বাংলাদেশে আছড়ে পড়ল ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’। মঙ্গলবার সকাল ছ’টা নাগাদ ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার বেগে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম উপকূলের উপর দিয়ে অতিক্রম করতে শুরু করে ঘূর্ণিঝড়টি। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও সংলগ্ন পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকা দিয়ে ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ সামান্য উত্তর দিক ঘেঁষে কক্সবাজারের টেকনাফ ও সেন্টমার্টিন সমুদ্র উপকূলে আঘাত হানে। ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার বেগে হাওয়া বইতে শুরু করেছে। সঙ্গে রয়েছে জোরালো বৃষ্টির দাপট। সমুদ্রে তৈরি হয়েছে তীব্র জলোচ্ছ্বাস।
এর জেরে সেন্টমার্টিনে প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ভেঙে পড়েছে সমুদ্রতীরবর্তী বহু বাড়ি। কয়েকশো মাছ ধরার ট্রলার ভেসে যাওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছে। কুতুবদিয়া, কক্সবাজার, টেকনাফ ও সেন্টমার্টিনে বেশ কিছু কাঁচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে এবং গাছপালা ভেঙে পড়েছে। বিভিন্ন ত্রাণশিবির এবং হেটেলে মাথা গুঁজেছেন স্থানীয় মানুষ। এমনটাই জানিয়েছেন বাংলাদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রকের অতিরিক্ত সচিব গুলাম মুস্তাফা।
কক্সবাজার জেলায় খুলে দেওয়া হয়েছে ত্রাণ শিবির। ছবি: এএফপি।
আবহাওয়া দফতরের ডিরেক্টর সামসুদ্দিন আহমেদ জানান, ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার গতিতে বাংলাদেশের উপকূলরেখা অতিক্রম করতে শুরু করে মোরা। উপকূল অতিক্রম করে পুরোপুরি স্থলভাগে ঢুকে পড়তে দু–তিন ঘণ্টা সময় লাগতে পারে। স্থানীয় বাসিন্দাদের ত্রাণ শিবিরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কক্সবাজার জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, উপকূলীয় এলাকা থেকে দু’লক্ষাধিক মানুষকে সরিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড়কে বাহন করে কিছু আগে বর্ষার আশা
খুলে দেওয়া হয়েছে জেলার ৫৩৮টি ত্রাণশিবির। গঠন করা হয়েছে ৮৮টি মেডিক্যাল টিম। প্রস্তুত রাখা হয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মসূচির আওতায় ৪১৪টি ইউনিটের ছ’হাজার স্বেচ্ছাসেবক ও রেড ক্রিসেন্টের ১৫ হাজার স্বেচ্ছাসেবক। ত্রাণশিবিরে আসা লোকজনের নিরাপত্তার পাশাপাশি নেওয়া হয়েছে খাদ্য সরবরাহেরও ব্যবস্থা। অন্য দিকে, ইতিমধ্যেই ১০ নম্বর বিপদ সঙ্কেত জারি হয়েছে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরে। মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরে জারি হয়েছে ৮ নম্বর চূড়ান্ত সতর্কবার্তা।