দাম্পত্যের সবে শুরু। এই সময় বিয়ের ধকল কাটিয়ে সংসারের বাজার শুরুর আগে নিজেদের জন্য একান্তে কিছুটা সময় কাটানো খুবই দরকারি। বাঙালি অনেক দিন হল হানিমুনে ‘দিপুদা’-কে ছেড়ে দিয়েছে। দিঘা, পুরী বা দার্জিলিং তো সপ্তাহ শেষের ভ্রমণ। কিন্তু, বিদেশে মধুচন্দ্রিমায় যেতে একটা খরচ তো আছে। একেই বিয়েতে বিপুল খরচ, তাই মধুচন্দ্রিমার ক্ষেত্রে বাজেট নিয়ে একটু টানাটানি পড়েই যায়। তবে চিন্তার কারণ তেমন নেই, কম খরচে দেশের মধ্যেই ভ্রমণ সেরে আসতে পারেন মনভোলানো কিছু জায়গায়।
১. উমিয়াম হ্রদ পাড়ে রাত যাপন
ভারতের স্কটল্যান্ড নামে পরিচিত মেঘালয়ের শিলং শহরে প্রবেশের আগেই বিস্তৃত অঞ্চল নিয়ে ছড়িয়ে রয়েছে উমিয়াম লেক। স্থানীয়দের ভাষায় ‘বড়া পানি’ লেক। এই লেকের একবারে লাগোয়া রিসর্টে কাটানো ৪-৫ দিন মন আর শরীরে আজীবন লেগে থাকবে। মেঘালয়ে প্রবেশে এখন তেমন কোনও বাধা নেই। শিলং-এই এয়ারপোর্ট রয়েছে। এ ছাড়া বিমানে গুয়াহাটি পৌছে, শিলং পর্যন্ত গাড়িতে যেতে পারেন। ঘণ্টা তিনেকের মতো সময় লাগবে গাড়িতে। বিলাসবহুল থাকার জন্য রি কিনজাই বুক করতে পারেন। অর্কিড লেক রিসর্ট মধ্যমানের বাজেটের জন্য যথেষ্ট ভাল। ৭ রাত, ৮ দিনের জন্য আনুমানিক খরচ: মোটামুটি ৫০ থেকে ৮০ হাজার টাকা।
২. চা বাগানে রোমান্টিক রাত
চা বাগান পড়ে দার্জিলিং ভাববেন না। এটা সুদূর দক্ষিণে। কেরলের পাহাড়ি শহর মুন্নার প্রায় পুরোটাই চা বাগানে ঘেরা। কোচি থেকে মুন্নারের যাত্রা পথও গন্তব্যের মতোই রোমান্টিক। কয়েক দিন মুন্নারে কাটিয়ে নেমে আসুন আলেপ্পিতে। এখানকার হাউজবোট বাড়ির চিন্তা ভুলিয়ে দেবে। কোচি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছে গাড়িতে মুন্নার যেতে লাগে ৪ ঘন্টার মতো। মুন্নারের যে দিকেই থাকুন না কেন, চারদিকে চা বাগান পাবেনই। নিজের বাজেট দেখে একটা বুক করে নিলেই হল। পাহাড়ি জায়গা হলেও সব রাস্তাতেই গাড়ি চলে। মুন্নারে ৭ রাত, ৮ দিনের জন্য খরচ ৬০ হাজারের মতো।
৩. উষ্ণতার তুষার স্বর্গ
মানালি বিশেষ করে লগ হাট অঞ্চল শহরের মধ্যে থেকেও মনে হবে শহর থেকে অনেক দূরে। ফলে বুঝতেই পারছেন! মানালির ভুন্তার বিমানবন্দরে সরাসরি উড়ে যেতেই পারেন। কিন্তু চণ্ডীগড় পর্যন্ত বিমানে গিয়ে তারপর কালকা-সিমলা টয় ট্রেনে সিমলা গেলে অভিজ্ঞতা একটু অন্য রকম হতে বাধ্য। বাকি রাস্তা গাড়িতে। টয় ট্রেন যাত্রাটা অনেকটা ফোরপ্লে-র কাজ করবে। মানালিতে থাকার ব্যবস্থা কম নেই। তবে লগ হাট অঞ্চলে থাকলে ভাল। খুব তুষারপাত হলে রাস্তায় গাড়ি চলবে না, কিন্তু পাইন বন দিয়ে উষ্ণ রিসর্টে দু’জনে হেঁটে যাওয়ারও তো বিকল্প হয় না। হোটেলের উপর নির্ভর করে খরচ হাজার ৪০ থেকে ৮০ হাজার টাকার মধ্যে।
৪. শহিদ দ্বীপে নতুন স্বাধীনতার আস্বাদ
আন্দামান দ্বীপপুঞ্জ। যার নতুন নাম শহিদ দ্বীপ। তবে হ্যাভলক নয়, চলুন নীল দ্বীপে। আন্দামান বা হ্যাভলকের কোলাহল থেকে দূরে নির্জনে নীল জল, শুধু দুটি প্রাণ আর সামনে সাদা বালির চর। আন্দামানের রাজধানী পোর্ট ব্লেয়ারে সরাসরি ফ্লাইট আছে। সেখান থেকে বোটে করে যাওয়া যায় নীল দ্বীপে। বাজেট প্রতিবন্ধক না হলে সিম্ফনি অথবা সিশেল হোটেলের বিকল্প হবে না। তবে অনেক বাজেট-হোটেলও আছে। হ্যাভলকেও থাকতে পারেন। আন্দামানে হানিমুনের খরচ নির্ভর করছে পছন্দের বাসস্থান এবং কার্যকলাপের উপর। মানে স্কুবা করতে চাইলে বাজেট ১ লাখ পৌঁছাতে পারে, না হলে ৭০ হাজারেই হয়ে যাবে।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব ’ ফিচারের একটি অংশ।