প্রতীকী ছবি
বাংলার ঘরে ঘরে আশ্বিন মাসে কত রকমেরই না লক্ষ্মীপুজোর সমাহার! অর্থ, সুখ, সৌন্দর্য ও সৌভাগ্যের দেবী লক্ষ্মী সকলের আরাধ্যা। যুগ যুগ ধরে গৃহকোণে দেবী চঞ্চলাকে ধরে রাখার জন্য তাই উৎসব হয় রাজ্যের নানা প্রান্তে। মালদহ জেলার ইংলিশবাজারে চুনিয়াপাড়ার রায়বাড়ির পুজো এমনই এক বিখ্যাত পুজো, যা এই জেলার বৃহত্তম লক্ষ্মীপুজো হিসেবেও পরিচিত। প্রতি বছরই এই উৎসব ঘিরে উন্মাদনা ছড়িয়ে পড়ে পুরো জেলায়। অজস্র মানুষ ভিড় জমান শুধু এই লক্ষ্মীপুজো এক বার চাক্ষুষ করার আশায়।
১০০ বছরে পেরিয়েছে ইংলিশবাজারে কোঠাবাড়ি চুনিয়াপাড়ার লক্ষ্মীপুজো। সপরিবারে পূজিতা হন লক্ষ্মী। দেবীর সঙ্গে থাকেন কার্তিক, গণেশ, সরস্বতী, অন্নপূর্ণা, ব্রহ্মা, নারায়ণ এবং শিব। থাকেন রাম, লক্ষণও।
শতবর্ষের এই পুজো শুরু হয়েছিল জমিদার ক্ষিতীশচন্দ্র রায়ের হাত ধরে। জনশ্রুতি বলে, দেবীর স্বপ্নাদেশ পেয়েছিলেন তিনি। জমিদারবাড়ির সেই পুজো আজও হয় আদি রীতি মেনেই। পুরাণ মতে, দেবী লক্ষ্মী নারায়ণের স্ত্রী, এবং তাঁর বাহন লক্ষ্মীপ্যাঁচা বা সাদা প্যাঁচা। তিনি স্বত্ত্বগুণের অধিকারিণী এবং মাতৃশক্তির ধনদা রূপ। কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর এই বিশাল আয়োজন হয়ে থাকে যশ, খ্যাতি আবার কখনও বা সন্তানলাভের আশাতেও। মালদহের এই বিশাল লক্ষ্মীপুজোর পাঁচ দিন ব্যাপী উৎসবে মেলা বসে দেখার মতো। তার টানে দলে দলে দর্শনার্থীর জমায়েত। লক্ষ্মীপুজোর আয়োজন ও আয়তন হয় নজরকাড়া। বিরাট এই পুজোর উদযাপনের শেষ লগ্নে লক্ষ্মী প্রতিমাকে সপরিবারে বিসর্জনের জন্য নৌকায় করে নিয়ে যাওয়া হয় মালদহের সদরঘাটে। আবার সেই নৌকা ফিরে আসে কোঠাবাড়িতে। প্রতিমা বিসর্জন হয় মহানন্দা নদীতে। দেবীর বিদায় মুহূর্তে উৎসবের আমেজ ধরে রাখতে আর এক প্রস্ত মেলা বসে মহানন্দা নদীর পাড়ে। আশেপাশের গ্রামগঞ্জের মানুষ তখনও এসে ভিড় করেন বাকি দেবদেবীর সঙ্গে মা লক্ষ্মীর বিসর্জন দেখতে।
এই প্রতিবেদনটি 'আনন্দ উৎসব' ফিচারের একটি অংশ।