নিজস্ব চিত্র।
বাংলাদেশে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসারউল্লাহ বাংলা টিমের তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের প্রধানকে গ্রেফতারের কথা জানাল পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট।
আল-কায়েদার অনুসারী জঙ্গি সংগঠন আনসারউল্লাহ বাংলা টিমের (এবিটি) সামরিক শাখার ‘আইটি প্রধান’ আশফাকুর রহমান অয়নকে বেশ কিছু দিন ধরেই খুঁজছিল পুলিশের কাউন্টার টেররিজম বিভাগ। সিলেট থেকে ঢাকায় এসে গুলশানের কাছাকাছি এলাকায় তাদের গোয়েন্দা জালে ধরা পড়ে ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ জঙ্গি নেতা, সে পলাতক বরখাস্ত মেজর জিয়ার প্রধান সহযোগী।
তার পুরো নাম আশফাকুর রহমান এবং ডাকনাম অয়ন হলেও বিভিন্ন সময়ে সে আরিফ বা অনিক নামও ব্যবহার করত। কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) প্রধান ও অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগে পড়ার সময় ২০১৪ সালে সে এবিটি’র সাংগঠনিক কার্যক্রম শুরু করে। ২০১৫ সালে সংগঠনটির সামরিক বিভাগে অন্তর্ভুক্ত হয় সে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের বিচারকদের ভারতে ট্রেনিং
পরে এবিটি’র সামরিক বিভাগের আইটি প্রধানের দায়িত্ব পায় আশফাকুর অয়ন। অন্য কাজের পাশাপাশি ব্লগারদের সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন সাইটের অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে তাদের সম্পর্কে সবিস্তার তথ্য সংগ্রহের দায়িত্ব ছিল তার। পরে ওই সব অ্যাকাউন্টে থাকা ব্যক্তিগত তথ্য চলে যেত ‘হিট লিস্ট’-এর বিস্তারিত কলামে। এর পর পরিকল্পনা করে আক্রমণ করা হত ব্লগারদের উপর।
বাংলাদেশে গত কয়েক বছরে একাধিক ব্লগার হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছে এবিটি। এই সব হত্যাকাণ্ডের আগে হিট লিস্ট’-এ থাকা ব্লগারদের হত্যা করার জন্য রাজধানীর পল্লবী ও উত্তরায় তিনটি প্রশিক্ষণ শিবিরে অংশ নেওয়ার কথা জানিয়েছে আশফাক। গ্রেফতারের সময় তার কাছে ওসামা বিন লাদেন রচিত প্রবন্ধ এবং ব্লগার হত্যাকাণ্ড সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ রুটিনও পাওয়া গিয়েছে।
‘হিট লিস্টে’ সহায়তা ছাড়াও বিদেশি লেখকদের উগ্রবাদী লেখা বাংলায় অনুবাদ করে তা বরখাস্ত মেজর জিয়া ও তামিম চৌধুরীর তত্ত্বাবধানে পরিচালিত ‘দাওয়া ইল্লাল্লাহ’র ওয়েব পেজ ছাড়াও বিভিন্ন মাধ্যমে নিয়মিত আপলোড করে প্রচার করত এবিটি’র সামরিক বিভাগের ‘আইটি প্রধান’। জেরা করে গোয়েন্দারা তার কাছ থেকে জানতে পেরেছেন, কয়েক মাস আগে তার সঙ্গে মেজর জিয়ার সর্বশেষ দেখা হয়েছিল। সর্বশেষ যোগাযোগ হয়েছে মাস দু’য়েক আগে। তবে এখন মেজর জিয়ার অবস্থান সে জানে না বা প্রাথমিক জিজ্ঞাসায় তা জানায়নি।
শুধু মেজর জিয়া নয়, আশফাকুর অয়ন নারায়ণগঞ্জে জঙ্গিবিরোধী অভিযানে নিহত নব্য জেএমবি-র শীর্ষনেতা তামিম আহমেদ চৌধুরীরও ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিল। জঙ্গি তামিমের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত ‘দাওয়া ইল্লাল্লাহ’ ওয়েব পেজে উগ্রবাদী লেখা প্রকাশের দায়িত্বে ছিল অয়ন।