ছবি: সংগৃহীত
বড়বাজারে পৌঁছেই পুঁটে কালীবাড়ির খোঁজ করলে এক কথায় সবাই নির্দেশ দিয়ে দেবে এমনিই বিখ্যাত এই কালী। কিন্তু এমন কী আছে এই কালীমন্দিরে যা একে এক দর্শনীয় স্থানে পরিণত করেছে?
প্রায় ৫০০ বছর পুরনো এই মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা তান্ত্রিক মানিকচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়। পূর্বে মোগল সম্রাট আকবরের আমলে গোলপাতার ছাউনি দিয়ে তৈরি হয় এই মন্দির। সেখানেই পঞ্চমুন্ডীর আসন পেতে পুজো শুরু করেন মানিকচন্দ্র। তবে এই নিয়েও মতভেদ রয়েছে। কেউ কেউ বলেন এই মন্দিরের আসল প্রতিষ্ঠাতা মানিকচন্দ্রের বংশধর খেলারাম বন্দ্যোপাধ্যায়।
দেবীর নাম নিয়েও রয়েছে নানা মত। মন্দিরে কালীমূর্তির উচ্চতা মাত্র ছয় ফুট। ‘পুঁটে’ বলতে ছোট মেয়ে বোঝায়, তাই দেবীর নামও হয়েছে পুঁটে কালী। এই নামের পিছনে অন্য আর একটি কাহিনি রয়েছে।
একদিন খেলারাম মন্দিরে হোম করছিলেন। তখন পাশের গঙ্গার খাদ থেকে একটি পুঁটিমাছ লাফিয়ে হোমকুণ্ডের মধ্যে পড়ে যায়। খেলারাম সেই অর্ধদগ্ধ মাছটিকে তুলে জলে ফেলে দিতেই সেটি মায়ের আশীর্বাদে আবার জীবন্ত হয়ে হয়ে ওঠে। সেই থেকে দেবীর নাম হয় ‘পুঁটি কালী’, পরে নামটি বিকৃত হয়ে হয় পুঁটে কালী।
সারা বছরই তান্ত্রিক মতে পুজো হয় দেবীর এবং কালীপুজোর রাতে দেবীকে ভৈরবীরূপে পুজো করা হয়। ভোগে নিরামিষ ও আমিষ দুইই থাকে। খিচুড়ি, পোলাও, লুচি, দু’রকমের সবজি, চাটনি, পায়েস থাকে নিরামিষ ভোগে। বিভিন্ন রকমের মাছ যেমন পুঁটি, রুই, বোয়াল, ভেটকি, ইলিশ দেওয়া হয় আমিষ ভোগে। কালীপুজোর পরের দিন হয় কুমারী পুজো এবং অন্নকূট অনুষ্ঠান।
আরও একটি বিশেষত্ব হল মা কালীর পাশাপাশি শীতলা মায়েরও পুজো করা হয় এখানে। মন্দিরটি চারচালা ও তিনটি চূড়াবিশিষ্ট। চূড়াগুলির উপর চক্র, ত্রিশূল ও পতাকার চিহ্ন রয়েছে।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।