ছবি তোলার নেশা এক এক জন মানুষের কাছে প্রবল। সে প্রকৃতিই হোক বা প্রোফাইল। বেশ কয়েক বছর ধরে মুঠোফোন, মানে মোবাইলের কারণে সেই নেশা আপামর বাঙালির মধ্যে ঢুকে গিয়েছে। আর মোবাইল কোম্পানিগুলিও তাঁদের পণ্যে যতরকম ভাবে পারছে নানা ধরনের ক্যামেরা যোগ করে সেই মোবাইলটাকেই একাধারে ক্যামেরার চেহারা দেওয়ার চেষ্টা করছে। প্রথমে একটা, এখন আবার রেয়ার ৪টে আর ফ্রন্টে দুটো ক্যামেরা যোগ করেছে বেশ কিছু মোবাইল কোম্পানি। আর পিক্সেলের ক্ষেত্রে, মেগাপিক্সেলের ক্ষমতা বহু গুণ বাড়িয়েছে।
বেশ কয়েক বছর ধরে এই কারণে ক্যামেরা বিক্রি একেবারেই তলানিতে। ফলে বহু ইলেক্ট্রনিক্স পণ্য বিক্রির দোকান ক্যামেরার বিভাগ তুলে দিতে বাধ্য হয়েছে।
এ দিকে, গত দেড় থেকে দু’বছর আবার ক্যামেরা বিক্রি ভাল রকম বেড়েছে। ক্যামেরা প্রস্তুতকারক সংস্থা ক্যানন তাদের ২০১৮ সালের শেষ হওয়া বার্ষিক রিপোর্টে জানাচ্ছে, ২০১৭-র তুলনায় তাদের বিক্রি বেড়েছে ৩.৯ শতাংশ (সারা বিশ্বে এদের মার্কেট শেয়ার ৪০.৫ শতাংশ)। অন্য দিকে, ফুজি বা ওলিম্পাস-ও জানিয়েছে, তাদের বিক্রির পরিমাণ বেড়েছে। নিকনেরও তাই।
আরও পড়ুন: পুজোয় বাইরে যাচ্ছেন? বাড়ি সুরক্ষিত রাখবেন কী করে?
এক চিত্রগ্রাহক অতনু পাল জানালেন, এখন যুব সম্প্রদায়ের অনেকের কাছে বিশাল লেন্স লাগানো ক্যামেরা দিয়ে ছবি তোলার বিষয়টি যেন ফ্যাশনের মতো। আর এক শ্রেণির কাছে মোবাইলের ক্যামেরার ছবিতে মন ভরছে না, ডিটেলস পাচ্ছেন না ঠিকমতো, তাই তিনি এসএলআর বা ডিএসএল-ক্যামেরা কিনছেন। গত দেড় বছরে এই ধরনের ক্যামেরা কেনার ঝোঁক কয়েকশো শতাংশ বেড়েছে। এই ঝোঁক অপেশাদারদের মধ্যেই বেশি করে বেড়েছে। অধ্যাপিকা দীপাঞ্জনা বসু মজুমদার বললেন, চিত্র সাংবাদিকতা বা অন্য কোনও কোনও বিভাগের ছাত্রছাত্রীরা প্রজেক্টের জন্য এসএলআর নয়তো ডিএসএলআর কিনছে এখন।
যাঁরা ছবি তুলতে ভালবাসেন তাঁরা সবাই চান তাঁদের ছবি সমস্ত ডিটেলস সমেত নিখুঁত হোক। তাই তাঁরা লেন্সের দিকে নজর দেন বেশি। কেননা এই লেন্সের ক্ষমতার উপর নির্ভর করে ছবির নিখুঁত ডিটেলস পাওয়া। এখন দু’ধরনের ক্যামেরার চাহিদা বেশি। ডিএসএলআর ও মিররলেস ক্যামেরা। যাঁরা বিভিন্ন লেন্স ব্যবহার করে ছবি তুলতে ভালবাসেন, তাঁরা ডিএসএলআর পছন্দ করছেন বেশি। আর বাকিরা মিররলেস। এ ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে সুবিধা ও অসুবিধার বিষয়টি। মিররলেস হালকা আর কম্প্যাক্ট, যাঁরা ভিডিও ছবি তুলতে ভালবাসেন, তাঁরা মিররলেস কিনতে পারেন। ব্যবহার সহজ। আর ডিএসএলআর ভারী হলেও লেন্স জোড়া যায়।
এ বার আসি, সামর্থের মধ্যে কী ক্যামেরা আমরা কেনার চেষ্টা করতে পারি, যেগুলির চাহিদা তুলনামূলক ভাবে বেশি।
নিকন ডি ৩৫০০
এই ডিএসএলআর ক্যামেরাটি ২৪.২ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা। এর সঙ্গে আপনি লেন্স পাবেন। এটির লুকিং স্ক্রিন ৭.৬২ সেমি, আইএসও-১০০ থেকে ২৫৬০০, সিএমও–এস সেন্সর আছে। কালো রঙের ক্যামেরাটি দেখতেও খুব সুন্দর। আর দাম ডিসকাউন্ট দিয়ে ৩৬ হাজারের মধ্যে। কিস্তিতে কেনার সুযোগ দিচ্ছে অনলাইন ও দোকানেও।
ক্যানন ইওএস ১৫০০ডি
এটি ১৬ জিবি মেমারি ইনবিল্ট। ২৪.১ মেগাপিক্সেল। সিএমওএস সেন্সর, ৭.৬২ সেমি টিএফটি এলসিডি ডিসপ্লে, সঙ্গে ওয়াইফাই কানেক্টিভিটি। অপটিকাল জুম-থ্রি এক্স। সর্বাধিক আইএসও– ৬৪০০। ইমেজ প্রসেসর। দাম, ডিসকাউন্ট দিয়ে ২৮ হাজার টাকার কাছাকাছি। একমাত্র কালো রঙের পাওয়া যায়।
নিকন জেড সিক্স
২৪-৭০ এমএম লেন্স যুক্ত মিররলেস ডিএসএলআর। সঙ্গে আছে মাউন্ট অ্যাডাপ্টর। দাম, ডিসকাউন্ট দিয়ে প্রায় ১ লক্ষ ৭৬ হাজার টাকা। সর্বাধিক রিজলিউসন ২৪.৫ মেগাপিক্সেল। হাইব্রিড ফেজ ডিটেকশন অটো ফোকাস পদ্ধতিও আছে। সিওএমএস ইমেজ সেন্সর আছে।
আরও পড়ুন: পুজোয় ব্যবহার করতে পারেন নানা ফিচারে ঠাসা রিয়েলমি-র ফাইভ সিরিজ
ফুজিফিল্ম এক্স-টি থ্রি (মিররলেস)
২৬.১ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা। ইমেজ প্রসেসর: এক্স প্রসেসর ৪। সিওএমএস ৪ প্রসেসর, আইএসও ১৬০ থেকে ১২৮০০, তিন ইঞ্চি থ্রি ডাইমেনসন টিল্টিং এলসিডি স্ক্রিন।