Shantipur's 500-year-old Durga

শান্তিপুরের ৫০০ বছরের পুরোনো পুজোতে মা পূজিত হন একাই, থাকে না তার পুত্র-কন্যারা

শহর ছাড়িয়ে অনেক দূরে শান্তিপুরের রাজবাড়ির দুর্গাপুজো আজ থেকে প্রায় ৫০০ বছরেরও বেশি পুরোনো। মা দুর্গা এখানে ‘কুলোপতি’ দেবী নামে পরিচিত।

Advertisement

আনন্দ উৎসব ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০২৪ ১৩:৩২
Share:

শান্তিপুর রাজবাড়ি

শহর ছাড়িয়ে অনেক দূরে শান্তিপুরের রাজবাড়ির দুর্গাপুজো আজ থেকে প্রায় ৫০০ বছরেরও বেশি পুরোনো। মা দুর্গা এখানে ‘কুলোপতি’ দেবী নামে পরিচিত। দেবী এখানে দশভুজা রূপেই পুজিত হন। নদীয়া জেলার শান্তিপুরে অবস্থিত এই রাজবাড়ির পুজো দেখতে ভিড় জমায় আট থেকে আশি সকলেই, জেলার বাইরে থেকেও মানুষের আগমন হয় এখানে।

Advertisement

এই পুজোর একটি বিশেষত্ব সবার নজরে পরে, এখানে দেবীর সাধারণ মূর্তি থাকলেও দেবী একা পুজো পান, কারণ দেবীর সাথে তার পুত্র ও কন্যারা থাকেন না। শোনা যায় একদম শুরুর দিকে দেবীকে কুলো'র মধ্যে অঙ্কন করে পুজো করা হত। এই বিষয়ে এই শান্তিপুর রাজবাড়ী নিয়ে একটি প্রচলিত কাহিনী আছে। দেবীর স্বপ্নাদেশর পরেই নাকি শুরু হয় এই রাজবাড়ির পুজো।

কথিত আছে মা দুর্গা নাকি নিজ হাতে গঙ্গাজল পান করেছিলেন এই রাজবাড়ীর গৃহকর্তার কাছে থেকে। এই রাজবংশের প্রায় ১৪-১৫ পুরুষ আগের কথা, গৌরবঙ্গে জমিদারি বিস্তার করেছিলেন গৌরচাঁদ রায়। সেই সময় মুঘলদের অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে তাঁর বিগ্রহ গৌড় হরি ঠাকুরকে নিয়ে তিনি প্রথমে চুঁচুড়ায় চলে আসেন।

Advertisement

পরে সেখান থেকে শান্তিপুরে বসবাস শুরু করেন, একদিন তিনি তাঁর বিগ্রহ গৌড় হরি ঠাকুরের পুজো করছিলেন ঠিক সেই সময় এক নারী এসে তাঁর কাছ থেকে জল চান, সেখানে রাখা গঙ্গার জলের দিকে ইশারা করে গঙ্গারই জল পান করার আর্জি জানায় মেয়েটি।

এরপর গঙ্গার জল ও নাড়ু খেয়ে সেখান থেকে চলে যায় মেয়েটি। পরে সেই মেয়েটিকে হন্যে হয়ে খুঁজলেও কোনোভাবেই দেখা পাননি তিনি, এর পরেই তিনি রাতে স্বপ্নাদেশ পান। মা স্বয়ং তাঁকে পুজো করার কথা জানান।

কিন্তু জমিদার সেইসময় আর্থিক অসঙ্গতির কথা জানালে মা তাকে কুলোতেই পুজো করার নির্দেশ দেন। পরে পরিস্থিতি ঠিক হলে শুধুমাত্র দুর্গা মূর্তি বানিয়েই পুজো শুরু হয় রাজবাড়িতে। আজও সেই রীতি মেনেই দুর্গা একাই পূজিত হয়ে আসছেন বহু বছর ধরে।

এখানে পঞ্চমী থেকে মায়ের ভোগ দেওয়া শুরু হয়, অষ্টমী ও নবমীর সন্ধিক্ষণে দেবীকে এখানে ২ রকম মাছ ভোগ দেওয়া হয়। আর দশমীর দিন পায়েস ভোগ দিয়েই মা কে বিদায় জানানো হয় এবং শুরু হয় আবারও এক বছরের অপেক্ষা।

এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement