সবুজ রঙে মা দুর্গার চক্ষুদান ঋতুপর্ণার
পুজো মানেই ভাল থাকার সুর। সেই ভাবনাতেই পৃথিবীকে আগামীর বাসযোগ্য করে যাওয়ার অঙ্গীকারে ফের দুর্গার আবাহনে মাতল শহর। সৌজন্য 'গ্রিন দুর্গা'। একটি রেডিয়ো চ্যানেলের এই উদ্যোগে সামিল টলিউডের এভারগ্রিন অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। সম্প্রতি এই উপলক্ষে এক সাংবাদিক বৈঠকে উপস্থিত হয়েছিলেন তিনিও।
দূষণের মাত্রায় বিষপাষ্প বেড়ে চলেছে রোজ। বর্জ্যের পাহাড়ে মুখ ঢেকেছে পৃথিবীর সবুজ। এই সবুজ হারালে রুক্ষ হবে সব। সে দিন আগামীর জন্য কী রেখে যাব আমরা? মা দুর্গার আগমনে তাই পৃথিবীরও বোধন হোক সবুজে। নিজেদেরই ভাল রাখার তাগিদে। আগামী প্রজন্মকে ভাল রাখার সেই লক্ষ্য নিয়েই সেজে উঠতে চলেছে 'গ্রিন দুর্গা'। কলকাতা জুড়ে পাড়ায় পাড়ায়, স্কুল-কলেজ-অফিসে জোর কদমে চলছে পুরনো খবরের কাগজ, বাতিল জামাকাপড় বা অন্যান্য জিনিসপত্র সংগ্রহ। সঙ্গে একগুচ্ছ মজাদার প্রতিযোগিতায় ঠাসা পুজোর আমেজ! ফেলে জিনিস সেই সব জিনিসেই 'রূপং দেহি'। গড়ে উঠবেন মা দুর্গা।
'গ্রিন দুর্গা'র ভাবনা নতুন নয়। বছর দশেক আগে শুরু হওয়া এই উদ্যোগ কোভিডের কোপে মাঝে কয়েক বছর বন্ধ ছিল। এ বার পুনরুদ্যমে ফিরে এসেছেন আয়োজকরা।
চার পাশ সবুজে ভরিয়ে দেওয়ার এই আয়োজনে মুখ হয়ে উঠেছেন ঋতুপর্ণা। ইন্ডাস্ট্রিতে এত বছর ধরে দাপটের সঙ্গে বিভিন্ন চরিত্রে নিজেকে নিরন্তর ভাঙা গড়ার পরেও তিনি একই রকম, চিরসবুজ। অনুষ্ঠানে সবুজ রঙা শাড়িতে জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রী তাই নিজেই যেন মিলেমিশে এক এই উদ্যোগের সঙ্গে। ''সময়ের সঙ্গে সুর বদলায়'' বলে মনে করেন ঋতুপর্ণা। তবে এমন কোনও বদল তিনি চান না, যা জীবনকে ভুল দিকে নিয়ে যায়। সুর বদল যেন প্রগতির জন্য হয়, মানুষকে সমৃদ্ধ করার জন্য হয়। আর সেই অনুভবেই তিনি 'গ্রিন দুর্গা'র সঙ্গে গেয়েছেন সবুজের সুর। অনুষ্ঠানে সবুজ রঙে মা দুর্গার চক্ষুদান করে যেন সেই আভাসই দিলেন ঋতুপর্ণা।
সৌজন্য 'গ্রিন দুর্গা'
অনুষ্ঠানে রেডিয়ো চ্যানেলের তরফে রিজিওন্যাল প্রোগ্র্যামিং হেড বিশ্বজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ''উৎসবে মানুষ মানুষে মিলে যায়। তাই এটাই হয়তো সেরা সময় মানুষকে আমাদের মহৎ উদ্দেশ্যের কথা বলার। আমরা মুম্বইতেও 'গ্রিন গণেশ' করেছি। গ্রিন গণেশ বিসর্জন দিতে হয় না। মাটির টবে রাখলে নতুন গাছ যাক তাঁর নব জন্ম।কলকাতার মানুষ উন্নত, উদার মনের। আর সে জন্যেই বাতিল জিনিসে 'গ্রিন দুর্গা' গড়ার সাহস পেয়েছি আমরা।''
'গ্রিন দুর্গা'র মণ্ডপ সেজে উঠছে সল্টলেক সিটি সেন্টারে। পয়লা অক্টোবর থেকে নিয়ম মেনে হবে পুজো। কী ভাবছেন? উত্তর বা দক্ষিণে ঠাকুর দেখার পাশাপাশি একদিন ঢুঁ মারবেন নাকি? হয় সবুজের ছোঁয়া থাকলে হয়তো দেখা হয়ে যেতে পারে ঋতুপর্ণার সঙ্গেও!
এই প্রতিবেদনটি 'আনন্দ উৎসব' ফিচারের অংশ।