বারুদ আর রক্তের গন্ধ চায় না বাংলাদেশ, চায় উন্নয়ন

দেশের ভাল বুঝতে হয় দেশের মানুষকেই। কীসে ভাল না জেনে খারাপটাই করে বসে। কাণ্ডজ্ঞানহীন হয়ে বিদেশের টাকায় দেশের ক্ষতি করে। সোনার দেশটাকে পোড়াতে চায়। সোনার বাংলা পুড়লে যে আরও উজ্জ্বল হয় জানে না।

Advertisement

অমিত বসু

শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০১৬ ২০:৫৩
Share:

দেশের ভাল বুঝতে হয় দেশের মানুষকেই। কীসে ভাল না জেনে খারাপটাই করে বসে। কাণ্ডজ্ঞানহীন হয়ে বিদেশের টাকায় দেশের ক্ষতি করে। সোনার দেশটাকে পোড়াতে চায়। সোনার বাংলা পুড়লে যে আরও উজ্জ্বল হয় জানে না। বাংলাদেশের যে সব তরুণ, জঙ্গি খাতায় নাম লিখিয়েছে তাদের বয়স বিশ থেকে পঁয়ত্রিশ। তাদের কেউই মুক্তিযুদ্ধ দেখেনি। দেখলে ভ্রান্তিবিলাস হত না। লক্ষ লক্ষ শহিদের রক্তে দেশটা স্বাধীন হয়ে বিশ্বের দরবারে মাথা তুলছে। দুনিয়া দেখেছে। এইটুকু দেশের কী অদম্য শক্তি! অর্থ নেই, অস্ত্র নেই, তবু সংশয়হীন। মাতৃভূমিকে মুক্ত করতে সাগর পরিমাণ রক্ত দিতে প্রস্তুত। স্বাধীন হওয়ার পরও স্বস্তি পায়নি দেশটা। প্রতিকূল শক্তি তাদের আষ্ঠেপৃষ্ঠে বাঁধতে চেয়েছে, যাতে নড়াচড়া বন্ধ হয়। এক পা সামনে ফেলতে না পারে। নেতৃত্বহীন করতে কেড়ে নেয় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু মুজিবুর রহমানকে।

Advertisement

সামরিক শাসন গণতন্ত্রের গলা টিপে ধরেছে। সাময়িক ভাবে মানুষ কুঁকড়োলেও সময়মতো গণতন্ত্রের দাবিতে মাথা তুলেছে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেই ছেড়েছে। বর্তমানে দেশটার বুকে জোড়া হয়েছে উন্নয়নের ডানা, চোখে আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রথম লক্ষ্য তরুণদের শক্ত জমির ওপর দাঁড় করানো। তারাই যে দেশের শ্রেষ্ঠ সম্পদ তিনি জানেন। সেই দুর্বার শক্তিকে ব্যবহার করতে চান উন্নয়নের কাজে। শুধু কর্মসংস্থান নয়, দু’বেলা দু’মুঠো খাওয়ার লোভে নয়, আত্মপরিচয়ের দৃঢ়তায় গর্বিত হওয়ার জন্য।

তা সত্ত্বেও, অন্যায় অন্ধকারে বাঁচার ঠিকানা খুঁজছে কেউ কেউ। কাঁচা টাকার বিনিময়ে কাঁচা রক্ত। এ তো চরম নৃশংসতায় তিলে তিলে নিজেকেই খুন করা! তারা যদি ইরাক, সিরিয়াকে আদর্শ দেশ মনে করে, খতিয়ে দেখতে পারে তাদের অবস্থা। সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরু হয়েছে। তার আঁচ পড়েছে ইরাকে। ছোট ছোট জঙ্গী গোষ্ঠী একে অন্যের বিরুদ্ধে লড়ছে। সিরিয়ার উত্তরে শক্তিশালী হওয়ার চেষ্টা করছে ইরাকে তৈরি ইসলামিক স্টেট অফ ইরাক অ্যান্ড সিরিয়া। এই আইএস-এর সঙ্গে প্রধান বিরোধ আল নুসরা-র। ২০১৪-র জুলাইয়ে সিরিয়ার এক তৃতীয়াংশ আইএস-এর হাতে চলে যায়। তাদের বিরুদ্ধে লড়তে সিরিয়ার সরকারি বাহিনীকে সাহায্য করছে রাশিয়া, ইরান, ইরাক। অন্য দিকে, বিদ্রোহীদের বিভিন্ন গোষ্ঠীর পাশে আমেরিকা, সৌদি আরব, কাতার, তুরস্ক। ২০১৫’র ৩০ সেপ্টেম্বর সিরিয়ার সরকারের অনুরোধে রুশ বিমানবাহিনী সিরিয়ায় বোমাবর্ষণ শুরু করতেই দুই মহাশক্তির যুদ্ধের সূচনা।

Advertisement

বাংলাদেশ শান্তির দেশ। এ সবের মধ্যে নেই। আইএস বাংলাদেশে সন্ত্রাস চালিয়ে কী লাভ পাবে? কিছু তরুণকে প্ররোচিত করে নাশকতায় উদ্বুদ্ধ করতে পারে। তাতে সিরিয়ায় যুদ্ধের আগুন নিভবে না। নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ করা মাত্র। বাংলাদেশ শান্তির রাস্তায় হাঁটছে। উন্নয়ন আর স্বপ্ন নয়, বাস্তব। কৃষির ভিত শক্ত। এ বার শিল্পায়নের পালা। মাঠে মাঠে সবুজ ধান হাওয়ায় মাথা দোলাচ্ছে। বর্ষায় জলের উজ্জ্বল শস্য ইলিশ পদ্মা, মেঘনা, যমুনায় ঝিলিক মারবে। সেই ইলিশের অপেক্ষায় ভারতের পশ্চিমবঙ্গ। ইলিশ বলতে বাঙালি মাত্রেই যে পাগল। বাংলাদেশের বিপদে বরাবরই হিমালয়ের মতো পাহারা দিয়েছে ভারত। বাংলাদেশের মতো বারুদের গন্ধ ভারতেরও পছন্দ নয়। তারা চায় বাংলাদেশের জাতীয় পাখি দোয়েল গাইতে থাকুক। ভারতের জাতীয় পক্ষী ময়ূর সঙ্গীতের তালে তালে নৃত্য পরিবেশন করুক। দুনিয়া হিংসা ভুলে তাই দেখুক, শুনুক, আর নিজেদের শোধরাক।

আরও পড়ুন:
এরশাদ-রওশন পুনর্মিলনে জাপা জমজমাট

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement