।
তামিমের কাকা নুরুল ইসলাম চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে ভাইপোর মৃত্যুর বিষয়টি তাঁর জানা নেই বলে জানান। এমনকী, তাঁর বাবার পরিবারের সঙ্গেও তাঁদের কোনও যোগাযোগ নেই। তামিম দেশে কোথায় অবস্থান করত, সে বিষয়েও তাঁরা অবহিত ছিলেন না।
বিয়ানীবাজার বড় গ্রামের বাসিন্দা দুবাগ ইউনিয়ন আওয়ামি লিগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক জাকারিয়া আহমদ জানান, তামিমের মৃত্যুসংবাদ তাঁরা বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে দেখেছেন। তাঁর মৃত্যুতে এলাকার মানুষের কোনও প্রতিক্রিয়া নেই। তিনি বলেন, ‘‘বড়গ্রামের মানুষ জঙ্গিবিরোধী। তার লাশ আনতে গ্রাম থেকে কেউ যাবে না।’’
আরও পড়ুন:
বাংলাদেশে গুলিতে খতম গুলশন হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড-সহ ৩ জঙ্গি
জীবিত ধরা গেল না তামিমকে, আক্ষেপ রয়ে গেল বাংলাদেশ পুলিশের
শনিবার সকালে নারায়ণগঞ্জে ‘অপারেশন হিট স্ট্রং-২৭’-এ তামিম চৌধুরী-সহ তিন জঙ্গি নিহত হয়।
তামিম সম্পর্কে খোঁজখবর নিতে গত ১৭ অগস্ট বাংলা ট্রিবিউনের শ্রীহট্ট প্রতিনিধি সরেজমিন বিয়ানীবাজার যান। ভারত সীমান্তঘেঁষা তামিমদের গ্রামের বাড়ি বড়গ্রাম। শ্রীহট্ট থেকে ওই গ্রামের দূরত্ব প্রায় ৪৪ কিলোমিটার। সে সময় এলাকাবাসী তামিমের বিষয়ে তেমন কোনও তথ্য জানাতে পারেননি। এমনকী, তার তিন কাকার বাড়িঘরও তালাবন্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়।
‘আমার লগ (সঙ্গ) ছাড়ি দেও, আমি আল্লাহর নামে আছি’— পাঁচ বছর আগে বাবাকে এই চিঠি পাঠিয়ে তামিম আহমদ চৌধুরী নিখোঁজ হয় বলে বাংলা ট্রিবিউনকে জানিয়েছিলেন সিলেটের বিয়ানীবাজারের দুবাগ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম। এর পর পরিবারের সঙ্গে তার কোনও যোগাযোগ নেই বলেই জানেন এলাকার লোকজন।
(সৌজন্য: বাংলা ট্রিবিউন)