দু’বছরের বেশি কারাদণ্ড পাওয়ায় নেত্রী খালেদা জিয়া-সহ বিএনপির প্রায় এক ডজন প্রথম সারির নেতা আগেই নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা হারিয়েছেন। তার পরে ‘অন্যান্য কারণে’ও খারিজ হয়ে গেল বহু বিএনপি নেতার মনোনয়নপত্র। বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলের জোটের মুখপাত্র কর্নেল অলি আহমেদ দাবি করেছেন, রবিবার স্ক্রুটিনির পরে যে ৭৮৬ জনের মনোনয়ন খারিজ করা হয়েছে, তার মধ্যে তাঁদের ৮০ জন প্রার্থী রয়েছেন। নিয়ম অনুযায়ী মঙ্গলবারের মধ্যে প্রার্থীরা মনোনয়নে ত্রুটি সংশোধন ও আপিলের সুযোগ পাবেন। তবে তাতেও বিশেষ লাভ হবে বলে মনে
হয় না। কারণ বিএনপির অধিকাংশেরই মনোনয়ন খারিজ হয়েছে ব্যাঙ্কের ঋণ বকেয়া থাকায়।
বিএনপি অবশ্য একে ‘ভোটে জেতার সরকারি ছক’ বলে অভিহিত করেছে। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রি়জভি অভিযোগ করেছেন, ‘‘ভোটের নামে পুতুল নাচ চলছে। বিএনপির মধ্যে এত ঋণখেলাপি খুঁজে পাওয়া গেল, শাসক দলে এক জনকেও পাওয়া গেল না?’’
আবার মনোনয়ন খারিজের জন্য দলের নেতৃত্বকেই দোষারোপ করছেন অনেক বিএনপি নেতা। তাঁদের যুক্তি— প্রার্থী হতে ইচ্ছুক আওয়ামি লিগের ঋণখেলাপি নেতারা অনেক আগে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বসে ঋণ শোধের নতুন চুক্তি করে ফেলতে পেরেছেন। কিন্তু ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার পরেও বিএনপি নেতৃত্ব জানিয়ে এসেছেন, তাঁরা ভোটে অংশ নেবেন না। নেতৃত্ব রাতারাতি সিদ্ধান্ত বদলের পরে হাতে সময় এত কম ছিল যে বকেয়া ঋণ নিয়ে ব্যাঙ্কের সঙ্গে বোঝাপড়া করা সম্ভব হয়নি প্রার্থীদের। এখন তাই মনোনয়ন খারিজ হয়ে যাচ্ছে।
আওয়ামি লিগের কোনও সরকারি প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল না-হলেও, ঋণখেলাপের কারণেই শরিক জাতীয় পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদারের মনোনয়ন খারিজ করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে দলের পদ থেকে সরিয়ে উপমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙাকে মহাসচিব নিযুক্ত করেছেন দলের চেয়ারম্যান হুসেইন মহম্মদ এরশাদ। শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে প্রার্থী করার টোপ দিয়ে মোটা টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন জাতীয় পার্টির অনেক নেতা। অপসারিত মহাসচিবের ঘাড়েই সেই দায় চাপিয়েছেন এরশাদ। নতুন মহাসচিব রাঙা জানিয়েছেন, ওই অভিযোগের তদন্ত হবে।