এ যেন পাঁচ বন্ধুর বন্ধুত্বের জয়গাথা। এক সময় পাঁচ বন্ধুতে মিলে খানিক জেদ ধরে শুরু করেছিলেন এই পুজো। যা আজ নাম করেছে গোটা পশ্চিমবঙ্গ জুড়েই।
কথায় বলে ‘আনলাকি থার্টিন’। কিন্তু মালদহের হবিবপুরের বুলবুলচণ্ডীর এই পুজোর ক্ষেত্রে কিন্তু ব্যাপারটা মোটেও সে রকম নয়।
একদিন, দু’দিন বা পাঁচ দিন নয়। এখানে মায়ের পুজো চলে ১৩ দিন ধরে। এটাই তার বিশেষ রীতি। বিসর্জন হয় ১৪তম দিনে।
৭৪ বছর আগে পাঁচ বন্ধুতে একজোট হয়ে মায়ের আরাধনায় মাতেন। তখন অর্থবল ছিল না বেশি। তাই প্রথম বছর প্রতিমা আকারে ছিল বেশ ছোট। মাত্র সওয়া হাতের।
তবে ওই যে বলে না ‘মায়ের পুজোর জোগাড় মা নিজেই করে নেন’! এখানেও যেন ঠিক তা-ই। ক্রমে পুজোর আড়ম্বরের সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে প্রতিমার আকারও।
বাড়তে বাড়তে এই পুজোর প্রতিমার উচ্চতা গিয়ে পৌঁছেছিল ৪৮ ফুটে। পরে অবশ্য স্থায়ী মন্দির হওয়ায় এখন তা কমিয়ে করা হয়েছে ৪২ ফুট।
এখন প্রত্যেক বছর এই পুজোর প্রতিমা হয় সেই ৪২ ফুটেরই। এক সপ্তাহের মধ্যে তৈরি করা হয় প্রতিমা। বংশ পরম্পরায় তিন পুরুষ ধরে এই পুজোর প্রতিমা গড়ে আসছেন স্থানীয় পাল পরিবার।
বর্তমানে মৃৎশিল্পী ভেলুচরণ পাল প্রায় ৫০ বছর ধরে তৈরি করছেন প্রতিমা। লাগে প্রায় ১০০ বাঁশ, এক ক্যুইন্টাল দড়ি ও পেরেক।
পুজোয় নেই কোনও বলি দেওয়ার চল। পরিবর্তে মায়ের কাছে উৎসর্গ করার চল রয়েছে বলে জানান কর্তৃপক্ষ।
পুজোকে কেন্দ্র করে সমাগম ঘটে লক্ষাধিক মানুষের। আয়োজিত হয় বিশাল মেলা। ভিড় হয় বিসর্জন দেখতেও। কাঠামোর উপর ভর করে বাঁশের উপর দিয়ে গড়িয়ে অভিনব কায়দায় হয় বিসর্জন।