বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সেনানী-সহ আহত মুক্তিযোদ্ধা ও শহিদ পরিবারের মাসিক সাম্মানিক ভাতা বাড়াচ্ছে সরকার। সোমবার ‘খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী ভাতা বিতরণ নীতিমালা, ২০১৬’ এর খসড়া এবং খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা, যুদ্ধাহত ও শহিদদের পরিজনের মাসিক সম্মানী ভাতা বৃদ্ধির প্রস্তাব অনুমোদন করেছে মন্ত্রিসভা।
এ দিন সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার এক বৈঠকে এ অনুমোদন করা হয়। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মহম্মদ শফিউল আলম এ কথা জানিয়েছেন। ভাতা বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর ধরা হবে বলে জানিয়ে শফিউল আলম বলেন, “খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের মাসিক ভাতা ১৫০ শতাংশ বেড়েছে। এ ছাড়া মুক্তিযোদ্ধাদের এ-শ্রেণির বেড়েছে ৫০ শতাংশ, বি-শ্রেণির ৭৫ শতাংশ, সি-শ্রেণির ৮৭.৫ শতাংশ, ডি-শ্রেণির ১৫৮ শতাংশ, শহিদ পরিবারের ভাতা ১০০ শতাংশ, মুক্তিযুদ্ধে মৃতদের পরিজনদের ভাতা ৬৭ শতাংশ ও বীরশ্রেষ্ঠ শহিদ পরিবারের ভাতা ২৫ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে।”
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, “বীরশ্রেষ্ঠ খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা মাসিক ১২ হাজার থেকে বেড়ে ৩০ হাজার টাকা, বীর উত্তমদের ভাতা ১০ হাজার থেকে বেড়ে ২৫ হাজার টাকা, বীর বিক্রমদের ভাতা ৮ হাজার থেকে বেড়ে ২০ হাজার এবং বীর প্রতীক খেতাবপ্রাপ্তদের ভাতা ৬ হাজার থেকে বেড়ে ১৫ হাজার টাকা করা হয়েছে।”
পাশাপাশি, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও শহিদ পরিবারের ভাতাও বাড়ানো হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, “এ-শ্রেণির (যাঁরা ৯৬ থেকে ১০০ শতাংশ পঙ্গু) মুক্তিযোদ্ধাদের মাসিক ভাতা ৩০ হাজার থেকে বৃদ্ধি করে ৪৫ হাজার টাকা, বি-শ্রেণির (৬১ থেকে ৯৫ শতাংশ পঙ্গু) যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা ২০ হাজার টাকা থেকে ৩৫ হাজার টাকা, সি-শ্রেণির (যাঁরা ২০ থেকে ৬০ শতাংশ পঙ্গু) যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা ১৬ হাজার টাকা থেকে ৩০ হাজার টাকা, ডি-শ্রেণির (যাঁরা ১ থেকে ১৯ শতাংশ পঙ্গু) ভাতা ৯ হাজার ৭০০ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ২৫ হাজার টাকা করা হয়েছে।”
এ ছাড়া, শহিদ পরিবারের সদস্যদের মাসিক ভাতা ১৫ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৩০ হাজার টাকা, মুক্তিযুদ্ধে মৃতদের পরিবারের ভাতা ১৫ হাজার টাকা থেকে ২৫ হাজার টাকা, বীরশ্রেষ্ঠ শহিদ পরিবারের ভাতা ২৮ হাজার টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ৩৫ হাজার টাকা করা হয়েছে বলেও জানান শফিউল আলম। মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরও বলেন, “মোট সাত জন বীরশ্রেষ্ঠ, ৬৮ জন বীর উত্তম, ১৭৫ জন বীর বিক্রম এবং ৪২৬ জন বীর প্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা রয়েছেন।”
মুক্তিযোদ্ধা এ-শ্রেণির ২০, বি-শ্রেণির ১৪৬, সি-শ্রেণির ২ হাজার ৩২৯ জন এবং ডি-শ্রেণির ২ হাজার ৫৩২ জন রয়েছেন জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, “শহিদ পরিবার রয়েছে ২ হাজার ৫০০, যুদ্ধাহত পরিবার ৩০৩ এবং বীরশ্রেষ্ঠ পরিবার ৭টি।” তবে সাধারণ মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা বৃদ্ধির বিষয়টি নিয়ে বৈঠকে আলোচনা করা হয়নি বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন