১৫ অগস্ট তাঁর জন্মদিন। কিন্তু, সেই তথ্য নাকি ভুয়ো! এ বিষয়ে আদালতে মামলা দায়ের হয়। সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপি-র চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করল আদালত। বৃহস্পতিবার এই নির্দেশ দিয়েছেন ঢাকা মহানগর হাকিম মাজহারুল ইসলাম।
গত ৩০ অগস্ট ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের প্রাক্তন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গাজি জহিরুল ইসলাম ওই মামলাটি করেন। সে দিন বিচারক মামলাটি গ্রহণ করে খালেদা জিয়াকে আদালতে হাজিরের জন্য সমন জারি করেন। ১৭ অক্টোবর আদালতে হাজির থাকার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু, তিনি সে দিন হাজির হননি। এর পরেই অভিযোগকারীর তরফে তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানার আবেদন জানালে আদালত তা নথিভুক্ত করে। এ বিষয়ে নির্দেশ দেওয়ার কথা ছিল গত ২ নভেম্বর। কিন্তু, ওই দিন এ বিষয়ে নির্দেশ না দিয়ে বিচারক তা পিছিয়ে ১৭ নভেম্বর করেন। সেই অনুযায়ী এ দিন ওই পরোয়ানা জারি করা হয়।
অভিযোগকারীর আইনজীবী দুলাল মিত্র এ দিন বলেন, ‘‘আজ মামলাটির শুনানির দিন ছিল। কিন্তু, খালেদা জিয়া আদালতে হাজির না হওয়ায় বিচারক তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।’’ শুনানির পরবর্তী দিন আগামী বছরের ২ মার্চ নির্ধারিত হয়েছে। খালেদাকে গ্রেফতার করা গিয়েছে কি না সে কথাও ওই দিন আদালতে জানাতে হবে বলেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ওই মামলায় অভিযোগ করা হয়, বিভিন্ন মাধ্যম থেকে খালেদার পাঁচটি জন্মদিনের কথা জানা গিয়েছে। কিন্তু, কোথাও ১৫ অগস্ট নেই। অথচ পাঁচটি জন্মদিনের একটিও পালন না করে ১৯৯৬ সাল থেকে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকীর দিন জাতীয় শোক দিবসে আনন্দ-উৎসব করে জন্মদিন পালন করে আসছেন। শুধু বঙ্গবন্ধু এবং তাঁর পরিবারের সুনাম নষ্টের জন্য তিনি জন্মদিন পালন করেন।
আরও পড়ুন...
ওসমানি বিমানবন্দরে সবচেয়ে বড় সোনার বার আটক
অভিযোগে আরও বলা হয়, ১৯৯৬-এর ১৫ অগস্ট থেকে জাতীয় শোক দিবসে ইচ্ছাকৃত ভাবে ভুয়ো জন্মদিনের ঘোষণা করে ব্যাপক ভাবে প্রচার করে তা পালন করছেন খালেদা জিয়া। ওই অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে নানা রকম কুৎসা, বানানো গল্প প্রচার ও গুজবের মাধ্যমে সম্মানহানি করা হয়। এ ভাবে কুরুচিকর বক্তব্যের মাধ্যমে জাতিকে বিভ্রান্ত করা-সহ স্বাধীনতাবিরোধী ও যুদ্ধাপরাধীদের নিয়ে আনন্দ-উল্লাস করে দেশকে অস্থির পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যাওয়া হয়, যা স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্রের আইন, রাষ্ট্র ও সংবিধানবিরোধী কাজ।
মামলার আর্জিতে আরও বলা হয়, খালেদা জিয়ার একাধিক জন্মদিন নিয়ে ১৯৯৭-এর ২২ অগস্ট এবং ১৯৯৭-এর ২৭ অগস্ট বাংলাদেশের দু’টি জনপ্রিয় দৈনিক সংবাদপত্রে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। সেখানে লেখা হয়, খালেদা জিয়ার এসএসসি পরীক্ষার মার্কশিট অনুযীয় তাঁর জন্মদিন ১৯৪৬-এর ৫ সেপ্টেম্বর। অন্য এক দৈনিকে খালেদার জীবনী প্রকাশিত হয়। সেখানে লেখা হয়, তাঁর জন্মদিন ১৯৪৫-এর ১৯ অগস্ট। এ ছাড়া খালেদার কাবিননামা (বিয়ের দলিল) জন্মদিন উল্লেখ করা হয় ১৯৪৪-এর ৯ অগস্ট। ২০১১-য় তাঁর মেশিন রিডেবল পাসপোর্টে জন্মদিন উল্লেখ করা হয়েছে ১৯৪৬ সালের ৫ অগস্ট।