গ্যাস লিকেজে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে আসা একজন ছবি সৌজন্যে: বাংলা ট্রিবিউন।
বাংলাদেশের বন্দরনগরী চট্টগ্রামের আনোয়ারায় ডাই অ্যামোনিয়াম ফসফেট সার কারখানার (ডিএপি) একটি প্ল্যান্টে দুর্ঘটনায় অ্যামোনিয়া গ্যাস ছড়িয়ে পড়ছে। সোমবার রাত ১০টার দিকে কর্ণফুলী নদী তীরে সরকারী সার কারখানা- চট্টগ্রাম ইউরিয়া সার কারখানার (সিইউএফএল) পাশের কারখানাটিতে এ ঘটনাটি ঘটে। ৫ শিশু সহ অন্তত ৫০ জন এই ঘটনায় অসুস্থ হয়ে চট্টগ্রামের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর।
দুর্ঘটনার ফলে বাতাসে এই গ্যাস ছড়িয়ে পড়ায় আনোয়ারা ও এর পাশের অনেক এলাকার মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। দমকলের ১০টি ইউনিট গ্যাস নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। দুর্ঘটনা কবলিত ট্যাঙ্কের আশপাশে বিপুল পরিমাণে জল দেওয়া হয়। অ্যামোনিয়া গ্যাসের ছড়িয়ে পড়া রুখতে দমকলকর্মীরা পুরো এলাকায় জল ছিটিয়ে কৃত্রিম বৃষ্টিপাতের ব্যবস্থা করেন।
চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মেজবাহউদ্দিন বলেছেন, অ্যামোনিয়া প্ল্যান্টে লিকের পর গ্যাস ছড়িয়ে পড়ায় আনোয়ারা,পতেঙ্গা-সহবেশ কয়েকটি এলাকার মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী, ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থল এবং পতেঙ্গা এলাকায় কৃত্রিমভাবে জল ছেটানোর কাজ করে। জলে অ্যামোনিয়া গ্যাসের প্রভাব কমে। সেই কারণেই পরিস্থিতির সামাল দিতে প্রচুর পরিমাণে জল দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
হাসপাতালে আনা হচ্ছে অসুস্থদের। নিজস্ব চিত্র।
দমকল প্রধান জসিম উদ্দিন জানান, সোমবার সন্ধ্যায় সার কারখানার একটি গ্যাসের ট্যাঙ্কে বিষ্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এই গ্যাস রাতে বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। অ্যামোনিয়া গ্যাস আশপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পড়ায়, মানুষের শ্বাসকষ্ট হচ্ছে।
রাত সওয়া দুটোয় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক পঙ্কজ বড়ুয়া জানান, বিষাক্ত গ্যাসে অসুস্থ হয়ে এলাকার বিভিন্ন স্থান থেকে অন্তত ৫০ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এছাড়া আনোয়ারার বিভিন্ন এলাকা থেকে শ্বাসকষ্টে ভুগে মানুষের অসুস্থ হওয়ার খবর আসছে।
ঘটনার উদ্ধারকাজ সম্পর্কে দমকলের এক কর্মকর্তা জানান, সার কারখানার দুই পাশে ১০টি ইউনিট কাজ করছে। অ্যামোনিয়া গ্যাসে আক্রান্তদের আতঙ্কিত না হয়ে জলে ভেজানো কাপড় ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে একটি তদন্ত কমিটি রাতেই গঠন করা হয়েছে।
বন্দরনগরীর এই সার কারখানাটির অবস্থান কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ তীরবর্তী কর্ণফুলী থানার রাঙাদিয়ায়। শেষরাতে ক্রমশ গ্যাসের তীব্রতা ও ঝাঁজ কমে আসে।