অর্জুনপুর আমরা সবাই-এর প্রতিমা
স্বাধীনতা এসেছে বহুকাল হল। কিন্তু কতটা স্বাধীন এ দেশের মানুষ? সংবিধান আছে, কিন্তু অধিকার কি আছে? প্রশ্নগুলো সহজ। কিন্তু উত্তর না জেনে কলুর বলদের মতো জোয়াল টানাই কি দস্তুর? সুন্দরবনের প্রান্তিক মানুষ হোক কি পরিযায়ী শ্রমিক, কিংবা অন্যায়ের প্রতিবাদে পথে নামা মেয়েরা– সকলকে নিয়ে এ দেশের মধ্যেই যেন এক অন্য দেশের বসত।
যাকে শিল্পী ভবতোষ সুতার গড়ে তুলেছেন অর্জুনপুর আমরা সবাই ক্লাবের এ বছরের দুর্গা পুজোর থিমে।
কী আছে এই ‘অন্যদেশ’-এ?
আছে কলুর বলদ। কারণ, ঠিক তার মতোই কিছু না কিছুর পিছনে মানুষ ঘুরেই চলেছে। কখনও টিকে থাকার দায়ে, কখনও অন্যকে ধনী করার দায়ে। শুধু বদলে গেছে ঘোরানোর কায়দা। বলদের জায়গায় এসেছে যন্ত্র। আজকের এই আধুনিক কলু যেন মানব সমাজের বৈষম্য ও অবদমনের প্রতীক।
সাদা-কালো থিম
অর্জুনপুর আমরা সবাই-এর এ বছরের ভাবনায় সাদা-কালো ছাড়া সে রকম কোনও রং ঠাঁই পায়নি। কারণ, সময়টা যে অস্থির। ধূসর এই সময়ে সব থেকে বেশি মানায় এই দুটি রং-ই। সাদা এবং কালো, দুই বিপরীত রঙের মাঝে অনেক শেড, অনেক ছায়ার সমাহার।
ক্লাব সংলগ্ন রাস্তা থেকেই শুরু হয়েছে সিঁড়ি। যে সিঁড়ি সমাজের ধাপে ধাপে বৈষম্যের প্রতীক। আর প্যান্ডেলের ভিতরে আছে এক আস্ত সংবিধান– তাতে আইন আছে, আছে অধিকারের চেতনা, সমতার বোধ। তবু দেশের ৫৮ শতাংশ সম্পদ মাত্র ১ শতাংশ মানুষের হাতে। যেখান থেকে বৈষম্যের শুরু। জীবন্ত সেই সংবিধানের বন্ধ জানলা খুলে তাই এ দেশের কথা বলছে এক ‘অন্যদেশ’।
কী ভাবে যাবেন?
তেঘরিয়া অথবা মৃণালিনী সিনেমা হল থেকে হাঁটা পথে অর্জুনপুর আমরা সবাই।
মেট্রোয় দমদম স্টেশনে নেমে নাগেরবাজারের অটো। সেখান থেকে ফের মৃণালিনী সিনেমা হলের অটো। তার পরে হাঁটা পথে মণ্ডপ।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।