এ বছর বাংলাদেশে ৩০ হাজারেরও বেশি পূজামণ্ডপ। বৈচিত্র, ঐতিহ্য আর বাহারিতে কোনও খামতি নেই। কোথাও এক হাজার দুই ভূজার দেবী দুর্গা। কোথাও বা শুধুই হাজার। থিমের পুজোয় কোথাও স্থান পেয়েছে নারীর প্রতি সহিংসতা। আছে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিয়ে থিম। মৌলভীবাজারের লাল দুর্গা পুজোর খ্যাতি তো দেশের বাইরেও ছড়িয়ে পড়েছে!
তবে এত বৈচিত্রের মধ্যেও এ বারে নজর কেড়েছে ঢাকার কাছে ধামরাইয়ের বনেদি বনিক বাড়ির পুজো। অষ্ট ধাতুর দেবী দুর্গার মূর্তি তৈরি করা হয়েছে। প্রতিমার উচ্চতা ৮ ফুট ১ ইঞ্চি। অষ্টধাতু দিয়ে তৈরি এটি দেশের সবচেয়ে বড় প্রতিমা বলে দাবি করেছেন এর কারিগরা। স্থানীয় সুকান্ত বণিকের বাড়িতে এই অষ্ট ধাতুর দেবীর আরাধনা চলছে। অষ্টধাতুর ওই দুর্গাকে দেখতে দেখতে দূর দূরান্ত থেকে ছুটে আসছে লোকজন। বণিক বাড়ির শত বছরের পুজোর ঐতিহ্যে এ বার যেন নতুন চমক।
আরও পড়ুন, মহাষ্টমীতে ঢাকায় কুমারী পুজো
আরও পড়ুন, বাংলাদেশে বিসর্জন শেষ দশমীর রাতেই
আনন্দবাজারকে এক সাক্ষাত্কারে সুকান্ত বণিক বলেন, “১০০ বছর হল আমরা পুজো করে আসছি। এ বছরে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম স্থায়ী প্রতিমার। যে হেতু আমরা পেশাজীবনে ধাতব বিভিন্ন মূর্তি-ভাস্কর্য তৈরি করি, তাই এবারের স্থায়ী প্রতিমাটি অষ্ট ধাতু দিয়ে বানানোর চিন্তা করেই এই আয়োজন। তবে এখনও কাজ শেষ সেটা বলব না। আগামী পুজোর আগে শেষ করব এই স্থায়ী প্রতিমার সব কাজ।”
অষ্টধাতুর সংমিশ্রণে প্রতিমা তৈরি সুকান্তদের কয়েক প্রজন্মের পেশা। তাদের বাড়ির এ পুজোর ঐতিহ্য শত বছরের। তবে আগে পুজো হতো মাটির প্রতিমায়।
এ বারের প্রতিমাটি তৈরিতে প্রায় আট মাস সময় লেগেছে। তামা, কাসা, পিতল, সীসা, দস্তা, সোনা, রুপো,পারদের সংমিশ্রণে বানানো হয়েছে মূর্তিটি। ৪০০ কেজির বেশি ওজনের প্রতিমার উচ্চতা ৮ ফুট ১ ইঞ্চি। চলতি বাজারে খরচ প্রায় ২৫ লক্ষ টাকার মতো।
অনেকের বিশ্বাস, অষ্টধাতু আটটি গ্রহকে প্রতিনিধিত্ব করে। বিভিন্ন মন্দিরে অষ্টধাতুর তৈরি প্রতিমার দেখা মেলে। সুকান্তদের এই প্রতিমাটির প্রতীকী বিসর্জন দেওয়া হবে, এমনটিই জানিয়েছেন সুকান্ত বণিক।
(এই প্রতিবেদনটি প্রথম প্রকাশের সময় বণিক বাড়ির ছবির নামে অন্য ছবি প্রকাশিত হয়েছিল। এই অনিচ্ছাকৃত ত্রুটির জন্য আমরা আন্তরিক ভাবে দুঃখিত।)